প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘বিশেষ চাপ’ দিয়ে জমি দখল করতেন আমু। প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, ১৪ দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র। জাতীয় নেতা হলেও তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তি সবচেয়ে বেশি ছিল ঝালকাঠিতে।
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ১৬ বছরে একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছিল জেলায়, যারা আমুর হয়ে জেলার সব ধরনের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, নিয়োগ–বাণিজ্য, কমিটি গঠন, নির্বাচনী মনোনয়ন বিক্রি করত। এই চক্রের মাধ্যমে আমু হয়ে উঠেছিলেন ঝালকাঠির গডফাদার।
১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন বাকেরগঞ্জ-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ (মালেক) থেকে। এর পরের যত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিয়েছিল, সব কটিতেই দলের প্রার্থী ছিলেন তিনি।
২০০০ সালের উপনির্বাচনে ঝালকাঠি-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে দায়িত্ব পান শিল্পমন্ত্রীর। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হন আমু।
ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শাহাদাৎ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৬ বছর সব সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনকে কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন আমির হোসেন আমু। নৈশপ্রহরী থেকে শুরু করে সব চাকরিতে আমুকে টাকা দিতে হতো। বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাড়িতে ঘুমাতে পারেননি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা দেশ ছাড়েন। এরপর আমুর ঝালকাঠির বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে ওই বাড়ি থেকে পোড়া-অক্ষত মিলিয়ে প্রায় চার কোটি টাকা ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এর আগেই আমু পালিয়ে যান।
এর পর থেকে আমুর অবস্থান সম্পর্কে জানে না কেউ। তাঁর নামে একাধিক মামলা হয়েছে। ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশনায় তাঁর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। তাঁর পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করা হয়।
যুগান্তর
‘বিএনপি সাংগঠনিক ও মাঠের কর্মসূচিতে নামছে’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে পথ চলতে চায় বিএনপি। এজন্য জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত সরকারের সঙ্গে যাতে কোনো দূরত্ব তৈরি না হয়, এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবে দলটি।
তবে যৌক্তিক সময়ে ভোটের ব্যবস্থা না করলে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে থেকে সরকারের ওপর চাপও তৈরি করবে বিএনপি। সেক্ষেত্রে আন্দোলনের ফসল অন্তর্বর্তী সরকারকে কেউ যাতে ব্যর্থ করতে না পারে, সেজন্য ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের দিন থেকেই নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে দলটি।
পাশাপাশি এ সময়ে ঢাকা মহানগরসহ তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে সাংগঠনিক পুনর্গঠন কার্যক্রম পরিচালনা করবে বিএনপি। জেলা-মহানগর, থানা-উপজেলা-পৌর শাখার মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিষ্ক্রিয় কমিটি ভেঙে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ইতোমধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিষ্ক্রিয় কমিটির তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন কমিটিতে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিলেন-এমন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় দিতে চাই। আমরা আশা করি, সরকার এ সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে সংস্কার কাজ শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দেবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুনর্গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া; সে অনুযায়ী কাজ চলছে।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘কিশোর গ্যাংয়ে বাড়ছে অপরাধ’। খবরে বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে হঠাৎ করে অপরাধ বেড়েছে। পুলিশের মূল্যায়ন হচ্ছে—এর মূলে রয়েছে কিশোর-তরুণ গ্যাং। হত্যা, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি দখল থেকে শুরু করে এসব অপরাধী সুযোগ পেলেই নারীদেরও উত্ত্যক্ত করছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের যেকোনো স্পটে এ ধরনের সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড ঘটলেই তাদের নামটা শুরুতেই উচ্চারিত হচ্ছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন করে কয়েক হাজার কিশোর-তরুণ অপরাধীর তালিকা বানিয়ে পুলিশ এরই মধ্যে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযানেও নেমেছে। পুলিশের একাধিক প্রতিবেদনে কিশোর-তরুণ অপরাধীদের ব্যাপারে এ ধরনের নেতিবাচক তথ্য উঠে এসেছে।
বিগত সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলের আগে রাজধানীতে অন্তত ১২৭টি কিশোর গ্যাং গ্রুপ সক্রিয় ছিল। সারা দেশে ছিল ২৩৭টি।
এসব গ্যাংয়ের সদস্য ছিল দুই হাজারের বেশি। প্রতিটি থানায় তাদের তালিকা ছিল। পুলিশের দাবি মতে, গত ৫ আগস্টের আগে ও পরে দেশের বেশির ভাগ থানা নাশকতায় ধ্বংস হওয়ায় সেই তালিকাও ধ্বংস হয়ে গেছে। সংগত কারণে এখন নতুন করে কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা তৈরি করা লাগছে।
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি কিশোর অপরাধের মাত্রা যেভাবে বাড়ছে, তা নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে কিশোর কারাগার ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। কিশোর সংশোধন কেন্দ্রগুলোকে আরো সময়োপযোগী করে সংশোধন কার্যক্রম পরিচালনায় সক্ষম করে গড়ে তোলা যেতে পারে। তবে এই কিশোর গ্যাং নির্মূলে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও অভিভাবকদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
সমকাল
দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর ‘বিএনপির নেতাকর্মীর কাঁধে এখনও দেড় লাখ মামলা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে পাইকারি গ্রেপ্তারের পাশাপাশি গণহারে মামলার সাজা দেওয়া শুরু হয়। ওই সময় প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন ঢাকার বিভিন্ন আদালত। এর মধ্যে মৃত আর গুমের শিকার নেতাকর্মীও বাদ যাননি। এ ধরনের চার গায়েবি মামলায় সাড়ে ১২ বছরের সাজা হয় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানের বিরুদ্ধে।
তাঁর বিরুদ্ধে বিগত ১৭ বছরে ২১২টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অনেক কিছুর পট পরিবর্তন আর রদবদল হলেও রাজীবের মামলার ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এখনও তাঁকে ওইসব রাজনৈতিক মামলায় নিয়মিত আদালতের এক বারান্দা থেকে আরেক বারান্দায় ছুটতে হচ্ছে। আগের মতো গ্রেপ্তার আতঙ্ক না থাকলেও মামলার ভাগ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। ফেরারি জীবন থেকে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারলেও অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতায় এখনও শিউরে ওঠেন রাজীবসহ তাঁর পুরো পরিবার। এসব মামলায় না জানি কখন কী হয়– এমন ভাবনায় আতঙ্কে কাটে তাদের সময়।
মাত্র তিন বছর বয়সী ছেলে ফাইয়াজ মাসুদকে রেখে বিদেশে পাড়ি দিতে হয়েছিল ঢাকা মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য মাসুদ রানাকে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৩৭টি রাজনৈতিক মামলা। প্রতিটি মামলাতেই রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার পর জীবন বাঁচাতে ২০১৯ সালের এপ্রিলে পাড়ি দেন যুক্তরাষ্ট্রে।
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে দেশের মানুষের মুক্তি মিললেও দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি। মামলা জটিলতায় বিদেশে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন, কবে মামলার অবসান ঘটবে। কবে দেশে ফিরতে পারবেন, আবার কবে সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করতে পারবেন মাসুদ।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর ‘শিক্ষার্থীদের দিয়ে ডাকাতির চেষ্টা করেছিল পেশাদার চক্র’। প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের দিয়ে রাজধানীতে বাসা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে দস্যুতা ও ডাকাতি করানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায় থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষার্থীদের দিয়ে ডাকাতি করানো হচ্ছে।
চোর-ডাকাতদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এসব শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে। ঢাকার নামিদামি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে ১৩ ডাকাত। এদের মধ্যে আট জনই শিক্ষার্থী। এরা সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে আন্দোলন করেছে। বাকি তিন জন ডাকাতির পরিকল্পনাকারী এবং শিক্ষার্থীদের ব্যবহারকারী সিন্ডিকেটের সদস্য।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সফলতাকে পুঁজি করে দীর্ঘদিন ধরে চুরি-ডাকাতির কাজে জড়িতরা এসব শিক্ষার্থীকে ব্যবহার করছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের সচেতন হতে হবে। শিক্ষার্থীরা নগরবাসীর অপরাধ তদন্ত করতে কখনই বাসাবাড়িতে প্রবেশ করবে না। তাই যখনই এরকম ঘটনা ঘটবে, ভুক্তভোগীদের নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে হবে।
গত বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে ধানমন্ডির ১৩/এ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাসায় অর্থ, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাটের জন্য কয়েক জন প্রবেশ করে। তারা বাসায় প্রবেশ করেই ওই বাসার সিকিউরিটি গার্ডদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পথচারীদের সহায়তায় কয়েক জনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের আটক করে। তাদের দেওয়া তথ্য থেকে মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি লোহার রড ও পাঁচটি বাঁশের লাঠি জব্দ করা হয়।
নয়া দিগন্ত
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের অপরাধ নিয়ে দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর ‘কিলার বাদল ও কাইল্যা সুমনের ইশারায় চলে অপরাধ জগৎ’। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী বাদল ওরফে কিলার বাদল ও কাইল্যা সুমনের নেতৃত্বে এলাকায় বেশ কয়েকটি ভয়ঙ্কর কিশোর গ্যাং চক্র গড়ে উঠছে। দু’জনের নির্দেশে এ চক্রের সদস্যরা মোহাম্মদপুরজুড়ে খুন, ছিনতাই, মাদক বিক্রি, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির আধিপত্য বিস্তার করেছে।
সূত্র জানায়, কিলার বাদল ও কাইল্যা সুমনের বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ অন্তত শ’খানেক মামলা রয়েছে। তাদের অন্যতম সহযোগী হিসেবে লালু উদ্দিন লালু অন্যতম। বাদলের নির্দেশে লালু কিশোর গ্যাং সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
সম্প্রতি মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাং চক্র আবারো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। পরপর কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘটনায় নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের যৌথ অভিযানে কয়েক দিনে গ্রেফতার হয়েছে প্রায় এক শ’ সন্ত্রাসী। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অভিযানের মধ্যে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে মোহাম্মদপুরের অপরাধ জগতের মূল হোতা কিলার বাদল ও কাইল্যা সুমন।
স্থানীয়দের মতে, বর্তমানে কিলার বাদল ও কাইল্যা সুমনকে কেউ না দেখলেও তাদের ইশারায় পুরো মোহাম্মদপুরের অপরাধজগৎ চলে। তার হাতিয়ার হিসেবে কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যরা চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ভূমি দখল ও হামলাসহ ভয়ঙ্কর কাজ করছে। সড়ক ও ফুটপাথ দখল করে দোকানপাট বসিয়ে টাকা আদায়, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।
কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে অথবা জমি দখলে বাধা দিলে কুপিয়ে হত্যা আবার কখনো গুরুতর আহত করা হয়। বাদলের ভয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা মুখ খুলতে সাহস পান না। তার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে সহযোগী লাল্লু, ইমন ওরফে জুট ইমন, ঘাট বাবু, গ্যারেজ সোহেল, বাত রাসেল, মাহিসহ অনেকে। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি ও অপহরণের মামলা রয়েছে।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘বিপুল অংক ব্যয়ে নির্মিত মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন বসিয়ে রাখতে হচ্ছে’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে নির্মিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে জাপানি ঋণে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ৫৭ হাজার কোটি টাকা।
১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে উৎপাদন এখন বন্ধ। কয়লা আমদানি করতে না পারায় এখান থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করতে সময় লেগে যেতে পারে চলতি মাসের শেষ নাগাদ।
কয়লা সংকটের কারণে গত ২৫ অক্টোবর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে এর দুটি ইউনিটই অলস বসিয়ে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কমিশনিংয়ের পর থেকে এর কয়লা আনা হচ্ছিল জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে। গত আগস্টে জাপানি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যায়। এরপর নতুন টেন্ডারের মাধ্যমে পরবর্তী সরবরাহকারী কোম্পানি নির্বাচনের কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রটিতে কয়লা সরবরাহের কাজ পেতে ঠিকাদারি বেশ কয়েকটি বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান দুই মাস ধরে নানাভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এতে বিলম্বিত হয় কেন্দ্রটির কয়লা আমদানিসংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদনের প্রক্রিয়া। আবার বিদ্যুৎ প্রকল্পের শীর্ষ কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ও দুর্নীতি মামলা চলমান রয়েছে। গোটা প্রক্রিয়াটি আরো দীর্ঘায়িত হওয়ার পেছনে এগুলোরও প্রভাব পড়েছে বলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রসংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘One-stop crisis centre: Conviction in less than 2pc cases’ অর্থাৎ ‘ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার: ২ শতাংশেরও কম ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত হয়’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারগুলোর সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুদের ব্যাপক সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা, পুলিশ সহায়তা, আইনি সহায়তাসহ অন্যান্য সেবা প্রদান করার কথা। তবে এই কেন্দ্র থেকে সহায়তা নেয়া বেশিরভাগ ভুক্তভোগী মামলা করেন না।’
মামলা না করার কারণ হিসেবে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কেননা মামলা চালিয়ে যাওয়া, খরচ বহন করা এবং সামাজিক চাপ সহ্য করা অনেকের জন্যই কষ্টাসাধ্য। আবার মামলা করতে চাইলেও সামাজিক চাপ এবং অপরাধীদের হুমকির কারণে সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে যায়।
২০০১ সালে সর্বপ্রথম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) এবং পরবর্তী ১০ বছরে আরও ১৩টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোলা হয়েছিল বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।
আজকের পত্রিকা
‘আদানির কেন্দ্র বন্ধে লোডশেডিংয়ে চাপ’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, ডলার-সংকটের কারণে ভারতের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ আদানিকে বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ। ৮৮৬ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১০ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা) বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে ভারতের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের একটি বন্ধ করে দিয়েছে আদানি।
ঝাড়খন্ডে বাংলাদেশের জন্য নির্মাণ করা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুই ইউনিট থেকে দৈনিক বাংলাদেশকে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছিল আদানি। গত বৃহস্পতিবার ৭০০ ইউনিটের একটি কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশে তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছে। এতে দেশে লোডশেডিং বেড়ে প্রায় ১৫০০ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে বলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে জানা গেছে।
পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, গত ২৭ অক্টোবর আদানি বিদ্যুৎসচিবকে চিঠি দিয়ে বিল পরিশোধের দাবি জানায়। চিঠিতে পিডিবির বিপুল পরিমাণ বিল বকেয়া থাকা, ঋণপত্র না পাওয়ার কারণে কয়লা সরবরাহকারী ও কেন্দ্র পরিচালনাকারী এবং ঠিকাদারদের অর্থ পরিশোধে সমস্যার কথা জানায় আদানি। ওই চিঠিতে তারা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল, এর মধ্যে অর্থ না দিলে আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছিল। এই সময়ে অর্থ পরিশোধ না করায় গত ৩১ অক্টোবর মধ্যরাতে আদানি দুটি ইউনিটের একটি বন্ধ করে দেয়।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বকেয়া পরিশোধের জন্য অনুরোধ জানিয়ে আসছিল আদানি। আদানি গ্রুপের প্রধান গৌতম আদানি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়ে বিদ্যুতের অর্থ পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, পিডিবি আদানিকে অর্থ দিতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ঋণপত্র খোলে। তবে ডলার-সংকটের কারণে সেই ঋণপত্রের অর্থ পরিশোধ করা যায়নি।
দেশ রূপান্তর
দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘বিএনপির নির্বাচনমুখী ঐক্য চিন্তা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছে বিএনপি। এর পাশাপাশি যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের এলাকায় সাংগঠনিক কর্মকা- ও জনসংযোগে সহায়তা করার জন্য স্থানীয় নেতাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সমমনা ও অন্যান্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করছে দলটি।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ, সংবিধান বাতিল ইস্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি বিএনপির সায় পায়নি। সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপি বলেছে, এ উদ্যোগের পেছনে ষড়যন্ত্র আছে। এতে করে নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে এবং এর সুযোগ নিতে পারে ক্ষমতাচ্যুত গোষ্ঠী। পাশাপাশি বিএনপি এসব ইস্যুতে না গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সরকার ইতিমধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি করেছে।
বিএনপির একাধিক সূত্র বলেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো নির্ধারণ হয়নি। তবে নির্বাচনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপে রাখার কৌশলের অংশ হিসেবে ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের আরও সক্রিয় রাখতে আগামী মাসে দেশের সব মহানগরসহ বিভাগীয় জেলাগুলোতে ১০ দিনের কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত রয়েছে দলটির।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মাঠপর্যায়ে কাজ করতে না পারা বিএনপি ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে তৃণমূলে সাংগঠনিক কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি নির্বাচনের বিষয়টি মাথায় রেখে দলের কর্মকা-পরিচালনা করছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাংগঠনিকভাবে মাঠে থাকার নির্দেশনা রয়েছে। একইভাবে নির্বাচন ঘিরে ঐক্য জোরালো করতে উদ্যোগ নিয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন