চট্টগ্রামে দশ দিনব্যাপী শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে বক্তারা বলেছেন, নামাজ ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ ও ফরজ বিধান। প্রিয় নবীর (দ) স্মরণ ও আহলে বায়তে রাসুলের (দ) স্মরণের মাধ্যমে যে নামাজ কায়েম করা হয় তাই প্রকৃত নামাজ। আল্লাহ পাকের নৈকট্য এবং কবরে হাশরে নাজাত পেতে অবশ্যই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে। কারবালা ময়দানে নবী পরিবারের সদস্যগণ, হযরত ইমাম হোসাইন (রা) ও তার সৈন্যরা কঠিন বিপদে ও চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নামাজ ছাড়েননি।
মাহফিলে বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলোচকরা বলেন, ইয়াজিদিরাও তাদের তাঁবুতে নামাজ পড়েছে। কিন্তু সেই নামাজ ছিল অগ্রহণযোগ্য, প্রাণহীন ও অন্তঃসারশূন্য। কারণ ইয়াজিদিদের নামাজে ইশকে মুস্তফা, হুব্বে মুস্তফা ও তাজিমে মুস্তফা (দ) তথা প্রিয় নবীজির (দ) স্মরণ ছিল না। প্রিয় নবী (দ) ও আহলে বায়তের তাজিম ও স্মরণ করা হয় না এমন নামাজ ও ইবাদত আল্লাহ পাকের কাছে প্রত্যাখ্যাত। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্লাজায় গতকাল বুধবার মাহফিলের সপ্তম দিনে সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজার কুতুবদিয়া দরবার শরিফের সাজ্জাদানশিন পীরে ত্বরীকত শাহজাদা মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল করিম কুতুবী। মাকামে মাহমুদ ও আজমতে মোস্তফা (দ) বিষয়ে আলোচনা করেন ঢাকা দারুন্নাজাত কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা
মুফতি ওসমান গনি সালেহী। তিনি বলেন, হাশরের ময়দানে উম্মতের জন্য সুপারিশ করবেন প্রিয় নবী (দ)। প্রিয় নবীজির (দ) বিশেষ মর্যাদাময় পজিশন হচ্ছে মকামে মাহমুদ। যা অন্য কোনো নবী রাসুলের সৌভাগ্যে জুটবে না।
হাসনাইনে করিমাইনের পরিচয় ও মর্যাদা বিষয়ে আলোচনা করেন কাটিরহাট মুফিদুল ইসলাম ফাযিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক প্রখ্যাত বক্তা আল্লামা আবুল হাসান মুহাম্মদ ওমাইর রিজভি।
মাহফিলে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান, প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সমাজসেবায় একুশে পদকপ্রাপ্ত সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী চক্র মুসলমানদের ইমান আক্বিদা হননে বহুমুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। শিয়া, ওহাবি, মওদুদী ও কাদিয়ানিদের লেলিয়ে দিয়ে আজ মুসলমানদের ইমানি চেতনা দুর্বল করে দেওয়া হচ্ছে এবং মুসলমানদের শক্তি খর্ব করছে দেশি-বিদেশি এ কুচক্রীরা। ইমান আক্বিদা সুরক্ষার তাগিদ দেওয়া, মুসলমানদের অন্তরে নবীপ্রেম ও আহলে বায়তে রাসুলের (দ) মহব্বতের চেতনা জাগ্রত করাই এ আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের মূল লক্ষ্য।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুল করিম কুতুবী বলেন, মহরম মাস এলে নবী অলিপ্রেমী ও আহলে বায়তপ্রেমী মুসলমানরা ইমানি চেতনায় জেগে ওঠে। আহলে বায়তে রাসুলের (দ) মহব্বত, ভালোবাসা ও পূর্ণ আনুগত্যের মাধ্যমে আমরা পরিপূর্ণ কামিয়াবি অর্জন করতে পারি।
কুরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন আন্তর্জাতিক ক্বারি শায়খ আহম্মদ বিন ইউসুফ আজহারী। নাতে রাসুল (দ) পরিবেশন করেন মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম কাদেরী।
অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, আঞ্জুমান ট্রাস্টের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ মহসিন, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ কমিশনার, কাউন্সিলর মুহাম্মদ মোরশেদুল আলম, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল মহসিন মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান, সমাজসেবক সৈয়দ সেহাব উদ্দিন আলম।
মাহফিল সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক আল্লামা ড. মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ ও জমিয়তুল ফালাহর পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আহমদুল হক।
মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান সমন্বয়ক পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগসহ সর্বস্তরের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদানশিন, আওলাদবৃন্দ, বিভিন্ন মাদ্রাসার আলেমগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া খোরশেদুর রহমান, মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক, সিরাজুল মুস্তফা, মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, আব্দুল হাই মাসুম, আলহাজ¦ দিলশাদ আহমদ, ব্যাংকার এসকান্দর আলম, আবু সাইদ মোহাম্মদ হামেদ, নুর মোহাম্মদ আল কাদেরী, মোহাম্মদ ছালামত উল্লাহ, মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিকদার, এস এম শফি, গাজী মুহাম্মদ ইদ্রিচ চেয়ারম্যান, মাহাবুবুল আলম, মাইনুদ্দীন মিঠু, শাহাব উদ্দিন, জহির উদ্দিন, খোরশেদ আালী চৌধুরী, নাজিব আশরাফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন