দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী।
শনিবার (৩ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতি তিনি এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, খাদ্যপণ্য নিয়ে প্রকার বাণিজ্য বন্ধ করে ভর্তুকি মূল্যে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু ও গ্রাম শহরের গরীব মানুষের জন্য রেশন চালুর জোর দাবি জানাচ্ছি। মূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনগণের তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার, টিসিবি'র পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলেরও দাবি জানান বাসদের এ নেতা।
মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, বাস লঞ্চসহ গণপরিবহনের ভাড়া শতকরা ৬০ ভাগ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। করোনা সংক্রমণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে এই ভাড়া বৃদ্ধির কথা বলা হলেও বাস্তবে ৫০ ভাগ আসন খালি রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মানা এসব কোনটাই কার্যকর নেই। বাস লঞ্চ ভর্তি যাত্রী নিয়ে এই বর্ধিত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রতি কিলোমিটারে মিনিবাসে ১ টাকা ৬০ পয়সা ও বড় বাসে ১ টাকা ৭০ পয়সা, দূরপাল্লার বাসে প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা, ঢাকায় সর্বনিম্ন প্রতি কিলোমিটারে ৫ টাকা ও বড় বাসে ৭ টাকা ইতিমধ্যে নির্ধারিত আছে। দূরপাল্লার বাসে ফেরী বা টোল যুক্ত হয় বলে প্রতি বাসে ১৫% থেকে ২০% আসন ফাঁকা থাকবে ধরে নিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। ফলে ঢাকার বাসে ২০% ও দূরপাল্লার বাসে ১০% ফাঁকা থাকার কথা। আর ঢাকায় এমনিতেই ২০% থেকে ৪০% আসন মালিকরা বাড়িয়ে নিয়েছে। ফলে ৫০% আসন ফাঁকা রাখলেও লোকসান হওয়ার কথা নয়। বাস্তবে ৫০% আসন ফাঁকা রাখা হয় না। আবার অনেক ক্ষেত্রে দ্বিগুণ ভাড়া নেয়া হচ্ছে। সিটিং সার্ভিসের নামে শতভাগ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এসি বাসের ভাড়া মালিকরা নিজেরাই নির্ধারণ করে। এসব বাসের ২০% থেকে ৩০% ফাঁকা থাকলেও তাদের লোকসান গুনতে হয়না।
বাসের মালিকরা বাস্তবে সরকারি দলের নেতা দাবি করে বাসদের একাংশে এ নেতা বলেন, সাধারণ মালিকদের বাসও নেতাদের অধীনে, তাদেরই নির্ধারিত চুক্তিতে চলে। ফলে ৫০% ফাঁকা রাখলেও লোকসান হয়না। উপরন্তু এসব সরকারি দলের মালিক ও শ্রমিক নেতারা প্রতি বাস থেকে দৈনিক ৭০ টাকা চাঁদা আদায় করে। মালিক সমিতি ৪০ টাকা, শ্রমিক ইউনিয়ন ৩০ টাকা পায়। যা বছরে ২ হাজার কোটি টাকা। এর সমস্তই বাস্তবে ভাড়ার মধ্যে যুক্ত করে জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দেয়া হয়। করোনার সময়ে ভারত যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ভর্তুকি দিতে আমরা দেখেছি। ফলে বর্তমান সময়ে করোনার অযুহাতে ভাড়া বৃদ্ধি অত্যন্ত অযৌক্তিক।
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী একইসাথে ১ এপ্রিল থেকে টিসিবি'র সয়াবিন তেল প্রতি লিটারে ২০ টাকা, চিনি ৫ টাকা, পেঁয়াজ ৫ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তিনি বলেন, টিসিবি কর্তৃপক্ষ বাজারে পণ্যের দাম বেশি বলে তথাকথিত 'মূল্য সমন্বয়' এর দোহাই দিচ্ছে ও দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত লঘু করে দেখাতে চাইছে। তারা টিসিবির পণ্য নিয়ে 'অসাধু কাজ' হওয়ার আশংকার খোঁড়া যুক্তি দিচ্ছে। তাহলে টিসিবি কি মুক্তবাজার অর্থনীতির নিয়মে কাজ করবে? তথাকথিত 'অসাধু কাজ' এর সাথে তাল মিলিয়ে চলবে? তাহলে এ সংস্থার থাকার দরকার কি? বাস্তবে ভর্তুকি দেয়াই তো তাদের কাজ হওয়ার কথা। বর্তমান সময়ে যখন মানুষের আয় কমেছে, দারিদ্র বেড়েছে তখন এই মূল্য বৃদ্ধি ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা” স্বরূপ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন