বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির প্রাসঙ্গিকতা আমাদের ক্যাম্পাসগুলোতে নেই। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসগুলোতে চাঁদাবাজি, ফাউ খাওয়া, গ্রুপিং, সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, মাদকের বিস্তার, শিক্ষার্থী নির্যাতন ইত্যাদি অপকর্মের দায়ও দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির। গত ১৬ বছর ধরে ছাত্রলীগের এসব অপকর্ম ক্যাম্পাস ও শিক্ষার্থীদের জীবনকে নরকে পরিণত করেছে। ছাত্রলীগের নির্যাতনের দুর্বিষহ স্মৃতির দগদগে ঘাঁ এখনো দুঃস্বপ্ন হয়ে শিক্ষার্থীদের জীবনকে তাড়িত করে।
হাসনাত বলেন, মাদার সংগঠনের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করা লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠন কখনোই সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করে না। শিক্ষার্থীদের মতামত ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতেও এসব সংগঠনের নেতৃত্ব নির্ধারিত হয় না। তাই, আমি মনে করি, দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির প্রাসঙ্গিকতা আমাদের ক্যাম্পাসগুলোতে নেই।
আবরার, হাফিজ, আবু বকর, খোকনসহ আরও অনেক রাজনৈতিক হত্যার দায় সরাসরি দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি একটি "গলিত শব"। এই "গলিত শব" থেকে নিঃসরিত পূতিগন্ধ যেন ক্যাম্পাসগুলোতে অসহনীয় ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সেজন্য আমাদের ছাত্র সমাজকে সতর্ক থাকতে হবে, বলেন তিনি।
ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্ররাজনীতি থাকবে ছাত্র সংসদ নির্ভর উল্লেখ করে এ সমন্বয়ক বলেন, ছাত্র সংসদ হবে ক্যাম্পাসভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির গ্রহণযোগ্য উপায়। শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া, চাহিদা, প্রয়োজন বাস্তবায়নের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হবে ছাত্র সংসদ। শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য শিক্ষার্থীরাই গণতান্ত্রিক উপায়ে তাদের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতিতে সুষ্ঠু ও প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃত্ব তৈরি হবে।
সবশেষে, আলোচনা ও সমালোচনার দ্বার উন্মুক্ত। ছাত্ররাজনীতির ফর্মটা সবার আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। রাজনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমের একটি অংশ হলো ছাত্ররাজনীতির কাঠামোগত পরিবর্তন। সে পরিবর্তন কেমন হবে, সে চিন্তা করা ও আলোচনা করা সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব, বলেন তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন