ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে এখনো ঝুলছে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছে, শেখ হাসিনার মতো স্বৈরাচারের চিহ্ন এখনও ক্যাম্পাসে থাকাটা অন্যায় ও অনাকাঙ্ক্ষিত। একইসঙ্গে এটি ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই অতিদ্রুত এ ছবি সরিয়ে নিতে হবে, না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গিয়ে খুলে নিয়ে আসবে।
জানা যায়, ঢাবি সমিতির সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। এতে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দল বর্জন করায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের প্যানেল। এর ফলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিনা ভোটে নীল দলের পুরো প্যানেল সমিতির বর্তমানে দায়িত্বে রয়েছে। যদিও ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শিক্ষক সমিতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে সাদা দল।
গত ২২ আগস্ট সাদা দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির বিগত দিনের কর্মকাণ্ড শিক্ষক-শিক্ষার্থী বান্ধব না হওয়ায়, স্বৈরাচারী সরকার ও তাদের দোসরদের অব্যাহত সমর্থন প্রদান করায় এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে প্রত্যাখ্যান করছে সাদা দল সমর্থক শিক্ষকরা।
ঢাবি ক্লাবের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত এই কার্যালয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পূর্বে নিয়মিত বসলেও এখন আর অনিয়মিত বসেন না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বসার চেয়ার পেছনে ঝুলছে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবি। যদিও গত ৫ আগস্টের পর দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় থেকে শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এখনো কেন ছাত্র-জনতা হত্যার অভিযুক্ত শেখ হাসিনার ছবি শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে ঝুলছে জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, একজন পতিত স্বৈরাচারের ছবি এখনো আছে সেটা অনাকাঙ্ক্ষিত। শিক্ষক সমিতি যেহেতু প্রশাসনের অংশ নয়, তাই শিক্ষক সমিতিরই এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন শাওন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, স্বৈরাচারী সরকার ও তাদের দোসরদের কোনো চিহ্ন ক্যাম্পাসে থাকা যাবে না। যদি থাকে তাহলে সেটি ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না। তাই একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে প্রশাসনকে বলবো, আপনার অতিদ্রুত স্বৈরাচারের চিহ্ন ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে নেন। তা না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই দায়িত্ব নেবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন