|
ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশী
|
|
'উন্নয়ন সহযোগী' ও 'আন্তর্জাতিক মহাজন'
29 Mar, 2014
অনেক দিন আগে ভারতের স্বনামধন্য কার্টুনিস্ট লছমনের একটি কার্টুন দেখেছিলাম। আমার প্রিয় কার্টুনিস্ট তাঁর তুলি-কলমে আমাদের এতদঞ্চলের সরকার পরিচালকদের মানসিকতা বা 'মাইন্ডসেট'-এর চমৎকার সব ছবি তাঁর কার্টুনের দর্শক-পাঠকদের মনে গেঁথে রেখেছেন। এই কার্টুন আমার মনে গেঁথে আছে। কার্টুনটিতে দেখা যাচ্ছে, গান্ধী টুপি পরা মাননীয় মন্ত্রী তাঁর কক্ষের দেয়ালে বিশালাকার বিশ্ব মানচিত্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। পেছনে কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে তাঁর সচিব। দাঁড়ানোর ভঙ্গিতেই বোঝা যায়, তিনি একজন জাঁদরেল আমলা ও মন্ত্রীর 'একান্ত' বাধ্যগত। মানচিত্রটিতে পৃথিবীর কোন দেশ থেকে কত টাকা ঋণ-অনুদান এসেছে তা দেখানো হয়েছে। মন্ত্রীপ্রবরের হাতে লম্বা একটি লাঠি। তিনি সেই লাঠির অগ্রভাগ মানচিত্রের এক কোনায় একটি ছোট্ট দেশের ওপর ঠেকিয়ে তাঁর সচিবের দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলছেন, 'এখানে একটা দেশ দেখতে পাচ্ছি যেখান থেকে এখনো আমরা কোনো সাহায্য পাইনি!'
'উন্নয়ন সহযোগী' ও 'আন্তর্জাতিক মহাজন'
সচিব কী জবাব দিয়েছেন কার্টুনে তার উল্লেখ নেই। তবে আমরা তা অনায়াসে কল্পনা করে নিতে পারি। তিনি নিশ্চয়ই বলবেন, 'ইয়েস স্যার! আমরা আজ থেকেই চেষ্টা শুরু করব। দেখবেন স্যার, আগামী বাজেটের আগেই ওই দেশ থেকেও সাহায্য চলে এসেছে...।'
এই কার্টুন ২৫-৩০ বছর আগেকার। ভারত এখন আর সেভাবে বিদেশনির্ভর নয়। আমাদের দেশে মোট বাজেটের অংশ হিসেবে বিদেশি ঋণের পরিমাণ শতকরা হারে কমেছে। তবে বিদেশি ঋণের প্রবাহ কমলেও বিদেশিদের কাছ থেকে যেকোনো শর্তে যেকোনো ধরনের ঋণ নিতে আমাদের আগ্রহে কোনো ভাটা পড়েনি।
দেয়ার ইজ নো ফ্রি লাঞ্চ
ইংরেজিতে একটা কথা আছে, 'There is no free lunch!' এর ঠিক ঠিক বাংলা তরজমা করতে পারছি না। তার ভাবানুবাদ হওয়া উচিত- 'আজকের দিনে মতলব ছাড়া কেউ কাউকে পাইপয়সাও দেয় না।' প্রাচ্যের মানুষ মনে করে, পশ্চিমারা সবাই বস্তুবাদী ও ভোগবাদী। ব্যক্তিবাদীও। কেবল নিজেকে নিয়েই ভাবে। সমাজ, এমনকি পরিবার নিয়েও ভাবে না।
এটা মোটেই ঠিক নয়। পৃথিবীর সব দেশেই সাধারণ মানুষের আবেগ-অনুভূতি, ভালো লাগা-না লাগায় কোনো মৌলিক ফারাক নেই। আমার তো মনে হয়, কতক ক্ষেত্রে পশ্চিমের মানুষ প্রাচ্যের মানুষের চেয়ে বেশি সংবেদনশীল। পৃথিবীর কোথায়ও বন্যা-দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে ধনবাদী ইউরোপ-আমেরিকার সাধারণ মানুষ যেভাবে সাড়া দেয়, বিভিন্ন সেবা সংস্থাকে এগিয়ে গিয়ে অকাতরে অর্থ দান করে, প্রাচ্যের মানুষকে সেভাবে সাড়া দিতে দেখা যায় না।
আশির দশকের শেষদিকে প্রবল বন্যায় বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। সেই সময় লন্ডনে সেখানকার বাংলাদেশিদের একটি অংশের ব্যবস্থাপনাধীন একটি সেবা সংস্থার বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রথম পাতায়। তারা তাদের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে সাধারণ নাগরিকদের কাছে বাংলাদেশের বন্যাদুর্গতদের জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। শুনেছিলাম, তাতে বিপুল সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। এভাবেই সেখানকার মানুষ মানবতার ডাকে সাড়া দেয়। তাদের দান কোথায় যাচ্ছে, কতটা যাচ্ছে, আদৌ যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করে না।
তবে সাধারণ মানুষের এই সংবেদনশীলতার প্রতিফলন পশ্চিমের বিশ্ব রাজনীতিতে খুঁজতে গেলে হতাশ হতে হবে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক 'উন্নয়ন সহায়তা'র বিষয়টি একান্তভাবেই সংশ্লিষ্ট 'দাতা'র লাভ-লোকসানের মাপকাঠিতে পরিচালিত হয়। এখানে প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য লক্ষ্য বিদ্যমান থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই এসব দান-অনুদান নির্জলা 'বিনিয়োগ'।
দরিদ্র ও পিছিয়ে থাকা দেশগুলোকে আজ্ঞাবহ বানিয়ে রাখার রাজনৈতিক লক্ষ্য একবারেই প্রকাশ্য। 'উন্নয়ন সহায়তা'র নামে পশ্চিম থেকে পূর্বে যে অর্থ আসে তার তেজারতির ব্যাপারটাতে রাখঢাক যথেষ্টই থাকে। তবে সাহায্য, অনুদান, পণ্য সহায়তা, যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন, কোনোটাই 'free' নয়। সবই ঋণ। সব ঋণেই নানা শর্ত। প্রকাশ্য কিংবা অপ্রকাশ্য।
দরিদ্র দেশের শাসকরা জনগণকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনমনে বিরাট প্রত্যাশা জাগিয়ে ক্ষমতায় বসেন। ক্ষমতায় গেলে কী কী করবেন নির্বাচনের আগে তার বিশাল ফিরিস্তি দিয়ে ভোট আদায় করা হয় (অবশ্য আমাদের দেশে এখন সেই কষ্টটাও করতে হচ্ছে না। ভোট নিজেই বাক্সে ঢুকে পড়ে)। সে যাই হোক, ক্ষমতায় বসার পর প্রতিশ্রুতি পূরণ দূরে থাক রাষ্ট্রের নিয়মিত কাজকর্ম চালিয়ে যেতেই হাত টান পড়ে। রাষ্ট্রের যা আয়, তা দিয়ে উন্নয়নশীল দেশের জনগণের খাঁই মেটানো অসম্ভব। শাসকরা তখন ওই কার্টুনের মন্ত্রীপ্রবরের মতো 'ডোনার' খুঁজতে হন্যে হয়ে চারদিকে হাতড়াতে শুরু করেন এবং খাদ্য-অখাদ্য বিবেচনায় না নিয়ে যা পান তা-ই গিলতে থাকেন।
এত ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে না বলে সহজ ভাষায় বলা যায়, পশ্চিমের দেশগুলো তথাকথিত 'তৃতীয় বিশ্বে'র দেশগুলোকে যে ঋণ বা অনুদান দিয়ে থাকে, তা ষোলো আনাই তাদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের অংশ। লাভের জন্যই তারা তা করে থাকে। জাতিসংঘের ছত্রচ্ছায়ায় বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি প্রভৃতি সংস্থাও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশকে ঋণ-অনুদান দিয়ে থাকে, সেগুলোর অবস্থাও তথৈবচ। পশ্চিমের অনেক বেসরকারি সেবা সংস্থা তাদের দেশের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ সংগ্রহ করে বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে। তাদেরও থাকে নানা মতলব।
আমাদের দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণে সুদের হার কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাকল্যে ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। দুনিয়ার কোনো দেশেই সুদের হার এত উচ্চ নয়। ধনী দেশগুলোতে ২ থেকে ৩ শতাংশ হারেও বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যায়। অতি উচ্চ হারে সুদ দিয়ে ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ে লাভ করতে হলে মুনাফার হারও অস্বাভাবিক রকমে বাড়িয়ে ধরতে হয়। সেটা তখন আর প্রতিযোগিতামূলক থাকে না। কারণ উচ্চ সুদের ঋণ পণ্যের উৎপাদন মূল্য বাড়িয়ে দেয়। আনুষঙ্গিক খরচও সেই হারে বাড়ে। ফলে দেশের বাইরে সেই পণ্যের কোনো বাজার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। দেশের বাজারেও আমদানীকৃত বিদেশি পণ্যের কাছে মার খায় দেশি পণ্য।
বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ বা এডিবির ঋণে সুদের হার কম। অন্তত কাগজে-কলমে। কিন্তু ঋণের সঙ্গে যদি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় ও ঋণের বিনিময়ে যদি রাজনৈতিক ও অন্যবিধ সুবিধা আদায় করা হয়, তাহলে সুদের হারের সাশ্রয় হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফ যে ঋণ দেয়, সেই ঋণের টাকা কিভাবে খরচ করতে হবে তা নির্দিষ্ট করা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে কার কাছ থেকে কেনাকাটা করতে হবে সেটাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। তখন সেই ঋণ আর 'সস্তা' থাকে না।
শর্তহীন ও সুদহীন ঋণ বা অনুদান ক্রমেই কমে আসছে। সেই সঙ্গে কঠোর থেকে কঠোরতর হচ্ছে ঋণের শর্তাবলি। জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোর ওপর তাদের জিডিপির ০.৭ শতাংশ পরিমাণ অর্থ দরিদ্র দেশগুলোকে অনুদান দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ধনী দেশগুলো এখন পর্যন্ত সেই টার্গেটের ধারেকাছেও নেই। ২০ বছর আগের এক হিসাবে দেখা গেছে, এত হাঁকডাকের পরও সেটা তাদের জিডিপির ০.৩ শতাংশের বেশি নয়। আজকের দিনে পরিস্থিতি তার চেয়ে উন্নত হয়েছে বলে মনে হয় না।
উন্নয়ন বনাম অতি-উন্নয়ন
অথচ এই অনুদানের অনুকম্পা দরিদ্র দেশগুলোকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। এই অনুদান ও ঋণের জোয়ালে বেঁধে তথাকথিত 'অতি-উন্নত' কয়েকটি দেশ বাদবাকি দুনিয়াকে কলুর বলদ বানিয়ে রেখেছে। পশ্চিমের বিশেষজ্ঞরাই বলেন, অতি-শিল্পায়িত 'অতি-উন্নত' কিছু দেশের কারণেই আজ বিশ্ব অর্থনীতিতে এত সংকট। এসব দেশের অতি-চাহিদা মেটাতে গোটা দুনিয়ার সম্পদে টান পড়ছে। তাদের অতি-শিল্পায়নে যে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে, তার দায় বহন করতে হচ্ছে গোটা পৃথিবীকে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য টাকার অঙ্কে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান চালু করা হয়েছে। যেসব অতি-শিল্পায়িত দেশ অধিক পরিমাণে কার্বন নিঃসরণ করে বায়ুদূষণ করছে, তারা ক্ষতিপূরণ দেবে, সেই টাকার ভাগ পাবে সেসব দেশ, যারা কম কার্বন নিঃসরণ করছে। অর্থাৎ যারা শিল্পায়নের মাপকাঠিতে পিছিয়ে আছে।
এর অর্থ পৃথিবীর কথিত অতি-শিল্পায়িত দেশগুলোর জন্য আরো বেশি কার্বন নিঃসরণের সুযোগ অবারিত করে দেওয়া ও শিল্পায়নে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোকে কিছু 'ঘুষ' দিয়ে বিশ্ব কোরামে সিদ্ধান্ত পাস করিয়ে নেওয়া। এটা কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না। নৈতিক দিক থেকেও প্রশ্নবিদ্ধ। এ জন্যই পশ্চিমের বিশেষজ্ঞরা অনেকে পশ্চিমের অতি-শিল্পায়িত দেশগুলোকে তাদের নিজ নিজ দেশের ধারণক্ষমতার নিরিখে অব-শিল্পায়নের (de-industrialisation) পরামর্শ দিচ্ছেন। এই পরামর্শে কেউ কান দেবে, সে আশা সূদূরপরাহত। যদি না তাদের নিজ ভূমিতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বাধ্য করে।
এ অবস্থায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকেই তাদের টিকে থাকার প্রয়োজনে স্ব-উদ্যোগে টেকসই উন্নয়ন মডেলে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন কাঠামো নির্মাণে তৎপর হতে হবে। শক্তিমান রাষ্ট্রসমূহের প্রেসক্রিপশন বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নেওয়ার অবস্থান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। পরনির্ভরতার শৃঙ্খলমুক্ত হয়ে নিজ নিজ সম্পদ ও সামর্থ্যের সীমার মধ্যে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে ব্রতী হওয়ার সময় এসেছে।
আন্তর্জাতিক মহাজন
এমআইটির অর্থনীতিবিদ Rudi Dornbusch নব্বইয়ের দশকে পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক বিপর্যয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে ওই সময়কার দক্ষিণ কোরিয়া ও আইএমএফ সম্পর্কে বলেছিলেন : দক্ষিণ কোরিয়া হচ্ছে, 'a wholly owned subsidiary of the US Treasury.' আর আইএমএফ হচ্ছে, 'a toy of the US to pursue its economic policy offshore.' এই মন্তব্য খুবই কঠোর সন্দেহ নেই। তবে Rudi Dornbusch-এর এ মন্তব্য সঠিক কি না প্রশ্ন করা হলে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ও বিশ্বব্যাংকের বহুল আলোচিত প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিজ বলেছিলেন, 'এটা একেবারেই সঠিক চিত্র। এই সংস্থাটি (আইএমএফ) এমনই যে সেখানে সবাই কথা বলতে পারে, কিন্তু সেখানে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেরই ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহে জাতিসংঘে পাঁচটি দেশের ভেটো ক্ষমতা থাকার ব্যাপারেও আপত্তি আছে। আর আইএমএফের ক্ষেত্রে কেবল একটি দেশ। কোরিয়ার
নীতিনির্ধারণে যুক্তরাষ্ট্রের খবরদারির মাত্রা ছিল বিস্ময়কর। তাদের সঙ্গে (আইএমএফ) সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার সময় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি আন্ডারসেক্রেটারি সিউলে একটি হোটেলে অবস্থান করেছেন। প্রতিরাতেই আইএমএফ কর্মকর্তারা তাঁর কক্ষে গেছেন তাঁর সম্মতির জন্য। এ কারণে আইএমএফ টিম বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার জন্য কোনো সময় দিতে পারেনি, যদিও কোরিয়া সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক টিমের অনেক বেশি অভিজ্ঞতা ছিল। তাঁরা জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলার মতো সময় তাদের হাতে নেই।'
এই মহাজন আমাদের অতীতকালের 'ঋণ সালিসি'র সময়কার মহাজনের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাধর।
লেখক : রাজনীতিক, ভূরাজনীতি ও উন্নয়ন গবেষক
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন