আজকের বাংলাদেশে রাজনৈতিক ‘জোট’ গঠনের কালচার এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যখন আদর্শ বা কর্মসূচিভিত্তিক ‘রাজনৈতিক দলে’র অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এসব ‘জোট’ সুনির্দিষ্ট কোনো নীতি-আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য গঠিত হয় না। লক্ষ্য ক্ষমতা। সেজন্য শক্তি সঞ্চয় ও ‘ভোট ব্যবস্থাপনা’। এর বাইরে জোটের কোনো জোটবদ্ধ তৎপরতা সচরাচর দেখা যায় না।
ভোটে লড়ার জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে জোট অবশ্যই হতে পারে। সব গণতান্ত্রিক দেশেই তার কম-বেশি দৃষ্টান্ত আছে। কিন্তু জোটের রাজনৈতিক সীমারেখা যদি একেবারেই উন্মুক্ত থাকে, তাহলে একই মঞ্চে এমন সব বিপরীত চিন্তাভাবনার সমাবেশ ঘটতে পারে, যখন কোনো দলই জোটে থাকা অবস্থায় তার নিজস্ব রাজনৈতিক দর্শন তুলে ধরতে পারে না। এসব জোটে সাধারণত কোনো একটি দল প্রধান শরিক হয়ে থাকে। অন্যদের সেই দলের কর্তৃত্ব মেনে নিতে হয়। কোনো ব্যাপারে ভিন্নতর বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ থাকে না।
একদিকে ‘রাজাকার’, আরেক দিকে ‘স্বৈরাচার’
যেমন ধরুন, বিএনপি এখন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটবদ্ধ আছে। ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের আগে এক পর্যায়ে জাতীয় পার্টিরও সেই জোটে যোগ দেয়ার কথাবার্তা হয়েছে। এ নিয়ে বিএনপি নেত্রীর সঙ্গে এরশাদ সাহেবের একান্ত বৈঠকও হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনে গেলে মানুষ তাকে থুতু দেবে। শেষ পর্যন্ত এরশাদ সাহেব যথারীতি অ্যাবাউট টার্ন করেছেন। এখন তার দলের দ্বিতীয় ব্যক্তি কাজী জাফর আহমদ তার অনুসারীদের নিয়ে বিএনপি জোটে যোগ দিয়েছেন। এমন একটি জোটের সভায় বিএনপি নেত্রী, যিনি দাবি করেন তার দলের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক, বক্তৃতার সময় দেখবেন তার একপাশে ‘রাজাকার’ আরেক পাশে ‘স্বৈরাচার’। সে ক্ষেত্রে তিনি তার বক্তৃতায় কীভাবে ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা’ এবং আশির দশকে ‘স্বৈরাচারবিরোধী’ আন্দোলনে তার আপসহীনতা কিংবা নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’র কথা বলবেন? তখন কেবল প্রতিপক্ষকে গালাগাল দেয়া ছাড়া তার আর কিছুই বলার থাকে না। অন্য শরিকদের ক্ষেত্রেও তা-ই। বিএনপি নেত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে জামায়াত নেতারা কীভাবে তাদের ’৭১-এর ভূমিকার পক্ষে সাফাই গাইবেন? অথবা এরশাদ সাহেব বা জাফর সাহেব কীভাবে তাদের ’৮০-র দশকের ‘যশগাঁথা’(!) বর্ণনা করবেন?
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ১৪ দলীয় জোটের ক্ষেত্রেও কম-বেশি একই চিত্র। কট্টর সমাজতন্ত্রী, মার্কসবাদী, পুঁজিবাদবিরোধী, যারা এতকাল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে রণ-হুংকার দিয়ে রাজপথ কাঁপিয়েছেন, ‘ভারতীয় সম্প্রসারণবাদে’র বিরুদ্ধে জেহাদের ডাক দিয়েছেন, তারা এখন জোটের মঞ্চে দাঁড়িয়ে একেবারে সুবোধ বালক। পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ- সব গরল গলাধঃকরণ করে দেবী-প্রসাদের জন্য তীর্থের কাক হয়েছেন। ‘অগ্নি-কন্যা’ ‘অগ্নিপুত্র’রা কেউ এমপি, কেউবা মন্ত্রী হয়ে ক্ষমতার মসনদের পেছনে আসন গেড়ে নিঃশব্দে জাবর কাটছেন, বিপ্লবের লাল ঝাণ্ডা পুঁজিবাদের পদতলে সমর্পণ করে।
এখন আর নারী নেতৃত্ব হারাম নয়!
অন্যদিকে দেখুন, ‘নারী নেতৃত্ব হারাম’ ফতোয়া প্রদানকারী ‘ওলামা-মাশায়েখ’গণ একদিকে শরিয়তি শাসনের জন্য দেশ কাঁপিয়ে জেহাদি তকবির তুলছেন, পরক্ষণেই ক্ষমতার হাতছানিতে এ জোট ও জোটের নারী নেতৃত্বেরই পদতলে বসার জন্য দড়ি-ছেঁড়া রাসভের মতো ছুটছেন। ফলে সাচ্চা ইসলামী আন্দোলন শিকেয় উঠছে। ক্ষমতার ছিটেফোঁটা ভাগ পাওয়ার লড়াই সেই আন্দোলনের পালের বাতাস কেড়ে নিয়েছে।
৯০ শতাংশ মুসলমানের এ দেশে শান্তি, সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় যথার্থ ইসলামী চেতনার বিকাশ আমাদের জাতীয় জীবনকে অনেক অনাচার ও অনাসৃষ্টি থেকে মুক্ত রাখতে পারত। নিষ্ঠাবান মুসলমানদের জঙ্গিবাদের মোহগ্রস্ততা থেকে মুক্ত রেখে গঠনমূলক ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে শরিক করার সুযোগ রয়েছে। সেদিকে দৃষ্টি দিলে আমাদের কাজে ওলামা-মাশায়েখগণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে মূল্যবান ভূমিকা রাখতে পারতেন। ইসলামী আন্দোলনকারীরা দুই জোটের শেকলে বাঁধা পড়ায় সে সম্ভাবনা বিনষ্ট হয়ে গেছে।
‘অগ্নিকন্যা’, ‘অগ্নিপুত্র’রাও বাঁধা পড়েছেন
অপরদিকে আজকের এই দিনে যখন শোষণ-বঞ্চনা ও অসম ধন-বণ্টনে সাধারণ মানুষ অসহায়ত্বের শেষ প্রান্তে, তখন তার বিরুদ্ধে প্রগতিশীল গণমুখী চেতনা নিয়ে আদর্শিক লড়াই অব্যাহত রাখা পাকিস্তানি আমলের চেয়েও অনেক বেশি জরুরি ছিল। অতীতে ছোট-বড় অনেক বামপন্থী দল সে ধরনের লক্ষ্য ও বক্তব্য নিয়ে মাঠে ছিল। দুর্ভাগ্যবশত প্রায় সব কয়টি দলই এখন প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ জোটের জোয়ালে বাঁধা পড়েছে। তাদের নেতারা রাজনৈতিক-আদর্শিক লড়াই-সংগ্রাম থেকে নিরাপদ দূরত্বে বসে হৃষ্টচিত্তে জাবর কাটছেন। এখন তাদের নিরন্তন লড়াই নিজেদের মধ্যেই। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট হাতিয়ে নেয়ার জন্য। ফলে মাঠে-ময়দানে সর্বহারা ও শোষিত জনগণের পক্ষে কথা বলার লোকের একান্তই অভাব।
সব দলই এ জোট ও জোটে নাম লিখিয়ে ক্ষমতার নাম-কীর্তনে মত্ত থাকলে গণমুখী রাজনীতি বলতে আর কিছু থাকে না। সেই দুঃখজনক পরিস্থিতিতে দেশ ও জাতির ভাগ্য নিয়ন্তা হয়ে পড়ে ক্ষমতার শীর্ষদেশে অবস্থানকারী আত্মরতি-মগ্ন ক্ষুদ্র এলিট শ্রেণী। যে এলিট শ্রেণী আবার বিশ্ব-সাম্রাজ্যবাদের (বা পুঁজিতন্ত্রের) লেজ ধরে ঝুলছে। আমাদের দেশে আজ তেমনি একটি এলিট শ্রেণী দেশের রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, সমাজ-সংগঠন- সব কিছুর নিয়ন্তা বনে গেছে। বিদেশী কর্পোরেট পুঁজির লোকাল এজেন্টদের লাভ-ক্ষতি হিসাব হয় কমিশনের পরিমাপে। আমাদের জাতীয় রাজনীতি কি সেই কমিশনের যাঁতাকলে বাঁধা পড়ে গেছে?
স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেকটি বিভাজন : স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ। আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য আপনি মানুষ খুন করছেন। আপনি পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর পক্ষে ছিলেন। আপনি পাকিস্তানে চলে যান। সরকার পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত বলা হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে যারা বাধা দিয়েছে তারা ‘পাকিস্তানপন্থী’। বলা হচ্ছে, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, তিনি ‘পাকিস্তানের চর’ ছিলেন। ইত্যাদি।
অপরদিকে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে ঢালাওভাবে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীদের সবাইকে ‘ভারতের দালাল’ বলা হচ্ছে। সাতক্ষীরায় যৌথ বাহিনীর অভিযান নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে রাষ্ট্রদ্রোহী এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বিএনপি নেত্রীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বলেছেন। তাহলে ব্যাপারটা কী দাঁড়াল? তবে কি বাংলাদেশের মানুষ এখন দুই ভাগে বিভক্ত? যার এক ভাগ ‘পাকিস্তানপন্থী’, আরেক ভাগ ‘ভারতপন্থী’?
সত্তর সালে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল ৭২ শতাংশ মানুষ। এবারের নির্বাচনে সরকারি হিসাব অনুযায়ী মোট ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪২ শতাংশ, দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক ও মিডিয়ার হিসাবে ২০ শতাংশের কম। তবে কি মুক্তিযুদ্ধের সব কৃতিত্বের একচ্ছত্র দাবিদারদের জনসমর্থন এ ৪৩ বছরে ৫০ শতাংশ কমে গেছে?
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাজিয়া দৃষ্টে মনে হতে পারে, এ দেশ পাকিস্তানপন্থী আর ভারতপন্থীতে ভরে আছে, তার বাইরে আর কেউ নেই। এটা মোটেই গৌরবের বিষয় হতে পারে না।
তাহলে ‘বাংলাদেশপন্থী’ থাকল কোথায়?
এ বক্তব্য মেনে নেয়া যায় না। এটা ঠিক যে, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে ঠিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না- এমন লোক আজকের দিনেও দু’-চারজন খুঁজে পাওয়া যাবে। তবে এদের মধ্যে স্পষ্টতই দুই শ্রেণীর লোক আছেন। প্রথমত, যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহায়তা করেছেন, কিংবা যারা মনে করেন, পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ বানানো ঠিক কাজ হয়নি। তারা এখনও তাদের একাত্তরের অবস্থান আঁকড়ে ধরে আছেন। লন্ডনে বসবাসকারী একজন প্রবীণ বাংলাদেশী ব্যারিস্টার সাহেবকে পেয়েছিলাম যিনি এখনও ‘পূর্ব পাকিস্তান’ লেখেন, বাংলাদেশ লেখেন না।
পাশাপাশি আরেক শ্রেণীর কিছু মানুষও খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা মনে করেন ’৪৭ সালে ‘দ্বিজাতিতত্ত্বে’র ধুয়া তুলে সাম্প্রদায়িক শক্তি ‘দেশবিভাগ’ করেছে (দেশ বিভাগ? কোন দেশ? সমগ্র উপমহাদেশ কি কখনও এক ‘দেশ’ ছিল ?)। শেষ পর্যায়ে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ভারত ভাঙার প্রধান কারিগর হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ‘ভারতের কমিউনিস্ট পার্র্টি’ আওয়াজ তুলেছিল- ‘ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়, লাখো ইনসান ভুখা হ্যায়’। (জামায়াতে ইসলামীও সেদিন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিল)। আজ যদি ‘টাইম মেশিনে’ চেপে ৬৩ বছর পেছনে গিয়ে মতামত দেয়ার সুযোগ পাওয়া যেত, তাহলে আমিও হয়তো সেই মতের পক্ষে থাকতাম। তবে ভিন্ন যুক্তিতে। এখানে সেই আলোচনা নয়।
কিন্তু সময় ও ইতিহাসের ঘটনাপ্রবাহ আমাদের আজ যেখানে নিয়ে এসেছে, সেখান থেকে পেছনে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের পরিবর্তিত বাস্তবতা মেনে নিয়ে সামনের দিকেই যেতে হবে। ‘ইতিহাস লেখক’দের ভ্রান্তি বা কারসাজিতে যে ‘পোকায় খাওয়া’ ভূখণ্ডটি আমরা পেয়েছি, তাকে নিয়েই সন্তুষ্ট থেকে তার সার্বভৌমত্বের সুরক্ষার জন্য লড়তে হবে। নইলে যে ‘নরেন্দ্র মোদির গুজরাটে’ বসবাসের দুর্ভোগ পোহানোর আশংকা থাকে! এ পরিবর্তিত বাস্তবতা অনুধাবন না করে আজকের দিনেও কারও কারও মনে ’৪৭ সালের পূর্বেকার চিন্তাভাবনা উঁকি-ঝুঁকি দিতে পারে। সেটা আমাদের দুর্ভাগ্য।
আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশীর বাংলাদেশ নীতি নিয়ে সে দেশেও এখন অনেকে সমালোচনা করছেন। তাদের অনেকে বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছা ও আকাক্সক্ষাকে মূল্য দেয়ার কথা বলছেন। তারা তাদের সরকারকে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে দলবিশেষের সঙ্গে সম্পর্কের চেয়ে সামগ্রিকভাবে জনগণের মনোভাব আমলে নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। দেরিতে যদিও।
দু’দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ তা-ই চায়। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে দু’পক্ষেরই চাওয়া-পাওয়া থাকবে। এক পক্ষকে কেবলই দিয়ে যেতে হবে এবং অপর পক্ষ কিছুই দিতে চাইবে না, সে ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক আশা করা বৃথা। তবে এ দেশে এমন ব্যক্তিও আছেন যারা বলতে পারেন, বাংলাদেশের রাস্তা ব্যবহার করার জন্য বন্ধু রাষ্ট্রের কাছে টোল দাবি করা বন্ধুত্বের খেলাফ!
বোঝা যায় না তারা কোন পক্ষের খেলোয়াড়। তবে ‘বাংলাদেশপন্থী’দের জন্য সেটা দুশ্চিন্তার বিষয় নয়। কারণ নিশ্চিতরূপেই বলা যায়, এ শ্রেণীর খেলোয়াড়দের পায়ের তলায় এ দেশে কোনো মাটি নেই। তাদের পায়ের তলার মাটি অন্যত্রই খুঁজতে হবে।
শেষ কথা
স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ বিতর্কে ক্ষমতাসীন পক্ষ যেভাবে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিরোধী পক্ষকে ঢালাওভাবে পাকিস্তানপন্থী আখ্যা দিয়ে চলেছে, তা আমাদের জাতীয় পরিচয় এবং সামগ্রিকভাবে দেশের জনগণের দেশপ্রেমের ওপর চরম কটাক্ষ। একইভাবে বিরোধী পক্ষও যেভাবে তাদের প্রতিপক্ষকে ঢালাওভাবে ‘বিদেশী ক্রীড়নক’ আখ্যায়িত করে, সেটাও আমাদের জাতীয় পরিচয়কে কালিমালিপ্ত করে। তাহলে তো ঠগ্ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে।
দেশের সিংহভাগ মানুষ এই দেশ বা ওই দেশের সমর্থক বা ‘চর’ হলে সে দেশের জাতীয় মর্যাদা কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সমালোচনার অধিকার থাকবে। কিন্তু তার সীমা কোথায় তা জানতে হবে। সেই সীমা অতিক্রম করার অধিকার সরকারপক্ষ ও বিরোধী পক্ষ কারোই নেই।
ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশী : রাজনীতিক, ভূ-রাজনীতি ও উন্নয়ন গবেষক
[email protected]
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন