চার খাল উদ্ধারে ৯৮১ কোটি টাকার প্রকল্প প্রজেক্ট কার্যকরের পর মেইনটেনেন্সে গুরুত্ব দিতে হবে : ড. শামসুল হক ওয়াসা, রাজউক, জেলা প্রশাসন ও নদী উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতা দরকার : স্থপতি ই
আষাঢ়-শ্রাবণে সামান্য বৃষ্টিতেই আর ডুবে যাবে না রাজধানী ঢাকা শহর। মুষলধারে বৃষ্টি হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পানি খাল ও ড্রেন দিয়ে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালু নদীতে নেমে যাবে। ফলে বৃষ্টির দিন মহানগরীর রাজপথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে ভোগান্তি পোহাতে হবে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কালুনগর, জিরানি, মান্ডা ও শ্যামপুর খাল উদ্ধার করে দৃষ্টিনন্দন করা হলেই বৃষ্টির পানি আটকে থাকত না নগরের অলিগলিতে। এই চারটি খালের অবৈধ দখল মুক্ত করে খননের লক্ষ্যে ৯৮১ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে ডিএসসিসি। এ ছাড়াও ধোলাইখাল বক্স কালভার্ট, পান্থপথ বক্স কালভার্ট ও সেগুনবাগিচা বক্স কালভার্ট পরিষ্কারে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্পও নেয়া হচ্ছে। তার সঙ্গে খাল থেকে আবর্জনা অপসারণের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প। এই প্রকল্পের কাজ হলে বদলে যাবে রাজধানী ঢাকার চিত্র।
জানতে চাইলে রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প, ধানমন্ডি লেকসহ দেশের বিভিন্ন প্রকল্পের নকশাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, জনগণ ইতোমধ্যে এসব প্রজেক্টের নামে প্রতারিত হয়েছে। জনগণ ইতোমধ্যে এই নামের প্রকল্পের নামে প্রতারিত। তাই মানুষের আস্থা অর্জন করাটা এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ। খাল উদ্ধারের সাথে সুয়ারেজের পানি গিয়ে খালে পড়বে, সেটার কি হবে? আর পরে পানি পরিশোধনের কি হবে? সেটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় আনতে হবে। একইসঙ্গে খাল কাটলে গ্যাসের লাইন, বিদ্যুতের লাইন, টেলিফোনের লাইন-এই সমস্ত বিষয়েরই বা কি হবে? সার্বিকতানির্ভর এবং সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করে যদি প্রকল্প করা হয় তাহলে কোনো কাজ হবে না। জনগণের যে অনীহার জায়গা সেটা দূর করতে হবে। ছয় মাসে কি হবে, এক বছরে কি হবে-এভাবে পর্যায় ক্রমিকভাবে পরিষ্কার করা দরকার।
এতদিন রাজধানী ঢাকার খাল-নালা নিয়ে ছিল রশি টানাটানি। ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, পূর্ত মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বেশ কয়েকটি সেক্টরের অধীনে ছিল। ‘ভাগের নাও গঙ্গা পায় না’ প্রবাদের মতোই এতোদিন বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে রাজধানী তালিয়ে গেলে প্রশাসনিক সেক্টরগুলো এতে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপাতো। এখন সে পরিস্থিতি নেই।
একমাত্র ঢাকা ওয়াসার অধীনেই ছিল রাজধানীর ২৬টি খাল। কিছুদিন আগে ঢাকা ওয়াসা খালগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে দেয় ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে। ২৬টি খালের দায়িত্ব পেয়ে ইতমোধ্যেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রথমেই রাজধানীর চারটি খাল উদ্ধার করে সেগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলতে ৯৮১ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে ডিএসসিসি। উদ্ধার করে দুই পাড়ে বানানো হবে ওয়াকওয়ে, বাইসাইকেল লেন, মাছ ধরার শেড, বাগান, ফোয়ারা, ফুটওভার ব্রিজ, ইকোপার্ক, পাবলিক টয়লেট, খেলার মাঠ। প্রকল্পটি এরইমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ডিএসসিসি। প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে ‘পানিবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনঃরুদ্ধার, সংস্কার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি’।
এ ছাড়া ধোলাইখালের বক্স কালভার্ট, পান্থপথের বক্স কালভার্ট ও সেগুনবাগিচা বক্স কালভার্ট পরিষ্কার ও পলি অপসারণের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে ২৫-৩০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্পও নেয়া হচ্ছে। খাল থেকে আবর্জনা অপসারণের জন্য রয়েছে ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুল হক নতুন প্রজেক্টের চেয়ে মেইনটেনেন্সের গুরুত্ব বেশি বলে মনে করেন। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশেনের বিনিয়োগযোগ্য প্রজেক্টের চেয়ে মেইনটেনেন্স কিভাবে করতে হবে সে বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। পৃথিবীর যে কোনো দেশে মেয়রের অধীনে স্বতন্ত্র একটা ইউনিট থাকে। আমাদেরও সেদিকেই যেতে হবে। প্রজেক্ট যেভাবেই করা হোক না কেন, সেটা প্রজেক্ট হবে। কিন্তু ধরে রাখার জন্য বিশেষায়িত ইউনিট না থাকলে বদনাম ছাড়া আর কিছু হবে না।
ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, বড়সড় এ প্রকল্পের উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে- পরিবেশের উন্নয়নে দক্ষিণ সিটি এলাকার খালগুলোর পানি প্রবাহ ঠিক রাখা, খালে ময়লা-আবর্জনা না ফেলার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, পানির প্রবাহ ঠিক রাখার মাধ্যমে মশার প্রজনন বন্ধ করা, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, গ্রিনবেল্ট ও বসার স্থান বানিয়ে বিনোদনমূলক ও জনসেবা ত্বরান্বিত করা, জলাশয়ে মাছ চাষের পাশাপাশি নৌ-চলাচলের ব্যবস্থা করা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ডিএসসিসির ৫০ লাখ লোক জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে জানিয়েছে ডিএসসিসি। তবে নগর বিশেষজ্ঞ শামসুল হক মনে করেন একটি প্রজেক্ট করতে হলে দক্ষ জনবলের প্রয়োজন। তিনি বলেন, একটি প্রজেক্টে অর্থের ঘাটতি থাকতে পারে। তবে দক্ষ জনবলের ঘাটতি থাকতে পারবে না। এই মেয়র আগের মেয়রকে দেখিয়েছে জিরো হিসেবে। বলছে সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হচ্ছে। উন্নয়নের কথা নতুন কিছু না, পুরাতন কথা।
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, কালুনগর, জিরানি, মান্ডা ও শ্যামপুর খালের জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে অঞ্চল ৩-এর কালুনগর খালটি শহীদ বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব সরকারি মহাবিদ্যালয় হতে রায়ের বাজার সøুইচ গেট পর্যন্ত বিস্তৃত। এর দৈর্ঘ্য ৩ কিলোমিটার ও গড় প্রস্থ ১২ মিটার। এটি ডিএসসিসির ২২ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে।
অঞ্চল ৬-এর জিরানী খালের (নন্দিপাড়া ব্রিজ ত্রিমহোনী) দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ২০ মিটার। এটি ৭৫, ৭৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে পড়েছে। অঞ্চল ৭-এর মান্ডা খালের দৈর্ঘ্য ৮ দশমিক ২ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ২৫ মিটার। এটি ডিএসসিসির ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৫ ও ৭ নং ওয়ার্ডে। অঞ্চল ১০-এর শ্যামপুর খালের দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১২ মিটার। এটি পড়েছে ৫৮ ও ৫৯ নং ওয়ার্ডে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮০ কোটি ৯১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। রাজস্ব খাত হতে আসবে ২৫ কোটি ৯৮ লাখ। যা মোট ব্যয়ের ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। বাকিটা আসবে মূলধন খাত হতে।
কালুনগর খালের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭১ কোটি ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। জিরানী খালের ব্যয় ২১৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। মান্ডা খালের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। শ্যামপুর খালের জন্য ২৩০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। কনসালটেন্সি ফার্মের জন্য রাখা হয়েছে ১৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
বিদ্যমান রাজস্ব খাতের জনবল নিজ দায়িত্বসহ প্রকল্পের দায়িত্বও পালন করবে। এ ছাড়া একজন সহকারী স্থপতি ও ৬ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পুর) প্রকল্প মেয়াদকাল পর্যন্ত অস্থায়ী নিয়োগ পাবেন।
কালুনগর খাল উন্নয়ন পরিকল্পনায় থাকছে- নান্দনিক ৫০০টি বাতি, ২৫০টি সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল, ২ কিলোমিটার ড্রেনেজ স্ট্রাকচার, ড্রেনেজ লাইনসহ সুয়ারেজ ফিলটারিং সিস্টেম, ৮ হাজার ঘনমিটার জলাশয়, খালের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা, ৪০ হাজার ঘনমিটার জলাশয় ও খালের নিচের পলি অপসারণ, প্রকল্প চলাকালীন ২৫০ মিটার নিকটবর্তী স্থাপনার সুরক্ষা, ৪০ হাজার ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন কাজ, ৩০ হাজার বর্গমিটার এলাকা সবুজায়ন ও ল্যান্ডস্কেপিং।
আরও থাকবে ১০ হাজার বর্গমিটার বাগান, ১০ হাজার বৃক্ষরোপণ, ৫ কিলোমিটার দৃষ্টিগোচর সুরক্ষা বেষ্টনী (৮ ফুট উঁচু), ২০ হাজার বর্গমিটার ওয়াকওয়ে, বাইসাইকেল লেন, ২টি ফুডকোর্ট ও কফিশপ, ২টি প্লাজা, ৮০টি বসার বেঞ্চ ও শেড, ২০০টি স্থানে ওয়েস্টবিন স্থাপন, ২টি সাইট দর্শনের স্থান, ৫ হাজার বর্গমিটার ইকোপার্ক ও শিশুদের খেলার জায়গা।
এ ছাড়া ২টি পাবলিক টয়লেট, ২টি পার্কিং ব্যবস্থা, ২টি ব্যায়াম করার শেড, ৩০ হাজার বর্গমিটার সুরক্ষা দেয়াল, ৫০০ ঘনমিটার আরসিসি রিটেনিং ওয়া, ৩০০ বর্গমিটার শোর প্রোটেকশন সবুজায়ন, ১টি পথচারী সেতু, অর্ধ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড (৫ মিটারের বেশি), ২টি সøুইচ গেট, ২টি পাম্প হাউস ও ১টি ফোয়ারাও থাকবে।
জিরানি খালে থাকবে নান্দনিক এক হাজার বাতি, ৫০০টি সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল, ৩ কিলোমিটার ড্রেনেজ স্ট্রাকচার, ড্রেনেজ লাইনসহ সুয়ারেজ ফিলটারিং সিস্টেম, ৬ হাজার ঘনমিটার জলাশয়। কালুনগরের মতো এ খালেও আবর্জনা অপসারণ, পলি অপসারণ, ভ‚মি উন্নয়ন, সবুজায়ন ও ল্যান্ড-স্কেপিং করাসহ বাদবাকি সুযোগসুবিধা রাখা হবে। মান্ডা খালে থাকবে এক হাজার ৮০০টি নান্দনিক বাতি ও ৮০০টি সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল। এ ছাড়া কালুনগর খালের মতো এখানেও সমস্ত সুযোগসুবিধা রাখা হবে। শ্যামপুর খাল নিয়েও পরিকল্পনা প্রায় একই। তবে এখানে সবুজায়ন হবে ২০ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে। যথারীতি থাকছে ওয়াকওয়ে, ফুডকোর্ট, প্লাজা বেঞ্চ-শেড, ইকো পার্ক ও শিশুদের খেলার স্থানসহ বাকি সব সুবিধা।
তবে এই প্রজেক্টে রাজধানীবাসী তখনই উপকৃত হতে পারে, যখন মেধাবী লোক এই কাজে নিয়োজিত থাকবেন-বলে মনে করেন নগরবিদ ড. শামসুল হক। এই বিশ্লেষক বলেন, এই প্রজেক্টে রাজধানীবাসীর লাভ তখনই হবে, যখন তা বিজ্ঞাননির্ভর হবে বলে মনে করেন এই নগর বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, এই প্রজেক্টে ঢাকায় লাভ হবে কি না। বিজ্ঞান তা বলে না। পেশাদার ইনস্টিটিউট করতে হবে। ধার করা কনসালটেন্ট দিয়ে কাজ করলে হবে না। যারা দেশে-বিদেশে কোন চাকরি পায় না। এই ধরনের লোকদের দিয়ে কাজ করলে তা হবে মেধাসর্বস্ব। তাতে জনগন কোনো সুফল পাবে না।
ঢাকার পানিবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন এবং প্রাকৃতিক খালের ব্যবস্থাপনা নিয়ে গত মাসে স্থানীয় সরকার বিভাগে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ওয়াসা থেকে খালের দায়িত্ব নেয়ার পর খাল সংস্কার ও আধুনিকায়নে প্রায় ১১টি দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪টি খাল ও ২টি বক্স কালভার্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এ খাল ও বক্স কালভার্টগুলো সংস্কারের জন্য আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে ক্রাশ প্রোগ্রাম নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি খালের অবৈধ স্থাপনা ও বর্জ্য অপসারণ কাজ চলমান রয়েছে। গত বছরের জলাবদ্ধতার কারণ চিহ্নিত করে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে জরুরি ভিত্তিতে অবকাঠামো উন্নয়নের কার্যক্রমও নেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ও ডিএসসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকার পানিবদ্ধতা তো যাবেই, শহরের চেহারাও বদলে যাবে।
স্থপতি ইকবাল হাবিব মনে করেন, রাউজক-ওয়াসা-জেলা প্রশাসন ও নদী উন্নয়ন বোর্ডকে সংযুক্ত করে এই পরিকল্পনা করলে তা ফলপ্রসূ হবে। তিনি বলেন, মুশকিল হচ্ছে যে, এই যে পরিকল্পনা-প্রকল্প চলমান সময় থেকে শুরু হয়ে এর পরেও। জনগনকে জানাতে হবে, না জানালে না পাওয়া যাবে জনগনের সহযোগিতা, না পাওয়া যাবে জনগনের অংশগ্রহণ। আপনি যদি একটা ভবনও ভাঙতে চান-জনগন যদি না জানে ভেঙে আপনি করবেন কি? খালাতো ভাইকে দিবেন। আগেরওতো মেয়র ছিল তারাতো একই কথাবার্তা বলে চালিয়েছে। আপনি কি পরিকল্পনা করবেন, সে অনুযায়ী আপনাকে এগুতে হবে। পরিকল্পনা তৈরি করে সেটা জনসম্মুখে প্রচার করা। ওয়াসা দীর্ঘদিন ধরে এই খালগুলোকে কোথাও তারা বক্স কালভার্ট করেছে, কোথাও যুক্ত অথবা বিযুক্ত করেছে। ফলে ওয়াসা এবং রাজউকসহ জেলা প্রশাসন ও নদী উন্নয়ন বোর্ডকে সংযুক্ত করতে হবে। সিটি করপোরেশন যদি মনে করে আমি একাই একশো, তাহলে কিন্তু প্রকল্পটা মার খাবে। আর জনগন যদি ধাক্কাটা খায়, ভবিষ্যতে কিন্তু সহযোগিতাটাও পাবে না।
স্থপতি ইকবাল হাবিব আরও বলেন, খাল রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকভাবে করলে তা সম্পদে পরিণত হবে। মূল ব্যাপার হলো মান্ডা প্রকল্পের খালগুলি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে অনেকদিন আগের। খালগুলোকে যদি যুক্ত না করা হয় এই বন্যা শান্তিনগর থেকে রাজারবাগ, রাজারবাগ থেকে আরেকটু সামনে গিয়ে কোথাও না কোথাও হচ্ছে। আসলে নদীর সাথে সংযোগটা স্থাপন করাটা সবচেয়ে আগে দরকার। এরপরে দরকার হবে ঐটাকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা। পয়ঃবর্জ্য, মানববর্জ্য থেকে শুরু করে সকল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা। এটা হলে এই খাল জনগণের সম্পদে পরিণত করা সম্ভব হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন