মিনার রশিদ
বস্তুবাদিতায় আমাদের মন ও আত্মা কলুষিত হয়ে পড়েছে । ফলে অনেকেই বস্তুর বাইরে কোনো কিছুর অস্তিত্ব দেখতে পাই না । উর্ধ জগতের অনেক ওয়ার্নিং বা নির্দেশকে আমরা ধরতে সক্ষম হই না ।
স্রষ্টা যদি থেকে থাকেন তবে এ জাতীয় ওয়ার্নিং বা নির্দেশ থাকাটাই স্বাভাবিক ।
জানি না করোনা ভাইরাস উর্ধজগত থেকে সে জাতীয় কোনো ম্যাসেজ বা ওয়ারনিং কি না ।
তবে কোনো কোনো ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এমন কিছু বিষয় / স্বপ্নের কেচ্ছা নিয়ে আসছেন তাতে বাস্তব উপলব্ধিগুলিও আমাদের চোখের আড়াল হয়ে পড়ছে । উর্ধ জগতের এই নমুনা / ম্যাসেজগুলি এদের অদক্ষ হাতে পড়ে আরো হাস্যকর ও উদ্ভট শোনায় । বিজ্ঞানের স্বাভাবিক বিকাশ ও গবেষণা কখনোই দোয়া কালামের মাধ্যমে রিপ্লেইস করা যাবে না । ইসলাম সেটা কখনোই বলে না । বরং বিজ্ঞানের এই গবেষণা ইসলামের অনেক বিষয়কে বোঝা সহজ করে দিয়েছে ।
যেমন করোনা ভাইরাস আমাদের জানিয়ে দিয়েছে যে সারা পৃথিবীর মানুষ যদি মুসলমানদের মত দৈনিক পাঁচ বার হাতমুখ পানি দিয়ে ধুইতেন তবে পৃথিবী থেকে অনেক ভাইরাস রোগের প্রাদুর্ভাব কমে যেত । মুসলমানদের হালাল খাবারের নির্দেশটিও অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে ।
এসব কথা না বলে উদ্ভট উদ্ভট স্বপ্ন বা এই কিছিমের কথা বলে বিষয়টিকে কিছু মওলানা আরো জটিল ও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছেন । তাদের একটু সতর্ক হওয়া উচিত । যা জানা নেই সেই বিষয়ে মন্তব্য না করাই শ্রেয় ।
আমরা জানি , আল্লাহ্ তায়ালার সুস্পষ্ট নির্দেশ ছিল , তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকবে যারা মানুষকে সৎকাজের আহ্বান জানাবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে । কাজেই স্রষ্টার এই মূল নির্দেশটি উপেক্ষিত হলে এরকম কালেক্টিভ শাস্তি আসাটাই স্বাভাবিক । অতীতে অনেক জাতিকে আসমানী গজব দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে যখন এই ‘ সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ ‘ নির্দেশটি উপেক্ষিত হয়েছে । যদিও ব্যক্তিগত জীবনে সেই সব ধ্বংস প্রাপ্ত জাতির মধ্যে অনেক ভালো বা মুমিন মানুষ ছিলেন ।
আমাদের বর্তমান সমাজ দেখে সেই ভয়টি জেগে উঠছে । আলেম সমাজের মধ্যেও আজ সুবিধাবাদিতা চরম আকার ধারণ করেছে । সত্য বলার চেয়ে তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়াকে হেকমত বলে গণ্য করা হচ্ছে । মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশের
সংবিধান থেকে ‘ আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস প্রকাশ্যে সরানোর সময় যতটুকু না ব্যথা অনুভব করেছেন তার চেয়েও বেশি আহ্লাদিত হয়ে পড়েন সরকার প্রধানের অপ্রকাশ্যে তাহাজ্জুত পড়ার গল্প শোনে !
সৎ কাজের প্রতি আহ্বান এদের অনেকে জানালেও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখার মত কাউকে দেখা যাচ্ছে না । প্রথমটিতে কোনো রিস্ক নেই , দ্বিতীয় অংশেই যত ঝামেলা । আল্লাহর ক্রোধটি নেমে আসবে সম্ভবত এ কারণেই ।
আজ আমার সত্যি ভয় লাগছে । আল্লাহর পক্ষ থেকে কালেক্টিভ শাস্তি পাওয়ার সব নর্ম আমরা পূরণ করে ফেলেছি !
মানবজাতির মূল কর্তব্য পালনে আমরা একটি অকার্যকর কওম বা জাতি হয়ে পড়ছি কি না তা ভেবে দেখা দরকার ।
কাজেই আসুন সবাই আল্লাহর কাছে একান্তমনে
ক্ষমা চাই ও আল্লাহর মূল নির্দেশটি পালন করে তার ক্রোধ থেকে আত্ম রক্ষা করি ।
হে আল্লাহ ! করোনা ভাইরাস সহ সকল জানা অজানা বিপদ থেকে মানবজাতিকে রক্ষা কর । আমাদের সকল অক্ষমতাকে ক্ষমা কর। এই দেশ ও জাতিটিকে রক্ষা কর!
আমিন ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন