গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের ঢোলসমুদ্র এলাকার মুটের চালায় প্রাচীন ঐতিহ্যের সন্ধানে রাজবাড়ী খননের কাজ এগিয়ে চলছে। বেরিয়ে এসেছে সুলতানি আমলের একটি মসজিদের ধ্বংসাবশেষ। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের ঢাকা আঞ্চলিক কার্যালয় এ খনন করছে।
খনন করতে গিয়ে সন্ধান পাওয়া সুলতানি আমলের একটি মসজিদের ধ্বংসাবশেষ সমকাল
খনন করতে গিয়ে সন্ধান পাওয়া সুলতানি আমলের একটি মসজিদের ধ্বংসাবশেষ সমকাল
জানা যায়, গাজীপুর উপজেলার সফিপুর বাজার থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে মুটের চালা গ্রাম। দুই মাস আগে শাল-গজারি আর লালমাটির দিয়ে আবৃত হাজার বছর আগের সুলতানী আমলের রাজপ্রাসাদের অনুসন্ধান শুরু করেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। খননকারীরা যতই লালমাটির নিচে যাচ্ছেন, ততই বেরিয়ে আসছে একের পর এক ইটের তৈরি নকশায় অলঙ্কৃত নিদর্শন, দেয়ালের বাইরে হাতে কাটা ইটের জালি নকশা ও বিভিন্ন স্থাপনা। প্রায় দেড় মাস পর সন্ধান মিলল বিভিন্ন কারুকাজে তৈরি মসজিদের ধ্বংসাবশেষ। এসব নিদর্শন দেখতে প্রতিদিন শত শত লোক ঢোলসমুদ্র গ্রামে ভিড় করছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের ঢাকা আঞ্চলিক অফিসের সহকারী পরিচালক খনন দলের নেতা নাহিদ সুলতানা জানান, ওই গ্রামের একটি সুউচ্চ ঢিবির চারটি জায়গায় প্রত্নতাত্তি্বক খনন চালানো হলে সেখানে খ্রিস্টীয়
ত্রয়োদশ বা চতুর্দশ শতাব্দীতে নির্মিত মসজিদের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। ৮ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৮ মিটার বিস্তৃত মসজিদটির পশ্চিম-উত্তর, পশ্চিম-দক্ষিণ ও পূর্ব-দক্ষিণ কোনার পিলারের অংশবিশেষ ছাড়াও প্রায় আড়াই মিটার উঁচু পশ্চিমমুখী দরজা এবং প্রায় পৌনে দুই মিটার প্রশস্ত দেয়াল অক্ষত রয়েছে। প্রায় আড়াই মিটার উঁচু দেয়ালের ভিত্তিমূলে ব্যবহার করা হয়েছে 'ঝামা ইট' যা ভবনকে আর্দ্রতায় দুর্বল হওয়া থেকে সুরক্ষা করত।
দেয়ালের বাইরে হাতে কাটা ইটের জালি নকশা ও অলঙ্করণ, টেরাকোটা এবং বিভিন্ন আকৃতির ইটের স্থাপত্যশৈলী ছাড়াও কর্নারের পিলারে অষ্টকোনাকৃতির বর্গাংশ, কর্নার ট্যারেট (যা মসজিদের গম্বুজ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে), পশ্চিমমুখী দরজা, পাথর (আগে বসে অজু করত), ফুটন্ত পদ্মফুল, আঙ্গুর ফল, বটপাতার নকশাসহ বিভিন্ন নিদর্শন দেখে মসজিদের দেয়াল হিসেবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান সুলতানী আমলের মসজিদের ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রায় দেড়-দুই বছর আগে ঢোলসমুদ্র গ্রামের উঁচু ঢিবির এই জায়গাটি নির্ধারণ করা হয়। স্থানীয় লোকজনের অনুরোধেই উঁচু ঢিবিতে প্রথম খনন শুরু করি।
গত ১৮ জানুয়ারি মাটির তৈরি প্রাচীন অট্টালিকার সন্ধানে ঢোলসমুদ্র গ্রামের মাটি খনন শুরু করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর।
পাঠক মন্তব্য
noting
ভাই, আমার মনে হয়...... এটা আরো ভালো করে খনন করা উচিত, এখানে অনেক সুলতানী আমলের গুরুত্বপূর্ন নিদর্শন পাওয়া যেতে পারে।
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন