প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এখনও সত্য আড়াল করতে তৎপর স্বাস্থ্যখাতের শীর্ষ পর্যায়ের কর্তারা। গত ক’দিনের ভিডিও কনফারেন্সে তাই দেখেছে দেশ। মন্ত্রীর ব্যর্থতা অযোগ্যতা সীমাহীন। নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রীর জন্য বেদনার আর দেশের জনগণের জন্য চরম দূর্ভাগ্যের যে এতো বরাদ্দ, এতো অবকাঠামোর উন্নয়নের পরও কেবল ব্যর্থতা আর সীমাহীন দুর্নীতি এবং এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দেশের চিকিৎসাখাত আজ দেউলিয়া।
করোনার ভয়ঙ্কর অভিশাপে এই দেউলিয়াত্বের বহি:প্রকাশ বীভৎস চেহারায় জনসম্মুখে এসেছে। গণমাধ্যম এই খাতের সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে কম লেখালেখি করেনি। দুর্নীতি দমন কমিশন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও মন্ত্রণালয় সব সময় উদাসীন থেকেছে নয় আমলেই নেয়নি। সংসদেও কথা উঠেছে তবু মন্ত্রীরাও পাত্তা দেননি। এটা রহস্যময়ই নয়, প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়ও।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের শুরুতেই সরকার গঠনকালে প্রখ্যাত চিকিৎসক আ ফ ম রুহুল হককে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেছিলেন। সেই সময়ই খাতটি ব্যাপক আকারে দুর্নীতির ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। সেই ধারা চলতেই থাকে। ২০১৪ সালে সরকার গঠনকালে শেখ হাসিনা স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেন দলের প্রভাবশালী নেতা মোহাম্মদ নাসিমকে। স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির মহামারীর ভয়াবহতার সংবাদ গণমাধ্যমে আসতেই থাকে।
সর্বশেষ সরকার গঠনকালে জাহিদ মালিক স্বপনকে মন্ত্রী করলেও স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। ক্যান্সারের মতোন এর বিষ জনগণ ভোগ করেন। এখন তো মাতম চলছে করোনাকালে! এতো চুরিচামারি মানুষ করে?দেশের মানুষের টাকায় মানুষের চিকিৎসা সেবা নিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা!
মনে পড়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সেই সিভিল সার্জন মনোয়ারুল ইসলামের কথা!মাছরাঙ্গা টিভি রিপোর্ট করেছিলো। অশ্রুজলে তাকে সবাই বিদায় জানিয়েছিলেন। অবসরে যাবার ১৫ দিন আগে তাকে ওএসডি করা হয়। কারণ তিনি ঠিকাদারের তৈরি করা প্রায় দেড়লাখ মেশিনপত্রের চাহিদা পত্রে সই করেননি। তিনি দক্ষ প্রশাসক হিসেবেও জনপ্রিয় ছিলেন।
তার মানে অধিকাংশ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়করা উপর থেকে নীচ পর্যন্ত এই দুর্নীতির ধারায় জড়িয়েছিলেন। মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি স্বাস্থ্য। তাই এ খাত এসেছে। ভাবা যায় একটি বই ৫ হাজার টাকার কেনা হয় ৮৫ হাজার টাকায়। একটি পর্দা কেনা হয় ৩৭ লাখ টাকায়? কত মেশিনপত্র কত হরিলুটে গেছে কত হাসপাতালে! সংসদীয় কমিটি নীরব নিথর। সংসদে কথা বললেও লাভ নেই। গণমাধ্যমে এলেও কিছু হয় না।
দুদকের মামলায় কিছু ঠিকাদার আর নীচের পর্যায়ের ডাক্তার ফাঁসলেন। কিছু ডাক্তার বিভিন্ন কমিটিতে থেকে সই করায়। উপরের সবাই বহাল তবিয়তে কি আরাম আর লাভের ভাগে ঘুমালেন! একটু রয়ে সয়েও না সাগর চুরিটাই হলো! সকল অপরাধী, চোর ডাকাতকে আইনের আওতায় না আনলে সর্বনাশ হবে।
বিএমএ স্বাচিপ এসব দেখেনি। নিজের লোক দেখেছে, আর জেলা থেকে তদবির করে ঢাকায় এনেছে। এতে প্রান্তিক মানুষ চিকিৎসা সুবিধা পায়নি।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন