বৈধতা-অবৈধতা নিয়ে প্রশ্ন
27 Jul, 2014
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমতের প্রকৃত প্রতিফলনে একটি দল নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রাপ্ত হয়ে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য সরকার পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করে। এমনও দেখা যায়, একটি দল এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও একাধিক দলের সমন্বয়ে যৌথ বা সম্মিলিত সরকার গঠন করা হয়। আবার এমনও দেখা যায়, নির্বাচনের আগে একাধিক দল জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। এ ক্ষেত্রে কোনো জোট নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে জোটভুক্ত দলগুলোকে আসন সংখ্যা বিবেচনায় ক্ষমতার ভাগীদার করা হয়।
যে কোনো দেশে জাতীয় নির্বাচনের জন্য ভোট আসন্ন হলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিটি দল জনসম্মুখে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে। নির্বাচনী ইশতেহারের মধ্যে একটি দলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিসহ পররাষ্ট্রনীতি, শিক্ষানীতি, স্বাস্থ্যনীতি, শিল্পনীতি, আইনশৃংখলা সংক্রান্তনীতি, প্রতিরক্ষানীতি, বিচারব্যবস্থা সংক্রান্তনীতি, জনপ্রশাসন বিষয়কনীতি প্রভৃতির উল্লেখ থাকে।
ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হলে দলটি ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় আগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়ন করেছে কিনা সে বিষয়টি ভোট প্রদানের আগে জনগণ বিশেষভাবে বিবেচনায় নেয়। আমাদের দেশে এর আগে নির্বাচনকালীন প্রতিশ্র“তি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কোনো ক্ষমতাসীন দল অব্যবহিত পরবর্তী দ্বিতীয় মেয়াদে পুনঃনির্বাচিত হতে পারেনি। অবশ্য দশম সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল অব্যবহিত পরবর্তী নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পেরেছে; কিন্তু সে প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। এ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে দশম সংসদ নির্বাচনটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন প্রধান বিরোধী জোট বর্জন করায়, নির্বাচনটিতে তুলনামূলক বিচারে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায়, ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩ আসনের প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এবং বিদেশী কোনো পর্যবেক্ষক নির্বাচনটি পর্যবেক্ষণ না করায় এ নির্বাচনটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়নি। তাছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংবিধান ও আইনের বিধানাবলী সঠিকভাবে প্রতিপালিত হয়েছে কিনা সে প্রশ্নগুলোও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে জোরালোভাবে উত্থাপিত হচ্ছে।
আমাদের দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার জন্য সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান এ বিষয়টি সংবিধানে সুস্পষ্টরূপে উল্লেখ রয়েছে। একটি গ্রহণযোগ্য ও অর্থবহ নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিকভাবে এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অধীন যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তা যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হলে যে কোনো নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে বাধ্য।
বর্তমানে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ৯১ই ধারায় নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, ওই ক্ষমতার বলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী একজন প্রার্থী যে কোনো ধরনের অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত হলে অথবা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের যে কোনো বিধান লংঘন করলে নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে সন্তুষ্ট না হলে একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারে। তাছাড়া ভোটগ্রহণের সময় নির্বাচন কমিশনের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, বল প্রয়োগ ও ভীতি প্রদর্শনের মতো অন্যায় আচরণের কারণে সুষ্ঠুভাবে এবং আইনসম্মতভাবে নির্বাচন পরিচালনা সম্ভব নয় সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যে কোনো ভোট কেন্দ্রের অথবা সমগ্র নির্বাচনী এলাকার ভোট গ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করতে পারে। এর বাইরে একটি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিতে যা কিছু করা যথার্থ বিবেচিত হয়, কমিশন আইনানুযায়ী তা নিশ্চিতকরণের জন্য যে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে যদি দেখা যায়, নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ক্ষুন্ন হয়েছে মর্মে বস্তুনিষ্ঠ অভিযোগ রয়েছে, সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তদন্ত সাপেক্ষে সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত বিজয়ী প্রার্থীর গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশনা স্থগিত রাখতে পারে। এর আগে বিভিন্ন নির্বাচনে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ক্ষুন্ন হলেও আমাদের নির্বাচন কমিশনগুলো কখনও উপরোক্ত ক্ষমতাগুলো প্রয়োগ করেনি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনাররা দলীয় সরকার ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় তারা যে দল কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন, সে দলের স্বার্থের প্রতিকূলে অবস্থান গ্রহণ করেন না। এ কারণে অধিকাংশ নির্বাচন কমিশন আজ্ঞাবহ ও মেরুদণ্ডহীন হয়ে থাকে এবং এ দুটি বিষয় বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে অধিক প্রযোজ্য।
দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছিলেন, নেহায়াত সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে এ নির্বাচনটির আয়োজন করতে হচ্ছে এবং সরকার গঠনের পর যত দ্রুত সম্ভব সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে একাদশ সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে দেখা গেল আওয়ামী লীগের নেতারা ভিন্ন সুরে কথা বলছেন। তারা বলছেন, মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়। আর যদি একান্তই সংলাপ করতে হয় তবে তা হবে বর্তমান সরকারের ৫ বছর মেয়াদান্তে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে। আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্বাচন বিষয়ে ভিন্নধর্মী বক্তব্য এ দেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। জনগণ চায় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে যে দল বিজয়ী হবে সে দলের দ্বারা সরকার পরিচালিত হোক।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যে ৫ শতাংশের নিম্নে ছিল, এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে কোনো বিতর্ক না থাকলেও নির্বাচন কমিশন ও সরকার সমসুরে ভোটার উপস্থিতি ৪০ শতাংশের ঊর্ধ্বে দেখিয়েছে। বাস্তবতার নিরিখে এ ধরনের ভোটার উপস্থিতি অবিশ্বাস্য এবং দেশের কোনো সচেতন মানুষ এ ধরনের ভোটার উপস্থিতি প্রত্যক্ষ করেনি। আমাদের দেশীয় সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে ফেমা নামক যে সংস্থাটির গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫ থেকে ১০ শতাংশ। এ ধরনের নিু ভোটার উপস্থিতি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন যে কোনো নির্বাচনের জন্যই গ্রহণযোগ্য নয়।
আমাদের সংবিধানের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে দেখা যায়, একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাগুলো থেকে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত ৩০০ সদস্য এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে ৫০ জন মহিলা সদস্য- সর্বমোট ৩৫০ সদস্য সমন্বয়ে সংসদ গঠিত। উপরোক্ত বিধানাবলী থেকে এটি স্পষ্ট, একক নির্বাচনী এলাকার ৩০০ সদস্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন এবং মহিলাদের জন্য নির্ধারিত ৫০ সদস্য সংসদ সদস্যদের ভোটের দ্বারা নির্বাচিত হন। দশম সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচনের জন্য উন্মুক্ত ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অতীতে কখনও সাধারণ নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে দেখা যায়নি, যদিও উপনির্বাচনে একাধিক প্রার্থীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধান অনুযায়ী বর্তমানে একজন প্রার্থী সাধারণ নির্বাচনের সময় সর্বোচ্চ ৩টি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। এর আগে এটি ৫টিতে সীমাবদ্ধ ছিল এবং এরও আগে একজন প্রার্থী কয়টি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন এ ধরনের কোনো সংখ্যা নির্ধারণ করা ছিল না। ১৯৭০-এর পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বোচ্চ ৭টি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রথমত ৫টি এবং অতঃপর ৩টি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বর্তমানে একজন ব্যক্তির সর্বোচ্চ ৩টি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাধা না থাকলেও নির্বাচন-পরবর্তী তিনি একই সময়ে দু বা ততোধিক নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য থাকতে পারেন না। তাই একাধিক আসন থেকে নির্বাচিত ব্যক্তিকে নির্বাচন-পরবর্তী নির্বাচন কমিশনের কাছে ঘোষণা প্রদান করতে হয়, তিনি কোন নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করতে ইচ্ছুক এবং এরূপ ঘোষণার পর অপরাপর নির্বাচনী এলাকার আসন শূন্য ঘোষিত হয়। এরূপ শূন্য ঘোষিত আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সুতরাং শূন্য ঘোষিত আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের জন্য উন্মুক্ত অর্ধেকেরও বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া যে এক কথা নয়, তা সহজেই অনুমেয়।
আমাদের দেশে এর আগে যখনই গণতন্ত্রকে ব্যাহত করে ক্ষমতাসীন সরকার অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতাকে দীর্র্ঘায়িত করার চেষ্টা করেছে তখনই দেখা গেছে, অসাংবিধানিক পন্থায় সরকারের পরিবর্তন ঘটেছে। গণতন্ত্রের বিকল্প কোনো অসাংবিধানিক বা অগণতান্ত্রিক শাসন হতে পারে না এবং যখনই কোনো গণতান্ত্রিক শাসন অসাংবিধানিক বা অগণতান্ত্রিক শাসন দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে তখন তা ক্ষমতাসীন দলের জন্য পরিণামে শুভফল বয়ে আনেনি।
যে নির্বাচনে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের জন্য উন্মুক্ত আসনের অর্ধেকের অধিক সংখ্যক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, যে নির্বাচনটি প্রধান বিরোধী দলের অংশগ্রহণ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন, যে নির্বাচনটিতে ভোটার উপস্থিতি অতি নগণ্য এবং যে নির্বাচনটি দেশের সচেতন মানুষ এবং আন্তর্জাতিক মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি, সে নির্বাচনের ভিত্তিতে যে সরকার গঠিত হয়েছে, সে সরকারটিকে সংবিধান ও আইনের দৃষ্টিতে বৈধ বলা যায় কিনা এ প্রশ্নে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এ ধরনের বিতর্ক একটি দেশের জন্য এবং গণতন্ত্রের জন্য কাম্য নয়। এ ধরনের বিতর্ক শুধু গণতন্ত্র নয়, দেশের স্থিতিশীলতাকেও ক্ষুন্ন করে। তাই অবৈধতার অপবাদে নিন্দিত সরকার অভিজ্ঞতার আলোকে অন্তত নিজের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় যদি দ্রুত আর একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অর্থবহ ও প্রতিদ্বন্দ্বীপূর্ণ নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে, তাহলেই সংহত হবে এ দেশের গণতন্ত্র। এ পথ চিনতে ভুল করলে অতীতের মতো বিপর্যয় যে অনিবার্য, অন্ততপক্ষে এ কথাটি ভেবে অবৈধতাকে বৈধতার চাদর দিয়ে ঢেকে ফেলতে পারলে আমাদের সামনের দিনগুলো হবে উজ্জ্বল।
ইকতেদার আহমেদ : সাবেক জজ; সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন