আবদুন নূর তুষার
এবারের ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ হতে যা শিখলাম। (যদিও আমরা এটাকে বাংলায় ডেঙ্গু বলা অনুশীলন করে প্রচলিত করেছি। যেমন চে গেভারাকে গুয়েভারা বলা হয়। সব কিছুকে গু বানানো আমাদের বেশ অভ্যাস হয়ে গেছে।) ১. কলকাতা একমাত্র শহর যেখান থেকে লোক আনলে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ২. এফডিসির পথের ধুলায় ডেঙ্গু মশা জন্মায় যা তারকাসমৃদ্ধ মিছিলে প্রতি বর্গফুটে একটা করে ঝাড়ু দিয়ে ক্যামেরার সামনে পরিষ্কার করার অভিনয় করলে মশা মরে সাফ হয়ে যায়। ৩. স্বাস্থ্যমন্ত্রী মালয়েশিয়া না গেলে মশা কমে যেতো। ৪. মশা মারতে হারপিক লাগে যা শুক্রবারে বেসিনে ঢালতে হয়।
ভাগ্য ভালো হারপিক খেতে বলেনি। ৫. ডাক্তাররা অন্য সময় কসাই হলেও মহামারী এলে তাদের বেশ প্রশংসা করা হয়। ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ কমলেই তারা পুরোনো কসাই পদে ফিরে যাবেন বলে ফেসবুক সূত্রে জানা গেছে। ৬. নারিকেল তেল মাখলে মশা কামড়ায় না। এই মশা নাকি হাঁটুর উপরে উঠতে পারে না । (সব ডাহা মিথ্যা)। ৭. পেঁপের পাতা খেলে ডেঙ্গু জ্বর সেরে যায়। (সত্য নয়, প্লেটেলেট বাড়া মানে ডেঙ্গু সেরে যাওয়া নয়) এই পাতা না খেলেও প্লেটেলেট বাড়ে। সব রোগীর প্লেটেলেট এমনিতেও কমে না, যে সবার পাতা খেতে হবে। ৮. জ্বরের নাম ডেঙ্গু জ্বর, ভাইরাসের নাম ডেঙ্গু। সকলে শুধু বলে ডেঙ্গু হয়েছে। এটা অনেকটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে শুধু সোহরাওয়ার্দী বলার মতো । বাংলা একাডেমিকে শুধু বাংলা। ৯. দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির এই করুণ অবস্থায় একজন সংসদ সদস্য হোমিওপ্যাথি কবিরাজী বেশি করে চালু করার কথা বলে সংসদে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি কিন্তু নিজের অসুস্থতার সময় এয়ার অ্যামবুলেন্স নিয়ে সিঙ্গাপুরে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। ১০. ডেঙ্গু ভাইরাস টেস্ট করার দাম ৫০০ করার নির্দেশ। বাকি সব টেস্ট কিন্তু আগের দামেই হবে। কেবল ডেঙ্গু হলো কিনা সেটা ন্যায্যমূল্যে জানা যাবে। তারপর সব মিলিয়ে… দুই লাখ, পাঁচ লাখ বিল হলে সমস্যা নেই। ১১. মেয়র শব্দটি বেশ হাস্যরসের বিষয় হয়ে গেছে। কাউকে ‘আপনি একটা মেয়র’ বলে দেখতে পারেন। দু’জন বাদে সকলেই এতে আপত্তি করবেন বলে আমার ধারণা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন