সারা পৃথিবীর চোখ এখন তুরস্কে। এক নতুন তুরস্ক দেখছে বিশ্ব। ‘ইউরোপের রুগ্ন দেশ’ হিসেবে খ্যাত তুরস্ক এখন আঞ্চলিক রাজনীতির নেতৃত্ব থেকে ধীরে ধীরে বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম প্রভাবক।অথচ, গল্পটা এমন ছিল না। উসমানি সালতানাতের কবরের ওপর জাতীয়তাবাদী এক কট্টর সেক্যুলার তুরস্ক গড়ে তুলেছিল মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক। ৬৩৬ বছরের অটোমান চেতনার সলিল সমাধি হয়েছিল মাত্র কয়েক বছরেই।
বিংশ শতাব্দির প্রায় আট দশকে সার্বিকভাবে আতাতুর্কের প্রভাবেই তুরস্ক শাসিত হয়েছিল। দীর্ঘ সময় সরকারের চেয়ে ডিপ স্টেট ছিল শক্তিশালী অবস্থানে। যদিও বদিউজ্জামান সাঈদ নূরসি, আদনান মেন্দেরেস, তুর্গেত ওযেল, নাজিমুদ্দিন আরবাকান ও এরদোয়ান তুরস্ককে সেই অবস্থা তুলে এনে আবারও অটোমান চেতনার রুপ দেয়ার চেষ্টা করেছিল।
সম্প্রতি বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে মোস্তফা ফয়সাল পারভেজের লেখা ‘আতার্তুক থেকে এরদোয়ান: বদলে যাওয়া তুরস্কের ১০০ বছর’। বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে তুরস্কের ১০০ বছরের ইতিহাস।
লেখক মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ বলেন, বইটিতে ১০০ বছরের তুরস্ককে তুলে ধরতে গিয়ে আতার্তুক পূর্ব তুরস্ক তথা উসমানি খিলাফতের গৌরবজ্জ্বল অধ্যায় এবং শেষ সময়ে পশ্চিমা প্রভাবকে সংক্ষেপে তুলে এনেছি। যাতে আতার্তুক, তার অনুসারী এবং একবিংশ শতাব্দির নতুন তুরস্কের রূপকারক এরদোয়ানের সঙ্গে সহজেই তুলনা করা যায়।
তিনি বলেন, বৃহৎ পরিসরে আতাতুর্ক থেকে এরদোয়ান পর্যন্ত রাজনৈতিক পরিক্রমাকে তুলে আনার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, বইটি পড়লে পাঠকবৃন্দ জানতে পারবেন।
বইটি পড়লে যা জানা যাবে
- ৬৩৬ বছরের অটোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস ঐতিহ্য আর ইসলামি সংস্কৃতি থেকে কীভাবে তুরস্ক কট্টর সেক্যুলার সমাজ ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকে পড়ল।
- আতাতুর্কের সংস্কার সমূহ সমাজে কতটুকু প্রভাব ফেলেছে।
- কীভাবে অটোমান চেতনা নিয়ে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মিশন শুরু হলো।
- রাজনৈতিক বিচক্ষণতা আর ইসলামি আন্দোলনের স্বভাব পথচলা কি একই জিনিস।
- আজকের তুরস্ক কতটা প্রাসঙ্গিক।
- এতো কিছুর পরেও বর্তমান তুরস্কে কামাল আতার্তুক কিভাবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে বাম, ডান, সেক্যুলার কিংবা ইসলামিস্ট সকলের জনপ্রিয় ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে।
লেখক বলেন, আমার বিশ্বাস, আজকের বাংলাদেশে ‘আতার্তুক থেকে এরদোয়ান’ পাঠ খুব বেশি প্রাসঙ্গিক। পাঠকবৃন্দ ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশে বসে তুরস্কের সঙ্গে নিজেদের মিলিয়ে নিতে পারবেন ইনশাআল্লাহ্। সম্ভাব্য করণীয় ঠিক করতে এই পাঠ আপনাকে কিছুটা আলোর রেখা এনে দিবে বলে আশা করছি।
গার্ডিয়ান থেকে প্রকাশিত বইটি গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলার ৪৭০ নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন