কদরুদ্দীন শিশির
·
একটি সংবাদ যেভাবে প্রপাগান্ডা হয়ে যেতে পারে---
গুমের শিকার বিএনপি নেতার বাসায় তার স্বজনের সাথে সাক্ষাত করতে গেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। ‘মায়ের ডাক‘ নামক গুমবিরোধী একটি সংগঠনের সাথে জড়িত ওই নেতার বোন। সংগঠনটি কয়েক বছর ধরে গুমের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করছে।
রাষ্ট্রদূতের এটা ছিল পূর্বনির্ধারিত মিটিং।
পিটার বিএনপি নেতার বাসায় যাওয়ার পর কারো মাধ্যমে খবর পেয়ে সেখানে হুট করে জড়ো হন সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিষ্ঠিত ‘মায়ের কান্না‘ নামক আরেক সংগঠনের কর্মীরা। তারা নিজেদেরকে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাসনকালে সময় গুম হওয়া কিছু ব্যক্তির স্বজন বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন।
রাষ্ট্রদূত বিএনপি নেতার বাসা থেকে বের হওয়ার সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে তার সাথে কথা বলতে এবং স্বারকলিপি দিতে চেষ্টা করেন মায়ের কান্নার সদস্যরা।
কিন্তু রাষ্ট্রদূত কোন কথা না বলে নীরবে গাড়িতে ওঠে চলে যান।
একজন কূটনীতিকের জন্য এটা খুবই স্বাভাবিক আচরণ। তিনি জেলা প্রশাসকদের মতো রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্লোগান দেয়া একটি ক্রাউডের কাছ থেকে স্বারকলিপি গ্রহণ করবেন না।
হয়তো পরে মায়ের কান্না‘র সাথেও সাক্ষত করতে পারেন (নাও করতে পারেন)। কিন্তু সেইটা তার কূটনৈতিক আচার আচরণের সীমার মধ্যে থেকেই করতে হবে। স্থান, সময়, অংশগ্রহণকারী ইত্যাদি আগে থেকে নির্ধারণ করে পরে হয়তো তিনি ডেকে নিয়ে বা গিয়ে সাক্ষাত করবেন।
কিন্তু কোন এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া, স্থান কাল পাত্র সম্পর্কে আগে থেকে অবগত হওয়া ছাড়া একজন কূটনীতিক ভিন দেশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে জনতার স্বারকলিপি নেবেন না, নেয়ার এখতিয়ার তার থাকার কথা না।
এই বিষয়টি একটি সংবাদমাধ্যমের না জানার কথা না।
কিন্তু এখানে শিরোনাম দেখুন টিভি চ্যানেলটির- ‘‘মায়ের ডাকে সাড়া দিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত; কান্নায় গলেনি মন'' বলে অভিযোগ করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে। পুরো প্রতিবেদনের ভাষাও তেমন অভিযোগমূলক। ‘‘একপক্ষে কথা শুনলেও শুনলেন না আরেকপক্ষের...‘‘।
কেন তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে মায়ের কান্নার সদস্যদের কথা শুনলেন না, বা স্বারকলিপি নিলেন না!
এছাড়া প্রতিবেদনজুড়ে হাইলাইট করা হয়েছে ৪৫ বছর আগের ঘটনা নিয়ে স্বজনের বক্তব্য। কিন্তু ২০১৩ সালে গুম হওয়া বিএনপি নেতার স্বজনের কোন বক্তব্য নেই তাতে! অথবা বিগত কয়েক বছরের গুম বিষয়ক কোন আলাপ নেই প্রতিবেদনে।
এভাবে রাষ্ট্রদূতের ‘পক্ষপাতিত্ত্ব‘ ধরতে গিয়ে প্রতিবেদনটাই হয়ে গেছে একপাক্ষিক।
এবং এভাবে একটা ‘সংবাদ‘-এ সত্য তথ্য দিয়েও ‘প্রপাগান্ডায়‘ পরিণত করা যায় শুধু ঘটনাকে দেখানোর ‘ফ্রেইম‘কে বদলে ফেললে।
ফেসবুক থেকে=AZWFwZ_WuiRf9aD3y35YVXiw5VghEo7q9wSiiBlD7mY8gG8mEw0BYyHfyeXNRLVVHdnqmiKlLdHMKHuVQkoUXcy0dj1-SxILqbgSk1YDsB1XAehKuZs3l9dvzMat6VLHVuZqGzblLROfbNxQMUep0YxXLLa-fIHK4oDqdOTN_vGQNPgO6-tjTuxF7j1Z6rs7fvo&__tn__=-UC%2CP-R]click here
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন