ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) যে ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি পরিচ্ছন্ন থাকবে এবং কম মশা পাওয়া যাবে সে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং তার টিমকে আগামী ডিসেম্বর মাসে স্বর্ণপদক দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সংস্থাটির মেয়র আতিকুল ইসলাম।
শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরে ডিএনসিসির নগর ভবনে সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রম পরবর্তী এক মতবিনিময় সভায় এই ঘোষণা দেন তিনি।
সভায় সদ্য সমাপ্ত সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রম সম্পর্কে ডিএনসিসির বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী, মশক নিধন কর্মী, পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক, মশক সুপারভাইজারেরা তাদের মতামত দেন। মেয়র সকলের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সে অনুযায়ী আসন্ন বর্ষা মৌসুমে মশক নিধন কার্যক্রমের জন্য দিক নির্দেশনা দেন।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘যতো বেশি আত্মসমালোচনা করা যাবে, ততো বেশি গ্যাপ কমানো যাবে। অভিযান চলাকালে আমি আমাদের ১২শ’ মশক নিধন কর্মীর হাজিরা দেখতে চাই, কিন্তু সেটা পাইনি। তাই প্রত্যেক মশক সুপারভাইজারকে তার নিজ নিজ ওয়ার্ডের মশক নিধন কর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা নিশ্চিত করতে হবে।’
বায়োমেট্রিক হাজিরা ও ট্র্যাকার স্থাপনের জন্য তিনি আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেন। এপ্রিলের ২০ তারিখের মধ্যে এই কাজটি সম্পন্ন করার জন্য সময় বেধে দেন।
মেয়র বলেন, ‘ট্র্যাকার লাগিয়ে প্রত্যেক মশক নিধন কর্মীকে মনিটরিং করতে হবে। মশক নিধন সুপারভাইজারগণ মনিটরিং করবেন। কাউন্সিলরগণও মনিটরিং করবেন।’
আগামী শনিবারের মধ্যে (২৭ মার্চ) প্রত্যেক ওয়ার্ডের ডোবা, জলাশয়, পরিত্যক্ত জমি ইত্যাদির তালিকা প্রণয়ন করে জমা দিতে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন মেয়র আতিক।
পরের শনিবারের মধ্যে (৩ এপ্রিল) সকল ডোবা, জলাশয়, পরিত্যক্ত জায়গা ইত্যাদির মালিকদের নিজ নিজ ডোবা, জলাশয়, পরিত্যক্ত জমি ইত্যাদি পরিষ্কারের জন্য চিঠি দেয়ার জন্য মেয়র নির্দেশ দেন। যারা পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে এর পরের শনিবার থেকে (১০ এপ্রিল) গণহারে মামলা করারও তিনি নির্দেশ দেন।
মেয়র বলেন, ‘যার জায়গা তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি মালিকানাধীন যাই হোক না কেন সবার প্রতি এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। যার যার ডোবা তারা নিজেরা পরিষ্কার করবেন, অন্যথায় যেখানেই ময়লা পাওয়া যাবে, সেখানেই মামলা দেয়া হবে।’
মশক নিধন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার নির্দেশনাও প্রদান করেন আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অঞ্চল ভিত্তিক মশক নিধন কর্মীদের জন্য তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।’
এছাড়া মশার হটস্পট বের করার জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর, রোড ইন্সপেক্টর, সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, কীটতত্ত্ববিদ, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণকে নির্দেশ দেন মেয়র।
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এপ্রিল মাস থেকেই জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করা হবে বলে মেয়র জানান। এছাড়া ডোবা, নালা, জলাশয়ে মশার প্রজনন রোধ করার জন্য ম্যালেরিয়া ওয়েল বি প্রয়োগের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া ওয়ার্ডের আয়তন এবং জনঘনত্ব অনুযায়ী মশক নিধন কর্মী পদায়নের নির্দেশ দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর সাইদুর রহমান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়েদুর রহমান, বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান, আবদুল মতিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন