ড. তুমিলিক
এতদিন ধরে চলেছে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর নামে রাজনৈতিক নিধনের যতসব খেলা। কখনও বাস পুড়িঁয়ে। কখনও বোমা মেরে। কখনও বা জঙ্গি সাজিয়ে মানুষ মেরে। আর আজকে যোগ হলো। একজন এমপি তার এলাকার ওসিকে থানায় বোমা মেরে একজন পরিবেশ কর্মীকে ফাঁসানোর নির্দেশ প্রদান। ক্ষমতাসীন দলের এমপির এই ফোনালাপ ফাঁস হয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ঘুরছে।
এমপি সাহেব বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলার) যে পরিবেশকর্মীকে ফাঁসানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি কোন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নন। তিনি নিজ এলাকার পরিবেশ বিপন্নকারী ইটভাটা উচ্ছেদের আন্দোলন কর্মী৷ ২০১৮ সালের বেলার রীট মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে ইটভাটাটি উচ্ছেদও করে প্রশাসন৷ অথচ একজন সংসদ সদস্য দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে হেয় প্রতিপন্ন করে ‘হাইকোর্ট-ফাইকোর্ট’ বলার কি প্রবল ক্ষমতার অধিকার রাখতে পারেন? একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাকে থানায় বোমা মেরে একজন পরিবেশ কর্মীকে ফাঁসানোর জন্য নির্দেশ দেবার কি প্রচন্ড ক্ষমতা রাখতে পারেন?
ইতিপূর্বে দেশে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্নরকমের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় রাজনৈতিক নেতাসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা, জেল, হামলা, হয়রানী হয়েছে। এমনকি একাধিক রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলাও হয়েছে। উচ্চ আদালতকে অবমাননার অভিযোগে শাস্তি, জেল জরিমানা হয়েছে। এমনকি চাকরীও হারাতে হয়েছে। কিন্তু প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর নামে ক্ষমতাসীনদের নিজেদের এইসব অপরাধের কোনটারই বিচার হয়নি। এই যে আজকে যেভাবে পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পরিবেশকর্মীকে ফাঁসানোর নির্দেশ দেয়া হলো। ঠিক একইভাবে পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলার) নির্বাহী পরিচালকের স্বামীকে তুলে নিয়ে গুম করে রাখা হয়েছিল। অদ্যাবধি তারও কোন বিচার হয়নি! এতদিন ধরে তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর খেলা খেলেছে। এবার তাদের হাতে পরিবেশকর্মী, সমাজকর্মী ও দেশের সাধারন মানুষও আর নিরাপদ নয়। তারা পারলে নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে খোদ দেশকে ফাঁসিয়ে হলেও তাদের রাজনৈতিক নিধনের এই সর্বগ্রাসী খেলা খেলতে পারে!
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন