মিনার রশিদ
ব্রিগেডিয়ার আজমীর মা এবং মেজর সিনহার মা ।
জানি না , এই দুজন মায়ের কষ্টের মধ্যে কিংবা ছেলে হারানোর বেদনার মধ্যে আদৌ কোনো পার্থক্য রয়েছে কি না ।
যতদূর জেনেছি ,
ব্রিগেডিয়ার আজমীর মা নিজের ছেলের জন্যে এক বুক কষ্ট নিয়ে এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন । অনুমিত হয় সে সময় মেজর সিনহার মা সেই কষ্টটি তেমনভাবে উপলব্ধি বা হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন নি । তিনি ঘুণাক্ষরেও এটা ভাবেন নি যে সিষ্টেম/ অরাজকতা তৈরিতে তার নিজের ছেলেরও ( ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ) অংশগ্রহন ছিল , সেই সিষ্টেম বা অরাজকতাই তার নাড়ি ছেড়া ধনকেও খুব শীঘ্রই কেড়ে নিবে ।
আজকেও তেমনি অনেক মা / বোন রয়েছেন যারা মেজর ( অব:) সিনহার মায়ের / বোনের কষ্টটি হয়তো সেভাবে উপলব্ধি করতে পারছেন না । এরাও একটা ফলস সেন্স অব সিকিউরিটি ধরে আছেন । মনে করছেন যে এই দুর্ভাগ্য তার ফেমিলিতে আসবে না ।
আজকে যারা এই ফ্যাসিবাদের সরব দোসর কিংবা নিরব দর্শক তাদের মায়েরা/ স্ত্রীরা / বোনেরাও তেমনি একটি ফলস সেন্স অব সিকিউরিটি ধরে বসে আছেন । এরাও চিন্তা করতে পারছেন না যে তারা নিজেরাও কতটুকু অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছেন । তাদের ক্ষমতাবান বা ভাগ্যবান প্রিয় জনেরও নিরাপত্তার কোনো গ্যারান্টি নেই । গ্যারান্টি আছে শুধু ভিক্টিম হয়ে পড়লে গণভবন থেকে একটি আমন্ত্রণ কিংবা সমবেদনার একটি ফোন ! শুনতে হবে সেই একটি বাক্য , আমিও বাবা মা ভাই সব হারিয়েছি । ব্লা ব্লা ব্লা .....
যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বা সিষ্টেম সকলের জন্যে রক্ষা কবজ হতে পারতো নিজেদের সাময়িক ক্ষমতা বা লোভ বা ভয়ের কারণে সেগুলি আমরাই ধ্বংস করেছি । এক সর্বনাশা চেতনা , ক্রোধ বা ঘৃণা এই কাজে মদদ জুগিয়েছে । রাষ্ট্রের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পরিণাম সম্পর্কে যেন কারো কোনো হুঁশ নেই ।
ক্ষমতা থেকে কোনো কারণে সিটকে পড়লে কিংবা ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হলে নিজেরাই তার ভিক্টিম হয়ে পড়ছে । এই নমুনা বা স্যাম্পল দেখতে খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয় নাই । বিচারপতি এসকে সিনহা এবং চৌধুরী সারওয়ার্দি জলজ্যান্ত প্রমাণ হিসাবে আমাদের সামনে হাজির হয়েছেন ।
এরা অষুধ খাওয়ার আগে অষুধের শিশি ঝাকি দেন নাই । অষুধ খাওয়ার পর এখন সারা শরীর ঝাকাচ্ছেন ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন