ড. আসিফ নজরুল
এটা সম্ভবত নেপালকে অব্যাহত ঠকানোর ফল। কয়েক দশক নতজানু সরকার ছিল নেপালে, যা ইচ্ছে করেছে ভারত। কিন্তু একটা সময় যে ভিন্ন কিছু হতে পারে সেটা তারা মাথায় রাখেনি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই ভুল করে চলেছে তারা। শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, ভূটানেও এটা করেছিল বা করে চলেছে।
ভুলটা হচ্ছে তারা এসব দেশে নিজেদের একতরফা স্বার্থ উদ্ধারের জন্য একটা তাবেদার সরকার ক্ষমতায় বসায় বা রাখে। সেরকম সরকারের সাথে তথাকথিত বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। সেসব দেশের জনগনের মনোভাবকে পাত্তা দেয়না বা সেটা আসলে কি বোঝার চেষ্টা করেনা।
এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে গত পনের বছরে আমি SAHR-এর নিরবাচিত নির্বাহী সদস্য হিসেবে বহুবার ভ্রমন করেছি । দেখেছি প্রতিটি দেশের মানুষ কতোটা অপছন্দ করে ভারত সরকারকে। আমি বিশ্বাস করি সত্যিকার ভোট নেয়া হলে এসব দেশের অন্তত ৯০ শতাংশ লোক বলবে ভারত খুব খারাপ প্রতিবেশী।
এদের মানসিকতা দেখে কোনদিন মনে হয় না সত্যিকারের পরাশক্তি হতে পারবে এরা। পরাশক্তিরা প্রতিবেশীদের একটু আধটু ঠকায়, কিন্তু লুটে নেয় না। এজন্য চীনের পাশে মিয়ানমার আর উত্তর কোরিয়া দুটো বন্ধুভাবাপন্ন প্রতিবেশী আছে। আমেরিকার আছে কানাডা আর কিছু ছোট ল্যাটিন দেশ। ভারতের পাশে একটাও নাই।
যাই হোক যে কোন হত্যাকান্ড নিন্দনীয়। ভারতের নাগরিককে হত্যা করারও নিন্দা করছি।
..................................................................................
নেপালের সীমান্তরক্ষীর গুলিতে ভারতীয় নিহত
........................................................................
ভারত-নেপাল সীমান্তে নেপালি পুলিশের গুলিতে এক ভারতীয় নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন দুজন। আটক করা হয় এক ভারতীয়কে। শুক্রবার সকালে ভারতের বিহার রাজ্যের সীতামারি জেলার সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে।
এমন সময় এই সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ঘটল, যখন সীমানা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
নেপালের সীমান্তরক্ষী বাহিনী 'নেপালিজ আর্মড পুলিশ ফোর্স' বলছে, কয়েজন ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে নেপালে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু করোনাভাইরাস বিস্তাররোধে লকডাউন থাকায় তাদের নেপালে ঢুকতে বারণ করা হয়। এতে ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে ২৫–৩০ জন ভারতীয় যুক্ত হয়ে নেপালি পুলিশের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে নেপালের পুলিশ গুলি ছোড়ে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়,নিহত যুবকের নাম বিকাশ যাদব (২২)। আহত দুজনের নাম উমেশ রাম ও উদয় ঠাকুর। তাঁদের সীতামারীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী স্থানীয় এক কর্মকর্তা। তিনি জানান, ওই ঘটনায় লগন যাদব নামে এক ভারতীয়কে নেপালি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
খবরে বলা হয়, ভারত–নেপালের যে সীমান্তে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কাঁটাতারের বেড়া নেই। সীমান্তটি উন্মুক্ত। এতে সহজেই এক দেশের মানুষ আরেক দেশে যেতে পারে। পাশাপাশি হওয়ায় এপার-ওপার আত্মীয়স্বজন রয়েছে অনেকের।
নেপাল সীমান্তরক্ষী পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক নারায়ণ বাবু থাপা ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ঘটনাটি দক্ষিণ নেপালের সরলাহি জেলায় শূন্য রেখা থেকে নেপালের ৭৫ মিটার অভ্যন্তরে ঘটে। তাঁর দাবি, ২৫-৩০ জন ভারতীয় নেপালি পুলিশ সদস্যের ওপর চড়াও হয়। তারা তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। পুলিশ ১০ রাউন্ডের মতো ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এতে হতাহতের ওই ঘটনা ঘটে। নেপাল পুলিশ আরও দাবি করে, উত্তেজিত ভারতীয়রা তাদের অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাটনা ফ্রন্টিয়ারের আইজি সঞ্জয় কুমার বলেন, 'আমাদের পক্ষ থেকে নেপাল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।' স্থানীয় এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শনিবার সকালে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে এ বিষয়ে পতাকা বৈঠক হবে।
সম্প্রতি সীমানা নিয়ে ভারত ও নেপালের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। ভারতের দাবি করা তিনটি এলাকা নিজেদের দাবি করে মানচিত্র প্রকাশ করেছে নেপাল। ধারণা করা হচ্ছে, এ জন্যই নিজেদের দেশে ভারতীয়দের প্রবেশে বাধা দেয় নেপালের সীমান্তরক্ষীরা। যদিও নেপাল সীমান্তরক্ষীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, করোনোভাইরাস মহামারিতে লকডাউনের অবস্থা থাকায় ওই ভারতীয়দের প্রবেশে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন