পিনাকী ভট্টাচার্য
সুনামগঞ্জে নাকি হেফাজত নেতা মামুনুল হকের অনুসারীরা হিন্দুদের উপরে হামলা চালিয়েছে। "নাকি" শব্দটা ইচ্ছে করেই ব্যবহার করেছি।
আপনি প্রধান দৈনিকে খবরটা দেখলে জানবেন যে হামলাটা হবে সেটা সবাই জানতো এমনকি যাদের উপরে হামলা হয়েছে তারাও জানতো। তাই তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে সরে গিয়েছিলো। এই তথ্যটা গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে এটা পুলিশ জানতো, সরকার জানতো, সরকারি দলের নেতা কর্মীরা জানতো এমনকি যেই ছেলেটার স্ট্যাটাসের কারণে এই হামলার ঘটনা সেও সরকারি দলের লোক। তাহলে পুলিশ সরকার, সরকারি দলের লোক এই ঘটনা ঘটতে দিলো কেন?
এই ঘটনা ঘটতে দেয়া হয়েছে, এবং ঘটনা যে সংগঠিত করেছে তার পরনে একটা মুজিব কোট ও দেখা যাচ্ছে। গোটা দেশ আওয়ামী লীগের দখলে। একটা মাছিকেও সমাবেশ করতে দেয়া হয়না এই হামলার সমস্ত প্রস্তুতি নির্বিঘ্নে করতে দেয়া হলো কেন?
উত্তর একটাই, এটা খুবই পরিকল্পনা করে ঘটানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে এই ঘটনাগুলো ঘটতেই থাকবে। এটা হাসিনা সরকারের তরফ থেকে মোদিকে দেয়া উপহার। মোদির দলের একটাই প্রচার পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে, তা হচ্ছে বাংলাদেশে হিন্দুরা নির্যাতিত। এই তথ্যকে প্রমাণ করার দায় বাংলাদেশের কাউকে নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে।
মোদির এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কিছু বদমায়েশ হিন্দু পোলা ফুট সোলজার হিসেবে মুসলমানদের উষ্কাবে, কিছু গর্দভ মুসলমানকে দিয়ে কিছু শয়তান মাফিয়া মুজিব কোট পরেই হামলা সংগঠিত করবে নিরীহ নিঃস্ব দুস্থ হিন্দুদের উপরে আর দায় চাপাবে সাধারণ মুসলমানদের উপরে। ফলে মোদির ভোট বাক্স উপচে উঠবে। কৃতজ্ঞতা হিসেবে মোদির আশীর্বাদে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ আরো দীর্ঘায়িত হবে।
ভারতের হিন্দুত্ববাদি দলের প্রত্যক্ষ সমর্থনে বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট শাসনে মানুষ অধিকারহারা হয়েছে। যেই ফ্যাসিস্ট শাসকের প্রত্যক্ষ সমর্থক বাংলাদেশের বেশীরভাগ শিক্ষিত হিন্দু। এই অধিকারহারা মানুষ শক্তিমান মোদির সামনে দাড়াতে না পারলেও তাদের সামনে "হিন্দু সম্প্রদায়কেই" মোদির হিন্দুত্ববাদের প্রতীক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে, দুর্বল হিন্দুর বিরুদ্ধে মারমুখী করে তোলাটা একটা সহজ কাজ। দুর্বল দরিদ্র হিন্দুরা মার খাইলে শিক্ষিত হিন্দু, বা মোদি বা হাসিনার কিছু যায় আসেনা। মোদি-হাসিনার গদি বাচলে শিক্ষিত হিন্দুর লাভ।
আর পলিটিকাল হইতে না পারলে হেফাজতের নাম এইভাবেই পচাইতে থাকবে ওরা একসাথে। কারে পলিটিক্স বলে, কারে রাষ্ট্র বলে, কারে থিওলজি বলে, রাষ্ট্র কেমনে গড়তে হয় তা না শিখলে হেফাজতের মাথায় এইভাবেই মোদি কাঠাল ভাইঙ্গা খাবে। পলিটিক্যাল না হইলে, নিজের মাথা ব্যবহার করতে দিয়ে কাঠালের খোচায় এইভাবেই রক্তাক্ত হওয়া ছাড়া হেফাজতের আর কোন লাভ আপাতত নাই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন