রাজধানীতে ফের দীর্ঘ যানজট লক্ষ্য করা গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুরোদমে ক্লাস শুরু হওয়ায় দ্বিতীয় দিনের মতো তীব্র যানজটের কারণে ব্যাপক দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন অনেকে।
এ সময় অনেক বাসের চালকদের ঘুমাতে দেখা গেছে। বাসচালক জ্যামে বসে ঘুমাচ্ছেন এমন বেশ কয়েকটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক যাত্রীকেও ঘুমাতে দেখা গেছে। তাদের ভাষ্য, তীব্র রোদ আর জ্যামে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে বাসা থেকে বের হওয়াই দুষ্কর।
বাসের যাত্রী ও স্টপেজে নেমে যাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকেই নির্ধারিত অফিস সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি।
এ দিকে বাসে চালকের ঘুমানোর ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে নানা মন্তব্য লিখছেন। রওনক লিখছেন, ‘ঢাকার রাস্তার বাস্তবতা।’ রিপন শামসুল নামে একজন লিখেছেন, ‘উন্নয়নের রাজধানীতে বাসচালকের শান্তির ঘুম।’ কেউ ‘সবাইরে ঘুমায়ে রাখার পদ্ধতি; প্রশ্ন না রাখার ঘুম।’ প্রভৃতি।
রাজধানীর ধানমন্ডি, গাবতলী, মতিঝিল, মুগদা, মিরপুর, উত্তরা, মহাখালী, শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট ও গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
গতকালের মতো আজ বুধবার সকালেও পরিস্থিতি ভয়াবহ ছিল এবং স্কুল ও অফিসগামীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সংবাদকর্মী মাহবুবুল আলম তারেক অফিস আওয়ারের দেড় ঘণ্টা আগে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে বের হন। কিন্তু ৪৫ মিনিটের রাস্তায় তাকে বসে থাকতে হয়েছে এক ঘণ্টারও বেশি সময়। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, গরম, যানজট এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টের স্বল্পতার কারণে বিরক্তিকর মনে হয়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রিক অধিকাংশ দাপ্তরিক কাজকর্ম, শিল্পকারখানা হওয়ায় এই যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এয়ারপোর্ট থেকে সকাল বেলা বাংলামোটর আসতে সময় লাগে বড়জোর ৪০ মিনিট। কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে বাসে উঠে পুরো আড়াই ঘণ্টা বসে থাকার পরও গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে ওয়াহেদ সুজন নামের আরেকজন সংবাদকর্মী বাকি পথ রিকশা নিয়ে পৌঁছান।
এতে তার যাতায়াত খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনি গরমে এমন ভোগান্তি তাকে অস্বস্তিতে ফেলেছে বলে জানান তিনি।
যানজট সম্পর্কে জানতে চাইলে একটি বাসের সহকারী ফারুক বিরক্তি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'গতকাল থেকে সব স্কুল খোলার পর পরিস্থিতি ভয়াবহ। আমাদের গাড়ির চাকা ঘুরেছে না। অনেকক্ষণ সিগনালে আটকে থাকতে হচ্ছে।'
বেসরকারি চাকরিজীবী এনাম হোসেন সাধারণত মুগদার বাসা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ফার্মগেটে অফিসে যান।
গতকালের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে, তিনি প্রথমে একটি বাসে ওঠেন এবং পরে আরও ২টি পরিবহন পরিবর্তন করেন। অবশেষে হেঁটেই অফিসে পৌঁছান।
যানজটে গাড়ি আটকে থাকায় অনেক অভিভাবককে তাদের গাড়ি রেখে রিকশায় করে তাদের সন্তানদের স্কুল থেকে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন