মিনার রশিদ
পাপ নাকি তার বাপকেও ছাড়ে না । আর পাপের সেই বাপের বাপ - অর্থাৎ দাদাকে ছাড়ার তো প্রশ্নই উঠে না । বিনা অপরাধে যারা এতগুলি মানুষের চোখের অশ্রু জড়িয়েছে , এতগুলি মায়ের বুক খালি করেছে , এতগুলি নারীকে বিধবা বানিয়েছে ,এতগুলি শিশুকে এতিম বানিয়েছে - মানবতার বিরুদ্ধে করা এতগুলি অপরাধের শাস্তি কি এই দুনিয়ায় কিছুই হবে না ?
এই পাপের ভাগীদার শুধু কয়েকজন খুনী এবং তাদের সমর্থকগণ নহেন - যারা এসব দেখেও কথা ও কাজের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে না - সেই পাপের ভাগীদার তারাও ।
ধর্মের কল বাতাসে নড়ে । এদেশবাসীর নিকট অনেকটা সেই ধর্মের কল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে আলজাজিরা ! এই আলজাজিরার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে এদেশের চিহ্নিত ‘আল-পাজি’রা । এই আল পাজিদের যুক্তি দেখে মেজাজ ঠিক রাখা কঠিন হয়ে পড়ে । এমতাবস্থায় এক ভদ্রলোকের করুণ কাহিনী মনে পড়ে গেল । ভদ্র লোক নিজের কাজের মেয়ে সহ তার স্ত্রীর কাছে হাতে নাতে ধরা খেয়ে যায় ! এরপরও এই পাজি লোকটির যুক্তির অভাব হয় না । স্ত্রীকে কাকুতি মিনতি করে বলে , বিশ্বাস করো হতভাগা মেয়েটি তোমার পুরণো শাড়ী পরেছিল বলেই এই ভুলটি করে ফেলেছি । স্ত্রী আর্ত চিৎকার করে বলো , আল্লাহর ওয়াস্তে তুমি থামো । ঐ মাগী আমার পুরণো শাড়ী নয় , তোমার মায়ের পুরণো শাড়ী পরেছিল !
আলজাজিরার প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে সরকারের বিবৃতি এখন জাতিসংঘকেও দৃশ্যপটে টেনে এনেছে ।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রঅত্যন্ত ভদ্র ও সাবলীল ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের বিবৃতিটি তাদের নজরে পড়েছে । হাঙ্গেরি ( আসলে ইসরাইল থেকে ) থেকে আঁড়িপাতা যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছিল জাতিসংঘের শান্তি মিশনের কাজের নিমিত্তে -এটি যে ডাহা মিথ্যে কথা ,তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মহাসচিবের এই মুখপাত্র । পাজিলোক বউয়ের পুরণো শাড়ী পড়ে থাকায় দৃষ্টিভ্রমের যে অজুহাত তুলেছিল - একই কিছিমের অজুহাত তুলেছে এই পাজি সরকার । দুনিয়ার সকল পাজিদের যুক্তি একই রকমের এবং তাতে উপরের কাহিনীর মত আরও জট পেকে গেছে । পাজি লোকের ঐ কাহিনীর মতই সারা পৃথিবীই এই রমরমা কাহিনীটি উপভোগ করছে । শান্তিরক্ষী বাহিনী থেকে বিলিয়ন ডলার আয় করার রাস্তাটিও হুমকির মুখে পড়ে গেছে ।
নব্বই দশকের হুইসেল ব্লোয়ার মতিউর রহমান রেন্টু থেকে হাল আমলের কর্ণেল ( অব: ) শহীদ উদ্দীন খাঁন
এবং আলজাজিরার বিশেষ আকর্ষণ সামি - কেউ এই রেজিমের পর / শত্রু ছিলেন না । অথচ আল্লাহ্ সঠিক সময়ে এদের বিবেক ও জবানগুলি খুলে দিয়েছেন । এদের কথাগুলি আজ এটম বোমা হয়ে ফ্যাসিবাদের বুকে বিঁধছে । ওদিকে কাদের মির্জাকে একটু বেতাল মনে হলেও মাঝে মাঝে ঠিকই ঝাঁকুনি লাগছে ! সামনে হয়তো এরকম আরো অনেক রেন্টু , অনেক কর্ণেল শহীদ এবং অনেক সামি বেরিয়ে আসবে বলে । কেউ আসবে বিবেকের তাড়নায় , কেউ আসবে সম্ভাব্য গণরোষের হাত থেকে নিজেকে ও নিজেদের পরিবারকে রক্ষা করতে !
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন