মিনর রশিদ

- ৯/১১ এ হামলার জন্যে কি আমরা তখনকার বুশ সরকারকে দায়ী করব ?

-লন্ডনে পাতাল রেলে হামলার জন্যে কি আমরা সেদেশের সরকারকে দায়ী করব ?

-দিল্লিতে সংসদ ভবনে জঙ্গী হামলার জন্যে কি আমরা তখনকার ভারত সরকারকে দায়ী করব ?

- বিডিআর বিদ্রোহের জন্যে কি আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী ?

-হলি আর্টিজেনে জঙ্গী হামলার জন্যে কি আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী ?

-এই সরকারের আমলে যেসব জঙ্গী হামলা হয়েছে সেসবের জন্যে কি বর্তমান আওয়ামী সরকার দায়ী ?

উপরের প্রশ্নগুলির উত্তরে যারা না বলবেন তারাই আবার বিএনপির আমলে সংঘটিত জঙ্গী হামলার দায় বিএনপি সরকারের উপর চাপিয়ে দেন !

২১ শে আগষ্ট শেখ হাসিনা ঘটনাচক্রে

নিহত হলে সরকারের পতন ঘটতে এক ঘন্টা সময়ও লাগতো না । এটা নিশ্চিত জেনেও তখনকার বিএনপি জোট সরকার কেন এই আত্মবিধ্বংসী কাজটি করতে যাবে ? শেখ হাসিনাকে হত্যা করলেও শেখ রেহানা , পুতুল , জয় এরা আরো অনেক বেশী পাবলিক সহানুভূতি নিয়ে ক্ষমতায় চলে আসতো । তাতে বিএনপিকে আরো শক্ত কম্পিটিশন

মোকাবেলা করতে হতো ।

কাজেই এই কাজটি বিএনপি কেন করতে যাবে ? ??

এই প্রশ্নগুলি অনেক বার করলেও এখনো কোনো জবাব পাই নি । জবাব না দিয়ে এই প্রশ্নগুলি করার কারণে আওয়ামীলীগ শুধু প্রশ্নকারীকে গালি দেয় ।

২১শে আগষ্ট নিয়ে আওয়ামী বয়ানকে প্রতিষ্ঠিত করতে ‘জজ মিয়া নাটক’টিকে ব্যবহার করা হয় । কিন্তু এদের প্রচারণার কৌশল দেখে মনে হয়

জজ মিয়া নাটকটিও সম্ভবত একটি মহা- নাটকের অংশ ছিল । অতি উৎসাহী পুলিশ অফিসার দিয়ে এই কাজটি করানো হয়েছে !

মাঝে মাঝে বেনেফিশিয়ারি দেখে কোনো ঘটনার পেছনের কালপ্রিটকে চিহ্নিত করা যায় ।

২১ শে আগষ্ট ঘটনার মূল বেনিফিশিয়ারি কে ?

একুশে আগষ্ট সংঘটিত না হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাত ধরে এদেশে ধীরে ধীরে গণতন্ত্র আরো পরিপক্ক বা ম্যাচিওরড হয়ে পড়ত ।রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলি

ট্রায়াল এবং এররের ভেতর দিয়ে

আরো শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে পড়ত । দেশের অর্থনীতি উত্তরোত্তর

শক্তিশালী হতো । সর্বস্তরে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার ফলে দুর্নীতিও ধীরে ধীরে কমে আসতো । দেশে আইনের শাসন আরো শক্তিশালী হয়ে পড়ত ।

এগুলি থেকে দেশকে বঞ্চিত করতেই একুশে আগষ্ট ঘটানো হয়েছে - তাতে কোনো সন্দেহ নাই । এর মাধ্যমে দেশের রাজনীতিকে আরো জটিল করা হয়েছে । এক পক্ষকে অপর পক্ষের মুখামুখি করা হয়েছে । সিঙ্গেল ইউনিটের একটি চমৎকার জাতিরাষ্ট্রকে ভাগ করে ফেলেছে । ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে ধর্মীয় সংখ্যাগুরুকে জব্দ করে রাখা হয়েছে । দেশটি হয়ে পড়েছে সরাসরি অন্য একটি রাষ্ট্রের করদ রাজ্য ।

এই সবগুলি একুশে আগষ্টে হামলার সরাসরি ফল ।

এখনো যদি আমরা এই শত্রুকে চিনতে ভুল করি তাহলে আমাদের কপালে আরো অনেক দুর্গতি রয়েছে ।

তাছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে আরো কিছু প্রশ্ন উথ্থাপন করা হয়ে থাকে । সেগুলোর কোনো জবাব দেওয়া হয় না ।

- মিটিং শুরু হওয়ার দুই ঘন্টা আগে কেন মিটিং এর জায়গা পরিবর্তন করা হলো ?

- শেখ হাসিনার গাড়ির ভেতরে কথিত গুলির ব্যাপারে মার্সিডিজ

কোম্পানী থেকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল । তাদেরকে কেন সেই গাড়িটি পরীক্ষা করতে দেয়া হয় নাই ?

- ঘটনার পরপরই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল । এফবিআই কে আনা হয়েছিল ঘটনার তদন্তে সহায়তা করার জন্যে । কিন্তু আওয়ামীলীগ নেতৃত্ব সেদিন কেন এই তদন্তে সহযোগিতা করে নাই ?

এই প্রশ্নগুলি আজীবন তাড়া করে ফিরবে আওয়ামীলীগকে ।

এর জবাব একদিন না একদিন তাদেরকে দিতেই হবে ।