গোলাম মওলা রনি
মানুষের জীবনে এমন কতগুলো মুহুর্ত আসে যখন চিৎকার চেচামেচি, হৈ হুল্লোড়, আনন্দ-ফুর্তি অথবা কান্নাকাটির তুলনায় নীরব থাকাটা বেশী অর্থপূর্ন হয়ে ওঠে এবং সেই নীরব থাকার শক্তি যে কতোবড় এবং কতোটা মহান হয়ে উঠতে পারে তার প্রমান বিশ্ব রাজনীতিতে বহুবার দৃশ্যমান হয়েছে।
একইভাবে মুক্ত মানুষের চেয়ে কারাবন্দী মানুষের ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, মান-সম্মান ও মর্যাদা যে কতো ব্যাপক ও বিশাল হতে পারে তারও শত শত প্রমান ইতিহাসে রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উপরোক্ত কথাগুলো আমার হঠাৎ করেই মনে হলো কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়াকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষমতাসীনদের দরদ ও মমত্ববোধের বাহারী রংচটা কথাবার্তা শুনে।
ক্ষমতাবানরা বলছেন- বেগম জিয়া দরখাস্ত করলে তাকে প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। বিএনপি বলছে - তারা প্যারোলে নিয়ে ভাবছেন না। কারণ বেগম জিয়া মরে গেলেও প্যারোলের শর্তে জেল থেকে বের হবেন না।
বেগম জিয়ার অতীত ইতিহাস-বিশেষ করে তার ব্যক্তিত্ব, দৃঢ় মনোভাব, আপোষহীন ভাবমূর্তি এবং বিশ্বাসযোগ্য কথাবার্তার বিপরীতে ক্ষমতাবানদের কথা বা অঙ্গীকার রক্ষার ইতিহাসের তুলনামুলক বিচার করলে প্যারোলে বিষয়টি যে, ক্ষমতাবানদের খয়ের খা এবং তাবেদারদের একটি ফাঁদ তা স্পষ্ট করে বলা যায়। এখন প্রশ্ন হলো বিএনপির কে বা কারা সেই ফাঁদে অতীত কালের মতো পা দেয়ার জন্য প্ররোচিত হয় বা প্ররোচনা দেয় তা দেখার জন্য আমাদেরকে আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।
প্যারোল বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো- বিএনপি নেত্রী বিগত দিনে যে সুনাম সুখ্যাতি অর্জন করেছেন তা তার কারাবাসের মাধ্যমে আরো উজ্জল হয়েছে। সারা বাংলাদেশের আপামর জন সাধারনের সহানুভূতি, দোয়া এবং সমর্থন এখন বেগম জিয়াকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। যারা বেগম জিয়ার সেই ভাবমূর্তির সর্বনাশ করতে চান তারাই প্যারোল নিয়ে আগ্রহ দেখাবেন। আমি মনে করি প্যারোল বিষয়ে বেগম জিয়াকে যদি সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয় তবে তিনি প্যারোলের পরিবর্তে কাল নাগিনীর বিষ পানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন