ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশটির সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বর্তমানে দিল্লিতেই অবস্থান করছেন তিনি। লোধি গার্ডেনের লুটেনস বাংলো জোনের এক সুরক্ষিত বাড়িতে তাঁকে থাকতে দিয়েছে ভারত সরকার। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার বরাত দিয়ে দেশীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, শেখ হাসিনা দ্রুত দেশে ফিরে আসতে পারেন। দাবিটি ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
1‘দেশে ফিরতে পারেন শেখ হাসিনা’—ভয়েস অব আমেরিকার বরাতে দেশীয় সংবাদমাধ্যমে ভিত্তিহীন দাবি। ছবি: ফেসবুক এই দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করেছে দৈনিক জনকণ্ঠ, মানবকণ্ঠ, সময়ের কণ্ঠস্বর।
দৈনিক জনকণ্ঠে গত রোববার (২৭ অক্টোবর) ‘পাল্টা রেভ্যুলেশনে যাচ্ছেন হাসিনা, নাকি মার্শাল ল!!’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, ‘ছাত্র–জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার দ্রুত দেশে ফিরে আসতে পারেন বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা। আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতার বরাতে তারা জানায়, শিগগিরই দেশে ফিরে এসে অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করতে পারে পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
‘দেশে ফিরতে পারেন শেখ হাসিনা’—ভয়েস অব আমেরিকার বরাতে দেশীয় সংবাদমাধ্যমে ভিত্তিহীন দাবি। ছবি: জনকণ্ঠ‘দেশে ফিরতে পারেন শেখ হাসিনা’—ভয়েস অব আমেরিকার বরাতে দেশীয় সংবাদমাধ্যমে ভিত্তিহীন দাবি। ছবি: জনকণ্ঠ দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভয়েস অব আমেরিকার ওয়েবসাইটে গত শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) ‘ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী হাসিনার দল বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছে’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটিতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সফিউল আলম চৌধুরীর বরাত দিয়ে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করতে পারে। সফিউল আলম ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, ‘আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি ও রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা করছি।’
সফিউল আলম চৌধুরী গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়েছেন। টেলিফোন সাক্ষাৎকারে সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি জানান, দলটি নেতা–কর্মীদের একত্রিত করতে কাজ করছে এবং অন্তর্বর্তী সরকার–বিরোধী আন্দোলন শুরু করতে সমমনা রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আগামী দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস পর দলটি মাঠে নামতে পারে।
সুতরাং এটি নিশ্চিত, ভয়েস অব আমেরিকার বরাত দিয়ে শেখ হাসিনার দ্রুতই দেশে ফেরত আসার দাবিতে দেশীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত দাবিটি সঠিক নয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন