গাজীপুরে শহরে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির দুই নেতা গুলিবিদ্ধসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের কৃপাময়ী কেন্দ্রীয় কালীমন্দিরে আলোচনা সভা ও উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন: মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও ২৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উপদেষ্টা সাবেদ তালুকদার (৫২)। তাদের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া চাপাতির কোপে গুরুতর আহত যুবদল নেতা অলিউল্লাহ তুহিনকে (৩৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তবে তার দলীয় পদবী জানা যায়নি।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম ওরফে রনির পক্ষে জেলা শহরের কৃপাময়ী কেন্দ্রীয় কালি মন্দিরে আলোচনা সভা ও উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঞ্জুরুল করিম বর্তমানে দেশের বাহিরে থাকায় তার অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর সদর থানার সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বিএনপি নেতা জিএস সুরুজ আহমেদ, সিটির ২৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হান্নান মিয়া ও মহানগর কালীমন্দিরের সদস্য সচিব বাপ্পি দে। দুপুর সোয়া ১টার দিকে অনুষ্ঠান শেষ হলে অতিথিরা চলে যান।
নেতাকর্মীরা আরও জানান, পরে অতিথিরা কালীমন্দিরের বাহিরে রেলক্রসিং এলাকায় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে নিজেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে মন্দিরের সামনে সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের অনুসারী যুবদল নেতা অলিউল্লাহ তুহিনের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন মহানগর বিএনপি নেতা মোফাজ্জল হোসেনের অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা খন্দকার রুবেল ও রাজু সাহা।
এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে চাপাতির কোপে আহত হন অলিউল্লাহ তুহিন ও গুলিবিদ্ধ হন যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম ও সাবেদ তালুকদার। পরে আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এ সময়ে শহর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মহানগর বিএনপির একটি সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক মাস আগে শহরের উত্তর ছায়বিথী এলাকায় এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, ‘মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল কবির ওরফে রনি সোমবার দুপুরে মন্দিরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানে তার পক্ষের নেতাকর্মীরাই উপস্থিত ছিলেন। মঞ্জুরুল করিম বর্তমানে দেশের বাহিরে রয়েছে, তিনি মোবাইল ফোনে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখা অবস্থায় তার কর্মীদের দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। একপর্যায়ে গোলাগুলিও হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিষয়টি তদন্ত করে দল অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।’
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শেখ ফরিদ বলেন, ‘বেলা আড়াইটার দিকে পিঠে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।’
গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাহেদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চলে যাওয়ার পর কিছু হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। তবে পরে সংঘর্ষের কথা শুনছি।’
তবে মহানগর বিএনপি নেতা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়টি তার জানা নেই।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন