লিখেছেন: © রফিক বিন আলী

"কোটা ইস্যু" হাসিনা এবং "র" এর পরিকল্পিত ছিল। আবারো বলছি, পরিকল্পিত ছিল।

কিন্তু পরিস্থিতি এই পর্যায়ে চলে আসবে কিংবা নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাবে এটা ভাবতে পারে নাই। 

কেন বললাম?? 

মনে করে দেখুন তো, "কোটা ইস্যু" মাঠে আসার আগে দেশে বেশ কয়েকদিন ধরে কি চর্চা হচ্ছিল? 

ভারতীয় ট্রেন ইস্যু। 

কিন্তু সবাই তখনো জানতোনা মংলা বন্দর হ্যান্ডেলের দায়িত্ব কয়েকদিনের মধ্যেই ভারতের হাতে তুলে দিতে যাচ্ছে হাসিনার অবৈধ সরকার। 

ট্রেন ইস্যুতে এমনিতেই জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল, তার উপর মংলা বন্দরের কথা জানতে পারলে আরো ক্ষুদ্ধ হবে। 

তাই এই দুটো ইস্যুকে জনগণের চর্চা থেকে আড়াল করতেই আওয়ামী কোর্টের মাধ্যমে কোটা পুনর্বহাল করার রায় দেয়া হয়। 

ওদের প্ল্যান ছিল, ছাত্ররা কয়েকদিন হৈচৈ করবে, সোশ্যাল মিডিয়া এবং সরকারের পালিত টিভি চ্যানেল  সরগরম থাকবে সেই ইস্যুতে, আর এই সুযোগে তারাও সেই ডামাডোলের মধ্যে ভারতের সাথে কাজ সেরে নিবে, অতঃপর ছাত্র আন্দোলন দমিয়ে দিবে তাদের প্ল্যান মোতাবেক। 

আন্দোলনকারী ছাত্রদেরকে রাজাকারের নাতিপুতি বলে আখ্যায়িত করার কাজটিও হাসিনা পরিকল্পিতভাবেই করেছিল। যাতে ছাত্ররা আরো উত্তেজিত হয়, এবং তার গোপন উদ্দেশ্য সফল হয়। 

কিন্তু বছরের পর বছর বুকের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের আগুন জ্বলতে থাকা ভুক্তভোগী বিক্ষুদ্ধ জনতা ছাত্রদের সাথে যোগ দিবে এবং ক্ষোভের এটমিক বিস্ফোরণ ঘটে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাবে, এটি ক্ষমতার দম্ভে সরকারের গণনায় ছিলোনা। বিশেষ করে টানা তিনবার প্রহসনের নির্বাচন করেও পার পেয়ে যাওয়ায় সংগত কারনেই তাদের আত্মবিশ্বাস ছিল অনেক হাই, অহংকার পৌঁছে গিয়েছে অন্যরকম মাত্রায়। 

এটাই শতভাগ সত্য ???? "কোটা সংস্কার" এর ব্যানারে শুরু হওয়া আন্দোলনে যেদিন বিক্ষুদ্ধ জনতা যোগ দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকারের ভুল পদক্ষেপের কারণে, সেদিন থেকে এটি হয়ে উঠেছে দেশের আমূল সংস্কারের আন্দোলন, ফ্যাসিবাদের জগদ্বল পাথর জাতির বুক থেকে সরানোর আন্দোলন। সেদিন থেকেই আওয়ামী ছক উলট-পালট হয়ে যায়।

এখন তারা পাগলের মত একেকজন একেকভাবে বকতেছে। হাতে আর কোনো কার্ড নাই খেলার, তাই পুরোনো অচল কার্ডগুলো দিয়ে খেলার চেষ্টা করতেছে, যেমন ডুবন্ত মানুষ খড়কুটা ধরেও বাঁচতে চায়। তাই তারা এখন "জামায়াত শিবির" নিষিদ্ধ করার অচল কার্ড দিয়ে খেলে বাঁচার উপায় খুঁজছে।

কিন্তু জনগণ তাদের বিরুদ্ধে এখন অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় ঐক্যবদ্ধ এবং এতোটাই  ক্ষুব্ধ যে প্রয়োজনে সবাই নিজেদেরকে "জামায়াত শিবির" ঘোষণা দিতেও রাজি, তবুও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাজপথ ছাড়বেনা। 

বিশ্ব বিখ্যাত আলেমে দ্বীন মরহুম মাওলানা মওদুদী (রহ:) একদা বলেছিলেন: "স্বৈরাচার তার পতনের সমস্ত ছিদ্র বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তার অজান্তেই একটা ছিদ্র থেকেই যায়;

আর ঐ ছিদ্র দিয়েই তার পতন হয়।"