পীর হাবিবুর রহমান
আমাদের বেড়ে ওঠার সময়টা ছিলো সহজ সরল নিরাভরণ সাদামাটা জীবনের।রাজনীতি ছিলো আদর্শিক।সৌহার্দপূর্ণ। বিত্তের চেয়ে চিত্তের সুখটাই ছিলো বড়।সচ্ছল জীবনযাপন ই ছিলো বড় চাওয়া।মায়া মমতা টান ছিলো আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। মানুষে মানুষে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধন ছিলো গভীর। বই কেনার এতো টাকা পয়সা ছিলোনা তবে বই পড়ার আগ্রহ ছিলো প্রবল। সব বাড়িতেই যতো টানাপোড়েন থাক,লাইব্রেরী না থাক,বুকসেলফ শোভা পেতো।প্রকৃতির প্রতি যতো আকর্ষন ততোই ছিলো আড্ডার প্রতি। খেলাধুলা গানবাজনা কবিতা লিটল ম্যাগাজিন জীবনের সাথে জড়িয়েছিলো।যার যার ধর্মীয় উৎসবে প্রাণ ছিলো,সাম্প্রদায়িকতার বিষের বাতাস ছিল না।
আজ আমাদের স্বচ্ছল জীবন হয়েছে,বইয়ের প্রতি আকর্ষন হারিয়েছে মন।সহজ সরল জীবনযাপন নির্বাসনে যাচ্ছে।রাজনীতি আদর্শহীন হয়ে রাজদূর্নীতিতে প্রবেশ করেছে! ক্ষমতা চাটুকারিতা সস্তামি মর্যাদাহীনতা অর্থবিত্ত দামি আসবাব গাড়ি বাড়ি সম্পদের প্রতি লোভ মোহের ফনা লকলক করে।বই বা লাইব্রেরীর প্রতি রুচিহীনতা দেখা গেছে।মূর্খদের উল্লাসময় সমাজ সস্তা নস্টদের হাতে চলে যাচ্ছে।মানবিকতা মর্যাদাবোধ মূল্যবোধ দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে।
মাঝে মাঝে মনে হয় জ্ঞানী ও গুণীদের খোজে খোজে বের করতে হয়।তাদের সংখ্যা বামুনপ্রভাবিত সমাজে কমে যাচ্ছে।প্রানহীন সমাজে কোথাও আড্ডায় দায়িত্বশীলদের সাথে বসলেও প্রান আসেনা।মূর্খ নির্লজ্জ চাটুকারদের বয়ান শোনতে হয়।সব দরজা জানালা যেনো বন্ধ হয়ে আসছে।কোথাও কেউ নেই।কেউ কেউ বেঁচে আছেন কি অন্তহীন দহন নিয়ে!তার বেদনা ও দহন বুঝার মতোন বেকুব ও নেই,যে সময় নষ্ট করে।নষ্ট সমাজে আদর্শ যেখানে নির্বাসিত বইতো সেখানে উপেক্ষিতই হবে,গুণীর কদর মাটিতে নামবে!আমরা ছুটছি, হয়রান, অস্থির হয়ে ছুটছি, কোথায় কাদের সাথে কতদূর যাচ্ছি, কেউ জানি না!
(ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে)
লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন