পিনাকী ভট্টাচার্য
পলাতক ভাইদের সাজা মউকুফ প্রসঙ্গে সেনা প্রধান আজিজ সাহেবের আজকের বক্তব্য সর্বতোভাবে অগ্রহণযোগ্য।
সেনাপ্রধানের ভাইদের মামলা একটা নয়। প্রত্যেকের নামে আলাদা আলাদা মামলা আছে। কোন কোন মামলায় তারা অবশ্য একসাথেই আসামী ছিলো।
জেনারেল আজিজ সেনা প্রধান হন ২০১৮ সালের ২৫ জুন। এর এক মাস আগে ছোট ভাই জোসেফের সাজা মউকুফ হয় ২০১৮ সালের ২৭ মে। তার নয় মাস পরে ২০১৯ সালে অন্য দুই ভাই হারিস আর আনিসের সাজা মউকুফ হয়। তারমানে জেনারেল আজিজ যখন সেনাপ্রধান তখন তার অন্য দুই ভাই পলাতক ও দণ্ডিত অপরাধী। জেনারেল আজিজ এটার কী ব্যখ্যা দেবেন?
পলাতক ও দণ্ডিত অপরাধীর সাজা মউফুফ হতে পারেনা। এবিষয়ে বাংলাদেশে হাইকোর্টের সুনির্দিস্ট নির্দেশনা আছে। হাইকোর্ট স্পস্টভাবেই বলেছে, আইনের চোখে পলাতক (Fugitive) অবস্থায় থেকে সাজা মওকুফের সুযোগ নেই। সরওয়ার কামাল বনাম রাষ্ট্র [৩২ বিএলডি ৫২৯=৬৪ ডিএলআর ৩২৯] এই মামলার রায়ে হাইকোর্ট তা স্পস্টভাবেই বলেছে। হাইকোর্টের রায় ডিফেক্টো বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে পরিনত হয়। আনিস আর হারিসের সাজা মউকুফ তাই বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের চোখেও অবৈধ, সেটা সেটা যেই মউকুফ করে থাকুক।
আইনমন্ত্রী বলেছে, সাজা মউকুফ হয়েছে কিনা তা সে জানেনা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছে পলাতক থাকা অবস্থায় সাজা মউকুফ করা যায়না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে এই সাজা মউকুফের ফাইল কে তৈরি করলো? এটাতো আইন মন্ত্রনালয় আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে তৈরি করবে।
হারিসের ভুয়া পরিচয়, মিথ্যা জাল পাসপোর্টে দেশে আসা যাওয়া এটার ব্যখ্যা কী আছে জেনারেল আজিজের কাছে? ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করা দেশের আইনে অপরাধ কিনা। সে যে যে দেশে এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে ট্রাভেল করেছে প্রত্যেকটা দেশে সে একটা করে অপরাধ করেছে কিনা?
জেনারেল আজিজ, আপনি আপনার পারিবারিক অপরাধের দায় সেনাবাহিনীর ইন্সটিটিউশনকে ব্যবহার করে উতরে যেতে চাইছেন কেন? সেনাবাহিনীর কী দায় পড়েছে আপনার ভাইদের কৃত অপরাধের কালি তাঁদের গায়ে লাগাবে?
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন