শওকত আলী সাগর
শেষ বিচারে ’ব্র্যান্ডিং’টা মিডিয়ার জন্য গুরুত্বপুর্ণ। এটি উপকারীএবং ক্ষতিকর, দুইই। মিডিয়া নিজেদের ‘এডভোকেসি নেটওয়ার্ক’ হিসেবে ব্র্রান্ডিং করতে পারে, আবার হয়ে উঠতে পারে ‘ about reporting, truth and facts.
মিডিয়া যদি ‘এডভোকেসি নেটওয়ার্ক’এর ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়, তা হলে সমাজ কলুষিত হয়, সভ্যতা ঝুঁকির মুখে পরে। - এইসব কথাবার্তা উচ্চারিত হচ্ছে সিএনএন এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের আলাপচারিতায়। সিএনএন এর নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মনে করছেন- নিউজ আউটলেট হিসেবে সিএনএন তার অবস্থান খুইয়েছে, নিরপেক্ষতা -গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।ফলে তারা মিডিয়া আউটলেটটিকে মার্কিনীদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে নতুনভাবে ব্র্যান্ডিং করতে চাচ্ছেন। মার্কিনীদের তারা বলতে চাচ্ছেন- ’ট্রাস্ট আজ, উই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’।
ফক্স নিউজ আর সি এনএন এর মধ্যকার প্রতিযোগিতা এবং বিরোধীতা সবারই জানা। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সিএনএন এর অবস্থানও গোপন কিচু নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প তো সিএনএনকে ‘শত্রু’ হিসেবেই ঘোষনা দিয়েছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, রিপাবলিকান পার্টির প্রবল বিরোধীতায় সিএনএন এর ভূমিকা, মিডিয়া হিসেবে কতোটা সঠিক ছিলো- সেই পর্যালোচনা এখন তাদের করতে হচ্ছে। কেননা, সিএনএন নিজেদের মতো করে সমীক্ষা করে দেখেছে- ট্রাম্প সমর্থক, রিপাবলিকান সমর্থকদের কাছে সিএনএন এর গ্রহণযোগ্যতা শূণ্যের কোটায়।আর এটি কেবল দর্শক বাড়া কমায়ই ভূমিকা রাখছে না, বিজ্ঞাপনদাতাদেরও সিএনএন এর ব্যাপারে ভিন্নভাবে ভাবাচ্ছে। আর্জাতিক পরিমন্ডলে নিউজ আউটলেট হিসেবে সিএনএন এর আভিজাত্যকেও ক্ষন্ন করেছে। সেই কারনেই সিএনএন তার ব্র্যান্ডিং বদলানোর চেষ্টা করছে।
’রিলায়েবল সোর্স’ নামে ৩০ বছরের প্রোগ্রামটি বন্ধ করে সিএনএন এর মুল ব্যক্তি ব্রায়ান স্টেলারকে বিদায় করে দিয়েছে। অনেকটা নিরবেই ‘ফক্স নিউজের’ সমালোচনা বন্ধ হয়ে গেছে সিএনএন এ। ফক্স নিউজের কাউন্টার দেয়া নিয়ে তাদের এখন আর মাথা ব্যথা নেই। সিএনএন এর চেয়ারম্যান ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান নেতার সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা শুরু করেছেন। রিপাবলিকান নেতাদের ডেকে এনে তোপের মুখে ফেলা নয়, ’শোভন’ এবং গ্রহণযোগ্যভাবে তাদের সিএনএন এ উপস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন তাদের নীতিনির্ধারকরা।
রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব স্বাধীন এবং আত্মসম্মান বোধসম্পন্ন মিডিয়াকে ক্ষতিগ্রস্থ করে- সিএনএন এর এই উপলব্দি হয়েছে কী না জানি না, তবে নিউজ আউটলেটের জন্য জনগনের তথা পাঠকদের আস্থা যে জরুরী সেটা তারা বুঝতে পেরেছে। আর সেজন্যই সিএনএন এখন সত্য, তথ্যনির্ভর খবরের উৎস হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন