নয়াপল্টন অভিমুখে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচি মোকাবিলায় কাল রোববার সকাল থেকেই রাজধানীর আটটি পয়েন্টে পাহারা দেবে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া দলটির সাংগঠনিক ১০০টি ওয়ার্ড ও ১৮টি ইউনিয়নে দলের নেতা-কর্মীরা মাথায় পতাকা বেঁধে লাঠি হাতে অবস্থান করবেন। ঢাকা মহানগরের শীর্ষস্থানীয় নেতারা ‘প্রথম আলো’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যে আটটি পয়েন্টে পাহারা দেওয়া হবে, সেগুলো হলো—
১. গাবতলী ও আমিনবাজার: এ এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হলেন স্থানীয় সাংসদ আসলামুল হক, ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা ও মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা। এ ছাড়া এই টিমটি মিরপুর-১-এ অবস্থান নেবে। জানতে চাইলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই এলাকায় আমরা অবস্থান নেব। হয় আমরা, থাকব নয়তো তারা থাকবে।’
২. উত্তরা, আজমপুর ও বিমানবন্দর: এ এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হলেন স্থানীয় সাংসদ সাহারা খাতুন, বিমানবন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাকছুদুর রহমান ওরফে মাছুম, উত্তরা থানার সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসানসহ স্থানীয় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাকছুদুর রহমান বলেন, ‘বিমানে করে এসে নাশকতার চেষ্টা যেন করতে না পারে, এ জন্য হাজি ক্যাম্পের সামনে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে আমরা অবস্থান নেব।’
৩. সদরঘাট, সোয়ারীঘাট ও বাবুপুরা ব্রিজ: এ এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হলেন স্থানীয় সাংসদ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। সঙ্গে থাকবেন কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ওরফে পর্বত, সূত্রাপুর থানা সভাপতি আবু আহাম্মেদ মান্নাফী প্রমুখ। জানতে চাইলে ফজলুর রহমান পর্বত বলেন, ‘আমরা যারা বয়স্ক, তারা নয়াবাজারসহ বাবুপুরা ব্রিজ এলাকায় অবস্থান নেব। আর ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে সদরঘাট এলাকায় পাহারাতে বসাব।’
৪. কমলাপুর রেলস্টেশন: মালিবাগ মোড়, শাহজাহানপুরের আমতলা, আইডিয়াল স্কুলের সামনে এবং কমলাপুরে আইসিডি মোড়ে অবস্থান নেবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে কমলাপুরে প্রতিরোধে নেতৃত্ব দেবেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান এবং সাধারণ সম্পাদক সেকান্দার। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ কমলাপুর রেলস্টেশনের রাস্তায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। জানতে চাইলে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু ‘প্রথম আলো’কে বলেন, ‘জীবন দিয়ে হলেও এই এলাকায় আমরা অবস্থান নেব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
৫. ডেমরা, শ্যামপুর ও যাত্রাবাড়ী: আওয়ামী লীগের এ এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হলেন স্থানীয় সাংসদ সানজিদা খানম, ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ ওরফে মুন্না। আগামীকাল ভোর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অবস্থান নেবেন।
জানতে চাইলে হারুনর রশীদ বলেন, ‘যাত্রাবাড়ীতে থাকব। জনগণের প্রোটেকশনে নামব। কাউকে বিশৃঙ্খলা করতে দেব না।’
৬. ফার্মগেট: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার প্রবেশমুখ হলো ফার্মগেট। তাই ফার্মগেট এলাকাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট মনে করছে দলটি। এই এলাকায় পাহারার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হলেন স্থানীয় সাংসদ আসাদুজ্জামান খান ওরফে কামাল। এ ছাড়া তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসানের নেতৃত্বে ফার্মগেট এলাকায় স্থানীয় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ অবস্থান নেবে।
৭. মহাখালী: এ এলাকায় অবস্থান নেবেন ক্যান্টনমেন্ট ও গুলশান থানা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। জানতে চাইলে গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াকিল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান নেব।’
৮. তুরাগ থানা এলাকা: আশুলিয়া ও আবদুল্লাপুর এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগ এ এলাকায় অবস্থান নেবে। এ ছাড়া তাদের সহায়তা করবেন গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। জানতে চাইলে তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হালিম ‘প্রথম আলো’কে বলেন, ‘স্থানীয় নেতাদের নিয়ে আমরা এ এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেব। মায়া ভাইয়ের ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীতে কাউকে প্রবেশ করতে দেব না।’
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ওরফে মায়া বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা যাতে রাজধানীতে ঢুকতে না পারে সে জন্য নেতা-কর্মীদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, ঢাকার আশপাশের জেলার নেতাদেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ওই সব এলাকা থেকে ঢাকায় যেন কোনো লোক না আসতে পারে।
শক্তির মহড়া: এদিকে আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর প্রায় সব কটি থানা ও ওয়ার্ডে লাঠি হাতে পতাকা মিছিল করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সেগুনবাগিচা, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় পতাকা হাতে লাঠিমিছিল করতে দেখা যায়।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন যুবলীগ-ছাত্রলীগ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে করে আগামীকাল খালেদা জিয়ার ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন।
পাঠক মন্তব্য
খমতার জোরে আওয়ামী লীক এত নিচে নামতে পারে,তা নিজের চোখে না দেখলে কেউ বিশবাসাশ করতে পারবেনা!
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন