বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আলেমদের মধ্যে শুধু ঠোঁটের ঐক্য নয়, রূহানী ঐক্য প্রয়োজন। রূহানী ঐক্য হলে আমরা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অবারিত বারাকা লাভ করব। আমরা ঐক্য চাই, আবার বিভিন্ন শর্ত দিয়ে বসে থাকি। একজন শর্ত দিলে তো অন্যজনও শর্ত দেবেন। এভাবে শর্তের বেড়াজালে শেষ পর্যন্ত ঐক্য প্রক্রিয়া কঠিন হয়ে যায়। আমাদের দেশে আলেম উলামার মধ্যে ছোট খাটো বিষয়ে কিছু মতানৈক্য রয়েছে। সবার চিন্তা ও কর্মপরিধি একই ধরণের নয়। কিন্তু যারা জীবনের পাথেয় হিসেবে কোরআনকে কবুল করেছেন, হযরত মুহাম্মদ (স) এর নেতৃত্বকে অকুন্ঠচিত্তে গ্রহণ ও স্বীকৃতি দেন এবং সাহাবায়েকেরাম (রা) কে আল্লাহ ও রাসূল (স) এর আনুগত্যের ক্ষেত্রে বাস্তব মডেল মনে করেন, এই তিন জায়গা ঠিক থাকলে আমাদের মধ্যে ঐক্য হওয়া সম্ভব। এখানে আর কোন কিছু বাধা দিতে পারবে না।”
তিনি ১১ নভেম্বর’২৪ পূর্ব লন্ডনের মায়েদা গ্রিল হলে অনুষ্ঠিত বৃটেনের সর্বদলীয় উলামা সংগঠন “বাংলাদেশি উলামা মাশায়েখ ইউকে” কর্তৃক আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অথিতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশী উলামা-মাশায়েখ ইউকে’র সভাপতি মাওলানা এ কে মওদুদ হাসান এর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মাওলানা শাহ মিজানুল হক-ও মাওলানা এফ কে এম শাহজাহান এর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন কাউন্সিল ফর মস্ক এর ও ইশায়াতুল ইসলামের চেয়ারম্যান মাওলানা হাফেজ শামসুল হক, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি শাহ সদরদ্দীন, দাওয়াতুল ইসলাম ইউকের আমীর শায়খ আব্দুর রহমান মাদানী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ডক্টর শুয়াইব আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ফয়েজ আহমদ প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দ্বীন কেবল একা জামায়াতে ইসলামীর নয়, এটি সবার। সুতরাং আমরা সবাইকে নিয়ে দ্বিনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। সবাইকে ভাই এবং বন্ধু মনে করে বুকে জড়িয়ে ধরে সামনে আগানোর চেষ্টা করব আমরা।
মতবিনিময় সভায় তিনি উপস্থিত উলামা মাশায়েখদেরকে Four Dimensional Way তে দেখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য যত ইসলামী সংগঠন ও মারকায রয়েছে, আপনারা আমাদের মধ্যে কোন ভুল দেখলে আমাদেরকে সংশোধন করে দেয়ার চেষ্টা করবেন। আপনারা এভাবে সহযোগিতা করলে আমাদের জন্য দ্বীনের পথে চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে। আপনাদের ও আমাদের মধ্যে পারস্পরিক দোয়া, ভালবাসা ও সহযোগিতা থাকলে আমরা এগিয়ে যেতে পারব। আমরা কাউকে দালাল মনে করে ইনভেলাপে ঢুকিয়ে দেবনা, বরং ভুল করলে শুধরে দেয়ার নীতি অনুসরণ করব।”
তিনি বৃটেনকে A hub for intellectual excellence হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “বৃটেনকে বিশ্বের বুদ্ধিভিত্তিক চর্চার কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমন একটি পরিবেশে আপনারা আছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়েও বেশি স্বাধীনতা এখানে আপনারা ভোগ করছেন। এখানে আপনাদের মেধার বিকাশের ক্ষেত্রে কেউ বাধা দেয় না। যেমনটি বাংলাদেশে বিভিন্নভাবে বাধা দেয়া হয়। এখানে মেধার চর্চা বেশি হওয়ার কারণে আপনাদের উপর আমাদের হকও বেশি। আপনারা সে হক আদায় করবেন ইনশাআল্লাহ।”
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন