কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বেশ কয়েকটি হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে হল কর্তৃপক্ষ। ছাত্র রাজনীতি আর থাকবে না- এই মর্মে লেখা ভিন্ন ভিন্ন বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন হলের প্রভোস্টরা।
এখন পর্যন্ত ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলগুলো হলো- শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, অমর একুশে হল, রোকেয়া হল, হাজী মহম্মদ মুহসীন হল, কুয়েত মৈত্রী হল, জহুরুল হক হল, রোকেয়া হল, শামসুননাহার হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও সুফিয়া কামাল হল।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ছাত্রীদের লিখিত অঙ্গীকারনামায় প্রথম স্বাক্ষর করেন রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. নীলুফার পারভীন।
রোকেয়া হলের অঙ্গীকারনামায় বলা হয়, ‘আমরা রোকেয়া হলের মেয়েরা আজ এই মর্মে লিখিত নিচ্ছি যে, আজ ১৭-০৭-২০২৪ তারিখ থেকে রকেয়া হলের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের ছাত্র রাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত-শিবির ইত্যাদি) নিষিদ্ধ করা হলো। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল রুম বা গণরুম থাকবে না, কোনো পলিটিক্যাল প্রোগ্রাম হলে হবে না, কোনো ধরনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থাকবে না।
এতে আরও বলা হয়, আমরা হলের মেয়েরা যদি এসব দলের দ্বারা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তাহলে এই দায় প্রশাসন ও হল প্রভোস্টকে নিতে হবে। আজ থেকে রোকেয়া হলকে ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হলো।
একই ধরনের অঙ্গীকারনামায় রাত সোয়া ৩টা নাগাদ স্বাক্ষর করেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট ড. ফারহানা হক।
আধা ঘণ্টার ব্যবধানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন শামসুননাহার হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট হাফসা আক্তার এবং কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট ড. গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী।
প্রায় একই ধরনের অঙ্গীকারনামা বানিয়েছে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও কবি সুফিয়া কামাল ও শামসুন নাহার হলের হলের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ছেলেদের জহুরুল হক হলেও ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার ভোর ৫টায় হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়।
১. শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে স্থায়ীভাবে সকল প্রকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলো।
২. কোনো বহিরাগত হলে অবস্থান করতে পারবে না।
৩. শিক্ষার্থী কোনও প্রকার ক্ষতির (শারীরিক ও মৌখিক) সম্মুখীন হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৪. প্রশাসনিকভাবে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সিট বণ্টনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৫. হলের সকল ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে, মঙ্গলবার রাতে রোকেয়া হলের ছাত্রলীগের সভাপতি পৃথা এবং সাধারণ সম্পাদক আতিকাকে হল থেকে বের করে দেয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা সভাপতি পৃথা এবং সম্পাদক আতিকাকে ধরে নিয়ে হলের গেট থেকে বের করে দিয়েছে। অন্যান্য ছাত্রী হলেও ছাত্রলীগ নেত্রীদের ওপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চড়াও হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন