সাগর কামাল
নিকৃষ্ট লোকগুলোর জন্য আওয়ামী লীগ করা যেমন একটি ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে তেমনি ভালো মানুষের জন্য আওয়ামী লীগ করা এখন একটি স্ট্রেস হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভালো এবং সজ্জন লোকেরা বঙ্গবন্ধু, অসাম্প্রদায়িক চিন্তা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদ থেকে আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে কিন্তু কিছু নিকৃষ্ট, অপদার্থ লোকদের অপকর্ম গুলো দেখে শুনে অপমানে মাথা নিচু করে চলে। বিব্রত হয়। বিমূর্ত পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়। কখনো লজ্জায়, অপমানে বিদ্ধ হয়ে সাহস করে বলতেও পারে না আমি আওয়ামী লীগ!
রাষ্ট্রের কাঠামোগত ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। আমরা মোটামুটি মানে একটি স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রের কাতারে দাঁড়িয়ে গেছি। জিডিপি, প্রবৃদ্ধি, রিজার্ভ সহ অর্থনীতির সূচকগুলো মোটামুটি ভালো। গড় আয়ু, জীবন যাপন, মৌলিক চাহিদা পূরণ সহ সকল খাতে বাংলাদেশ অনেক ভালো করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে মোটামুটি ভালোই রেখেছেন এটা উনার তীব্র বিদ্বেষী লোকও স্বীকার করে। কিন্তু তারপরও ভালো মানুষেরা কেউই এখন আর নিজকে আওয়ামী লীগ পরিচয় দিতে চায় না কেনো বলতে পারেন?
খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, মাদক, চোরাচালান সহ এমন কোন অপকর্ম নেই যেখানে যুবলীগের নাম আসে না। শিক্ষক নিপীড়ন, শিক্ষার্থী নিপীড়ন, ক্যাম্পাসে ভায়োলেন্স তৈরি সহ এমন কোন নিকৃষ্ট কাজ নেই যেখানে ছাত্রলীগ অনুপস্থিত। স্থানীয় বিচার, শালিসের নামে মানুষকে হয়রানি, নিপীড়ন, নির্যাতনের এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে আওয়ামী লীগের নাম নেই। সুতরাং একজন ভালো মানুষের পক্ষে এমনসব অপকর্মগুলো হজম অসম্ভব। তাই একজন ভালো, সৎ এবং ভদ্র মানুষ নিজকে এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ পরিচয় দিতে বিব্রত, কুণ্ঠিত।
এখন বিষয় হলো আওয়ামী লীগের বাইরে যারা এন্টি – আওয়ামী লীগ আছে তারা কী খুব ভালো রাজনীতি করে? সোজা কথায় উত্তর হলো, না। কখনোই নয়। বরং তারা যখন ক্ষমতাসীন হবে তখন আজকের আওয়ামী লীগের এসব অপকর্মগুলো তাদের মধ্যে ডাইভার্ট হবে। হতে পারে এর চাইতেও ভয়ানক হবে। কারণ তাদের অতীত সেটাই বলে। তখনও তাদের সাপোর্টে থাকা ভালো লোকেরা নিজকে বিএনপি কিংবা জামাত পরিচয় দিতে লজ্জা পাবে, বিব্রত হবে। আজ যেমন আওয়ামী লীগের সাপোর্টে থাকা ভালো লোকেরা প্রতিমুহূর্তে লজ্জায়, অপমানে আত্মজিঘাংসায় বিদগ্ধ হচ্ছে, বিব্রত হচ্ছে, ভীষণভাবে মানসিক স্ট্রেসে ভুগছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন