শাকিব মুস্তাভী
ফেসবুকে দুর্নীতিবাজ ধরা হচ্ছে হাটে পকেটমার ধরার আধুনিক সংস্করণ! দুই ক্ষেত্রেই পাবলিকের উৎসাহ বেশি, জটলাও বেশি। তাছাড়া গণপিটুনি দিতে ও দেখতে কার না ভালো লাগে? কিন্তু মুশকিল হলো পিটুনি যখন নিজের পিঠে পড়ে, তখন আর ভালো লাগে না। ফেসবুকে দুর্নীতিবাজ ধরার প্যাটার্নটা একবার খেয়াল করেন। শুরুতে কারো নামে কিছু একটা ভাইরাল হয়। যেমন, ওমুকের নামে একশ বিঘা জমি পাওয়া গেছে। ওমুক এত টাকা দিয়ে এইটা কিনেছে। ওমুক ও তমুকের রোমান্টিক ফোনালাপ। এগুলো কিন্তু এক্টিভিস্টরা ভাইরাল করে না। ভাইরাল হওয়ার পরে এক্টিভিস্টরা পাতা লাগায়। তাই খুব সম্ভাবনা আছে, উপর মহল থেকে যাদেরকে খেয়ে দেওয়ার ইরাদা করা হয়েছে তাদেরকেই শুধু ভাইরাল করা হয়। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে টাকলু মুরাদের সাথে মাহিয়া মাহির কথপোকথন ভাইরাল হওয়ার আগেই মাহি উমরাহ করতে সৌদি আরব চলে গিয়েছিল। কিংবা বেনজীর ফেঁসে যাওয়ার আগে একটি পত্রিকায় একের পর এক তার বিরুদ্ধে রিপোর্ট ছাপা হচ্ছিল।
ফেসবুকে দুর্নীতিবাজ ধরতে আমি নিষেধ করতেছি না। তবে এর সমূহ বিপদগুলোও মাথায় রাখা দরকার। এখন সমূহ বিপদের কথা বলি। ফেসবুকে কাউকে একবার ভাইরাল করে দিলেই পাবলিক ক্রুদ্ধ হয়। তারপর ত্রুদ্ধ পাবলিককে শান্ত করার জন্য বলির পাঁঠাটিকে যেকোনো ধারায় ইচ্ছামত খেয়ে দেওয়া যায়। তাই খুব সম্ভাবনা আছে একসময় নিরাপরাধ মানুষও এই প্রসেসে ফেঁসে যাওয়ার। কারণ কোনো মানুষকে একবার নেতিবাচক কারণে ভাইরাল করা গেলে তাকে যা খুশি তাই করার লাইসেন্স পাওয়া যায়। তাই কাউকে শায়েস্তা করতে চাইলে তার নামে নেতিবাচক কিছু একটা ভাইরাল করে দিতে পারলেই কেল্লাফতে। বাকিটা পাবলিক বুঝবে। পাবলিকের ক্যালানি শেষ হওয়ার পর আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না বলে একদল লোক বলির পাঁঠাটিকে ধরে নিয়ে গিয়ে সুবিধামত আইনের ধারায় সাঁটিয়ে দেবে। বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় সিরিয়াস আলাপ করা অর্থহীন। সুতরাং জাস্টিস-মব জাস্টিস এইসব ভারী ভারী আলাপ তুলে পাবলিকের সাময়িক আনন্দ মাটি করতে চাচ্ছি না। দেশে বিনোদনের এমনি অনেক অভাব। দুর্নীতিবাজ ধরার এই প্রসেসের বিরোধিতা করলে অনেকে গোস্বা করবেন। তারপরও এসব লেখার কারণ হল চাঁদের যে একটা অন্ধকার পৃষ্ঠও আছে, সেটার ব্যাপারে অবগত করা। ফেসবুক থেকে
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন