কোনো এক সভায় সংশ্লিষ্ট সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। আলোচনার এক পর্যায়ে প্রধান অতিথি নির্বাচনের প্রসঙ্গ আনেন। সম্ভাব্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাবাকারে উপস্থাপিত হতে থাকে। একজন পদস্থ কর্মকর্তার নাম উত্থাপিত হলে অনেককেই ভ্রু কোঁচকাতে দেখা যায়। দু-একজন সদস্য আকারে-ইঙ্গিতে প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। পরিবেশ হালকা করার জন্য এবং কিছুটা কৌতূহলবশত আমি বললাম, 'অসুবিধা কোথায়? তিনি তো সরকারের একজন পদস্থ কর্মকর্তা। তাঁর মর্যাদার কর্মকর্তারা তো আমাদের অন্যান্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়েছিলেন।' এবার একজন মহিলা সদস্য মুখ খুললেন। বললেন, 'স্যার, বাংলাদেশে কত লোকই কত কিছু হয়েছে। এখানে পদমর্যাদা থেকে মানুষের গুণমান, সম্মান-অসম্মান কিংবা গ্রহণযোগ্যতা বোঝা যায় না।' তিনি বোধ হয় আরো বলতে চেয়েছেন, উচ্চপদে অধিষ্ঠিত লোকজন কিভাবে পদাসীন হয়েছেন, তা জানলে হতাশা বাড়ে।
মহিলা সদস্যের বক্তব্যটি প্রথমে কানে লেগেছে। কিন্তু পরে তা আমার মাথায় ঢুকে গেছে। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত কিংবা বেসরকারি সংস্থার সুউচ্চ পদে যাঁরা নির্বাচয়ন, নির্বাচন অথবা একান্ত ব্যক্তিগত পছন্দের মাধ্যমে নিযুক্তি পেয়েছেন, তাঁদের বিশাল অংশের গুণাগুণ পর্যালোচনা করে মনে হয়েছে, বাংলাদেশের জন্য ওই সদস্যের বক্তব্য অকাট্য সত্য। এখানে সুউচ্চ পদে আসীন হওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপাদান হচ্ছে দলবাজি, তদবির-তালাফি, তাঁবেদারি-মোসাহেবি। খুব অল্পসংখ্যক ব্যক্তি, বোধ হয় ১০-১৫ শতাংশের বেশি হবে না, নিজ যোগ্যতাগুণে উচ্চপদে আসীন হয়েছেন। যেসব পদ কালোত্তীর্ণ পদ্ধতির ধারায় সম্পূর্ণরূপে যোগ্যতার ভিত্তিতে পূরণ করা হতো, ধীরে ধীরে সেসব পদও নিজ দলের লোক কিংবা আত্মীয়স্বজন, পছন্দের লোকদের দ্বারা পূরণ হতে শুরু করেছে। দেশের জন্য, বিশেষ করে সাধারণ নাগরিকদের জন্য এটি ভয়ংকর আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বহু বছরের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সুউচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিরা এমন সব কথা বলেন, এমন সব কাজ করেন, যা সাধারণ্যে হাসির উদ্রেক করে। শিক্ষিত লোকজনকে অবাক হয়ে বলতে শুনেছি, এত উঁচু পদের একজন লোক এমন কথা কী করে বলতে পারলেন, এমন কাজ কী করে করতে পারলেন! আরো প্রদীপ্ত, বুদ্ধিদীপ্ত লোকজন বলেন, এ ধরনের লোক এত সুউচ্চ পদে গেলেন কী করে! তাঁর চলন-বলন, বুদ্ধি-বিবেচনা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অতীত জীবনের রেকর্ড, কর্মক্ষমতা সাধারণভাবে বিবেচনা করলে দেখা যাবে, এরূপ লোককে কোনো রকমেই তাঁর বর্তমান কর্মস্তরে বা নিয়োজিত পদে অধিষ্ঠিত করা যায় না।
সুউচ্চ পদে অনুপযুক্ত লোকের অধিষ্ঠানে সংগঠনের কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়। সংগঠনে বিকৃতি ঢুকে পড়ে, এমনকি সংগঠনে দুর্বৃত্তায়ন ঘটে। ধীরে ধীরে সংগঠনটি বিপর্যস্ত হয়, মুখ থুবড়ে পড়ে। যেহেতু সংগঠনের মূল কাজ করার পারদর্শিতা বা সক্ষমতা নেই, তাই অকাজ-কুকাজের মাধ্যমে অযোগ্য ব্যক্তি তার দুর্বলতা ঢাকতে চেষ্টা করে। অবশেষে সে তার সংগঠনকে ক্ষমতাবানদের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। উদ্দেশ্য, এই সংগঠনের সুউচ্চ পদে যত দিন সম্ভব টিকে থাকা এবং সংগঠন থেকে কর্মাবসানের পর অন্য কোনো সংগঠনে একটি পদ জোগাড় করা কিংবা অর্থকড়ির কোনো সুযোগ-সুবিধা বাগিয়ে নেওয়া। ক্ষমতাবানদের আনুকূল্য লাভের জন্য এসব লোক বহু অন্যায় কাজ করে, অন্যায় সিদ্ধান্ত দেয়। এতে সাধারণ মানুষের যে কত বড় ক্ষতি হয়, অনেকেই যে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে, সে সম্পর্কে খোঁজ রাখার প্রয়োজন এরা অনুভব করে না। এভাবে দেশ ও মানুষের সর্বনাশ করে এরা টিকে থাকে, একের পর এক স্বার্থ হাসিল করে চলে। নানারূপ নতুন নতুন অপকৌশলের মাধ্যমে অধিকতর সুবিধা আদায়ের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়।
বুনো ষাঁড়ের লম্ফঝম্পে তছনছ আমাদের শান্তির নিবাস
সাধারণত দুর্নীতি, অনিয়ম, প্রতারণা ও দলবাজির মাধ্যমে অযোগ্য ব্যক্তি সুউচ্চ পদ দখল করে বসে। নির্বাচন, নিয়োগ পরীক্ষা, পদোন্নতি, সার্চ কমিটির বাছাইপ্রক্রিয়া কিংবা নিয়োগকারী ব্যক্তির (কর্তৃপক্ষ) একক পছন্দের মাধ্যমে সুউচ্চ পদগুলো পূরণ করা হয়। যে পদ্ধতিই প্রয়োগ করা হোক না কেন, অযোগ্য ব্যক্তিরা উপরোক্ত অপকৌশলগুলো ব্যবহার করে পদ্ধতি-প্রক্রিয়াকে ভেঙে এবং বিকৃত করে পদ দখলের পথে অগ্রসর হয়। দলবাজি, তালাফি-তদবির, তাঁবেদারি-মোসাহেবি এ ব্যাপারে বিশেষ সহায়ক হয়। অযোগ্য পদাসীন ব্যক্তিদের নৈতিকতাবোধ অত্যন্ত শিথিল। তাদের জীবনে এসব ঝামেলা নেই বললেই চলে। নিজের সুবিধার জন্য যেখানে যাওয়ার দরকার, যার হাতে-পায়ে ধরা দরকার, এককথায় যা করার দরকার এরা তা-ই করবে। কিন্তু জ্ঞান, দক্ষতা, পারদর্শিতা ও প্রদীপ্তি বাড়ানোর জন্য কোনো প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে না। যদি পদ দখলের প্রক্রিয়া নির্বাচন হয়, তাহলে এরা নির্দ্বিধায় নির্বাচনে কারসাজি, কারচুপি- সব করবে। শুধু দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা-নেত্রীদের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করে, নতজানু হয়ে, প্রয়োজনবোধে পায়ে ধরে নিজেদের অবস্থান ঠিক রাখবে। মনোনয়ন সংগ্রহ করবে। নির্বাচন ব্যতিরেকে একক ব্যক্তির পছন্দে নিয়োগ হলে তারা সর্বশক্তি দিয়ে তালাফি-তদবির করে এই পদ বাগাতে চেষ্টা করবে। যে দেবতা যেভাবে তুষ্ট, তাঁকে সেভাবে প্রভাবিত করা হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আনুগত্য, তদবির-তালাফি, সুযোগমতো তাঁবেদারি-মোসাহেবি সবচেয়ে কার্যকর হয়ে থাকে। আসলে একক নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা তার আশপাশের চক্র প্রথমে সিদ্ধান্ত নেয় যে তাদের অনুগত ব্যক্তিদের সুউচ্চ পদে বসানো হবে। অনুগ্রহের তালিকায় যে ব্যক্তি ওপরের দিকে থাকে, তাকে প্রথম পর্যায়ে কোনো একটি সুউচ্চ পদ দেওয়া হয়। সে পদের জন্য তার উপযোগিতা খুব একটা দেখা হয় না। অনুগ্রহের লোককে পদ দিতে হবে, এটিই সবচেয়ে বড় কথা। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হলে সে ক্ষেত্রে সার্চ কমিটিকেও প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা থেকে অযোগ্য ব্যক্তিরা বিরত হয় না। সাধারণত শাসকদল এবং প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সার্চ কমিটির ওপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চালানো হয়। প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় সার্চ কমিটিকে সাচিবিক সহযোগিতা দিয়ে থাকে। এর ফলে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুগ্ম সচিবের সঙ্গে সার্চ কমিটির সদস্য ও চেয়ারম্যানের একটি নিকট যোগাযোগ গড়ে ওঠে। তাঁরা সতর্ক গোপনীয়তায় সরকারের মনোভাব ও পছন্দ চেয়ারম্যান, সদস্যদের জানিয়ে দেন। আমাদের দেশে সার্চ কমিটিগুলো প্রায়শই 'গ্রামার' অনুযায়ী কাজ করে না। তারা সরকারকে খুশি রাখতে চেষ্টা করে। সরকারের পছন্দের ব্যক্তিকেই তারা নিয়োগের জন্য বাছাই করে। গ্রামার অনুযায়ী কাজ করলে প্রত্যেক সদস্য একটি গালাবদ্ধ খামে তাঁদের পছন্দের তালিকা চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিতেন, চেয়ারম্যান নিজেও একটি গালাবদ্ধ তালিকা তার সঙ্গে যোগ করতে পারতেন। তারপর সব তালিকার নামগুলোর ওপর দীর্ঘ সময় ধরে অনুপুঙ্খ আলোচনা করে বাছাইকৃত ব্যক্তিদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হতো। সে ক্ষেত্রে নিকৃষ্ট, অযোগ্য ব্যক্তির অপকৌশল খুব একটা কাজে আসত না। সম্পূর্ণরূপে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের ব্যবস্থা করলে নিকৃষ্ট মানের অযোগ্য প্রার্থীরা বিশেষ সুবিধা করতে পারে না। তবু তারা সীমিতভাবে হলেও অপকৌশল প্রয়োগের চেষ্টা চালায়। সীমিত পরিসরে সফলতা পাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। পদোন্নতির মাধ্যমে পদ পূরণের ক্ষেত্রে অযোগ্য ব্যক্তির অপকৌশল প্রায়ই সফল হয়। তারা এককভাবে তদবির চালায়, ব্যাচমেটদের সঙ্গে নিয়ে দল পাকায়, রাজনৈতিক নেতা, বিশেষ করে মন্ত্রীদের কাছে বারবার ধরনা দেয় এবং তাদের পক্ষে একটি রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করে, সিনিয়রদের বদনাম দিয়ে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করে। অন্যায়ভাবে নিজেদের উচ্চপদে নিয়োগের পথ প্রশস্ত করে। জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত অনেকগুলো সরকার ও নানাবিধ সরকারব্যবস্থা দেখেছে। এগুলো হচ্ছে- পার্লামেন্টারি পদ্ধতির গণতান্ত্রিক সরকার, রাষ্ট্রপতিশাসিত গণতান্ত্রিক সরকার, শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর আওতায় রাষ্ট্রপতিশাসিত একদলীয় সরকার, শক্তিবলে অধিষ্ঠিত পার্লামেন্ট সমর্থিত রাষ্ট্রপতিশাসিত কর্তৃত্ববাদী সরকার, সামরিক আইনভিত্তিক সামরিক সরকার, গণশক্তিভিত্তিক (People power) জাতীয় ঐকমত্যের তত্ত্বাবধায়ক সরকার, শাসনতান্ত্রিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সেনা সমর্থিত (নিয়ন্ত্রিত) অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সব শেষে শূন্যগর্ভ আমলাতান্ত্রিক সরকার। এতগুলো সরকারের মধ্যে একটি সরকারও তত্ত্বভিত্তিক বা বৈজ্ঞানিক নীতিমালার আলোকে আন্তরিকভাবে সামগ্রিক পরিসরে নিবিড় অনুসন্ধান চালিয়ে যথোপযুক্ত ব্যক্তিবৃন্দ বাছাইকরত দেশের (সু)উচ্চ পদগুলো পূরণের ব্যবস্থা করেনি। পরিবর্তে ক্ষমতাধর ব্যক্তি কিংবা ক্ষমতাচক্র বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, আপনজন, পরিচিতজন, লোকমুখে শোনা এবং পত্রপত্রিকা থেকে নাম জানা ব্যক্তিদের (সু)উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত করেছে। প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কর্ম-অভিজ্ঞতার পূর্ণাঙ্গ তথ্য, তার অভিভাবক-সংক্রান্ত (মূলত পিতা-মাতা) প্রাসঙ্গিক সাধারণ তথ্য এবং তার নিজের জীবনের সামগ্রিক তথ্যাদি সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পর ওই ব্যক্তিকে (সু)উচ্চ পদে নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সমীচীন হবে। সে ক্ষেত্রে নবনিযুক্ত ব্যক্তির আওতাধীন প্রতিষ্ঠান যথার্থই কার্যকর হবে এবং মানুষ সরকার তথা রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর শ্রদ্ধাশীল হবে। দেশে জ্ঞান, বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, দক্ষতা, সততা ও নৈতিকতার বিকাশ ঘটবে।
আমাদের দেশে ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা ক্ষমতাচক্র এত সময় ধরে এত কষ্ট করে এত বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা পর্যালোচনা করে নিয়োগপর্ব সম্পন্ন করতে রাজি নয়। তাদের এত ধৈর্য নেই। তারা কর্ম দর্শন হিসেবে বিশ্বাস করে, যেকোনো লোক যেকোনো কাজ করতে সক্ষম। চেয়ারই মানুষকে তার কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য উপযুক্ত করে তুলবে (chair will make a man fit for the job)। স্বাধীনতার পর থেকে (সু)উচ্চ পদের এক বিশাল অংশই এভাবে পূরণ করা হয়েছে। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে জাতীয় জীবনের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় এত বিপুলসংখ্যক অযোগ্য লোকের লম্ফঝম্প দেখছি, এতে আমাদের পুরো শাসনব্যবস্থা তছনছ হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। 'মেধাশূন্য প্রশাসন' আজ একটি অতি পরিচিত বাক্যাংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষিতজন এবং সাধারণ নাগরিক এ অবস্থার পরিবর্তন মনেপ্রাণে আশা করে, তবে দৃষ্টিগ্রাহ্য ভবিষ্যতে সে পরিবর্তন আসবে কি না, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের আনন্দ বিসর্জন দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, আলোচনা-পর্যালোচনার ধকল পোহাতে আমরা প্রায় কেউই রাজি নই। অতএব, বুনো ষাঁড়ের লম্ফঝম্পকে শিশুমণির খেলা বিবেচনা করে আপাতত আমাদের দিন কাটাতে হবে।
লেখক : সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান
(কালের কণ্ঠ, ২২/০৩/২০১৪)
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন