আলফাজ আনাম
কোকা-কোলার বিজ্ঞাপনের আড়ালে রয়েছে অপরিসীম ঘৃনা। বাংলাদেশের মিডিয়া ও সংস্কৃতিজীবীরা সব সময় মনে করে সাধারন মানুষ কিছুই বোঝেনা। তারা শুধু গুজব আর হুজুরদের কথায় প্রভাবিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। বিজ্ঞাপন চিত্রে. এ ধারনা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, কোকা কোলা মানুষ বর্জন করেছে , ফেসবুকে প্রচারনার কারনে। অথচ ইসরাইলকে সুবিধা দেয় এমন পন্যের তালিকায় কোকাকোলা বহু আগে থেকে আছে। বিডিএসের মুভমেন্টে এই পন্যর নাম আছে। কিন্তু ওনারা মনে করেন মানুষ কিছুই জানে না।
সত্যি কথা হচ্ছে বাংলাদেশের এই সংস্কৃতিজীবীরা সাধারন মানুষের কাছ থেকে যেমন বিচ্ছিন্ন, তেমনি আর্ন্তজাতিক দুনিয়ার খবর এরা নিজেদের মতো করে ধারনা করে নেয়। এদের নিজেদের কোনো চিন্তা ভাবনা নাই। যেখান থেকে টাকা - পয়সা মিলবে এবং ক্ষমতাসীনদের আকাঙ্খার দিকে তাকিয়ে এরা সিদ্ধান্ত নেয়। সত্যি কথা হচ্ছে দুনিয়ার ঘটনা প্রবাহ সর্ম্পকে এদের জানাশোনা যেমন কম তেমনি একেপেশে। তবে যখন এরা চিপায় পড়ে তখন আবার মানবতার পক্ষে, অন্যায় অত্যাচারের পক্ষে সরব বলে নিজেদের দাবি করে। এদের দৃষ্টিতে থাকে দুটি জিনিস নগদ টাকা এবং ক্ষমতার কেন্দ্র কোন দিকে।
একটি উদহারন দেই, গাজা যুদ্ধ শুরু হয় হওয়ার পর থেকে এদেশের ইনডিয়াপন্থী মিডিয়া হামাসকে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হিসাবে তুলে ধরছে। অথচ এসব মিডিয়া বছরের পর হামাসকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গী সংগঠন হিসাবে নিউজ করেছে।
হামাসের প্রতিরোধ যুদ্ধকে সমর্থন করে কিংবা তাদের সংগ্রামকে সমর্থন করে এখন এই পরিচয় দিচ্ছে মোটেও তা নয় । এর কারন দুটো- ইসরাইলের গনহত্যার প্রধান পৃষ্টপোষক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরকারের দূরত্ব আছে। এ কারনে তারা এখন হামাসকে স্বাধীনতাকামী বলছে। তারা মনে করে, এর মাধ্যমে সরকারের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে একটা কোপ দিতে পারছে। দ্বিতীয়ত, হামাসের পক্ষে থাকলে ভিউ বেশি হয়। মানুষ আগ্রহ নিয়ে ভিডিও দেখে এবং খবর পড়ে। আয় বাড়ে।
কিন্তু আপনি এসব মিডিয়ায় এই খবর পাবেন না, গাজায় গনহত্যায় ইনডিয়ার গোলাবারুদ , ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। নুসইরাত রিফিউজি ক্যাম্পে মেইড ইন ইনডিয়া লেখা বোমার অংশ বিশেষ পাওয়া গেছে। ফিলিস্তিনি মিডিয়া আউটলেটগুলো টু্ইটারে এসব বোমার ভিডিও প্রকাশ করেছে। ইনডিয়া থেকে যাওয়া গোলাবারুদ বহনকারী জাহাজ স্পেন আটকে দিয়েছিলো। এসব খবর আপনি এই সংস্কৃতিজীবীদের মুখে ও বাংলাদেশের মিডিয়ায় পাবেন না।
কিন্তু এ দেশের বহু মানুষ এসব খবর জানে। কিন্তু এদের জিজ্ঞাসা করবেন, ওরা আকাশ থেকে পড়বে। বলবে না না ওসব প্রচারনা। অর্থের জন্য সরকারের নীতির যদি পরিবর্তনের সামান্য ইশারা ইঙ্গিত যদি এরা পায় কোকা কোলার বিজ্ঞাপন কেন ইসরাইলের হয়ে গনহত্যার পক্ষে সাফাই গেয়ে বিজ্ঞাপন করতেও এরা দ্বিধা করবে না। তখন এরা যুক্তি দেবে আমরা হলাম পেশাদার। অভিনয় করা কিংবা সাংবাদিকতা করা আমাদের কাজ। আমরা তো যুদ্ধ করবো না। সবার কথা আমরা তুলে ধরবো। তখন ইসরাইল কিভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে সে বয়ান এরা নেতানিয়াহুর চেয়ে ভালো দিতে পারবে। কারন এরা আত্না বিক্রি করা মানুষ। কোকা কোলা বর্জন করা সাধারন মানুষের আত্না এখনও বিক্রি হয়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন