সেবার মান বাড়াতে ৮ বছর আগে রাজধানী ঢাকাকে বিভক্ত করে সরকার। এই দীর্ঘ সময়ে দুই সিটি করপোরেশন পেয়েছে বেশ কয়েকজন নগরপিতা ও প্রশাসক। কিন্তু দুই-একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন আসলেও প্রধান সমস্যাগুলোর সমাধান হয়নি। বরং সমস্যাগুলো দিনদিন আরও প্রকট আকার ধারণ করছে। এসব সমস্যাগুলোর মধ্যে ধূলিদূষণ, মশার উপদ্রব, জলাবদ্ধতা অন্যতম। এসব খাতে অনেক ব্যয় ও অভিযান পরিচালনা করেও এসবের কিছুই পরিবর্তন ঘটেনি। এ নিয়ে যেন নগর কর্তৃপক্ষের যথাযথ দৃষ্টি নেই।
গত কয়েকবছর ধরে রাজধানীতে মশাবাহিত নানা রোগ মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু ছিল নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। এজন্য হাঁকডাক দিয়ে মশার ওষুধ আমদানি ও এ খাতে ব্যয় বাড়ানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং করোনা মহামারির মধ্যেও ডেঙ্গু নীরব ঘাতকে পরিণত হয়। এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগর কর্তৃপক্ষকে লোক দেখানো পদক্ষেপ বাদ দিয়ে মশক নিয়ন্ত্রণে আরও মনযোগী হয়ে উপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে।
ধূলাদূষণে বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় শহরের তালিকায় ঢাকা অন্যতম। অথচ এই শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দুটি স্বতন্ত্র সংস্থা—উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। পাশাপাশি পরিবেশ অধিদফতরও এ নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে বায়ুদূষণের শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ঢাকা। এজন্য পরিবেশ অধিদফতর থেকে নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৮০০২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এ অবস্থায় শহরে নির্মল বায়ুর প্রবাহ নিশ্চিত করতে দুই সিটি করপোরেশনের অগ্রাধিকার নজর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন পরিবেশ ও নগরবিদরা।
শুধ তাই নই সামান্য বৃষ্টি হলেই নগরীর রাস্তাঘাটগুলো যেন ‘মিনি নদী’তে পরিণত হয়। নগরীর খাল, জলাশয় ও ড্রেনগুলো বেদখল হয়ে পড়ায় এমন পরিবেশ তৈরি হয় বলে অভিযোগ নগরবিদদের। এ অবস্থায় দীর্ঘ ৩১ বছর পর বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা ওয়াসা থেকে ২৬টি খালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই সিটি করপোরেশনকে। যদিও এই খালগুলোর মধ্যে কয়েকটি খালের দায়িত্ব ইতোপূর্বেও সিটি করপোরেশনের ছিল। কিন্তু এসব খাল বেদখল হয়ে পড়লেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি করপোরেশন। এ অবস্থায় খালের দায়িত্বে পেয়ে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সীমানা চিহ্নিত করে খাল উদ্ধার কারে তার প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিগত বছর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নতুন বছরের কাজ শুরু করতে হবে। ২০২১ সালে পরিবেশ ও প্রতিবেশকে ঠিক রেখে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে কীভাবে শহর ও তার মানুষকে রক্ষা করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নির্মল বায়ুর প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই দীর্ঘ সময় আমরা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে শহরের মৌলিক পরিবেশ হারিয়েছিলাম। সেই হারিয়ে যাওয়া পরিবেশ উদ্ধার করতে হবে। উন্নয়নের কাঠামোগত দিক পরিবর্তন করতে হবে। প্রোডাকশান থেকে ফিরে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখনও পুরানো পদ্ধতিতে খোঁড়াখুঁড়ি রয়ে গেছে। উন্নত শহরগুলোতে এর ধরণ কিন্তু ভিন্ন। তাদের উন্নয়ন কাজে ধূলাধূষণ একেবারেই হয় না। এছাড়া একদিকে উচ্ছেদ অন্যদিকে দখল খেলা চলছে। এগুলো সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত থাকে। আমাদের দুই মেয়রকে এটা বন্ধ করতে হবে। তবেই শহরকে ধুলা দূষণ থেকে মুক্ত করা যাবে।
এই পরিকল্পনাবিদের মতে, ঢাকা শহরে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে তা একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যথেষ্ট। কিন্তু এই উন্নয়নের সঙ্গে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। সবুজায়ন বাড়াতে হবে। সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে ওয়ার্ড ভিত্তিক কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
জলাবদ্ধতার জন্য তিনি বড়বড় প্রকল্পগুলোকে দায়ী করে বলেন, জলাবদ্ধতার সমস্যার অধিকাংশই বড়বড় প্রকল্প। এছাড়া শহরের ড্রেনগুলোতে মশার উপযোগী পরিবেশ রয়েছে। নর্দমা, বক্স-কালভার্ট ও ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখতে পালে জলাবদ্ধতা দূর হওয়ার পাশাপাশি মশার প্রজননস্থলও ধ্বংস হবে। নতুন বছরে মেয়রদের প্রতি আমাদের এই প্রত্যাশা।
জানতে চাইলে রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ ও ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে হলে নতুন বছরে আমাদেরকে জনঘনত্ব বিবেচনা করে জোনিংয়ে হাত দিতে হবে। এছাড়া যানজট নিরসনে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নিশ্চিত করতে হবে। সেটা হতে পারে মেট্রোরেল, বিআরটি বা অন্য কিছু। তৃতীয়ত, আমাদের অনেক জলাশয় ও লেক হারিয়ে গেছে। সিএস নকশা ধরে সেই হারিয়ে যাওয়া জলাশয় উদ্ধার করতে হবে। পাশাপাশি একটি ওয়াটার বেইজড নেটওয়ার্ক তৈরি করে একটি ত্রিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলেই ঢাকা হবে পৃথিবীর সুন্দর শহরগুলোর মধ্যে একটি।
নগরবিদদের এই প্রত্যাশার সঙ্গে একমত পোষণ করে করে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের প্রতিটি সমস্যা চিহ্নিত। এখন শুধু সমাধান যাত্রা। আমরা সেই পথেই হাঁটছি। এজন্য নগর পরিকল্পনাবিদ ও নাগরিকদের সমন্বয়ে আমরা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আশা করি নতুন এটা আরও দৃশ্যমান হবে।
পাঠক মন্তব্য
My spouse and i were so thankful that Ervin managed to round up his researching through the entire precious recommendations he discovered out of the site. It's not at all simplistic to simply choose to be giving for free hints some others have been trying to sell. And now we remember we have the blog owner to thank for this. The type of illustrations you made, the easy website menu, the friendships you can help to promote - it's got everything superb, and it is making our son in addition to us reckon that the idea is satisfying, which is certainly unbelievably fundamental. Thank you for all!
My husband and i ended up being now delighted that Edward could round up his analysis by way of the precious recommendations he had from your web pages. It's not at all simplistic to simply happen to be giving away tactics which usually the others might have been selling. Therefore we consider we have got the website owner to thank because of that. The type of illustrations you made, the easy web site menu, the friendships you will help to foster - it is everything powerful, and it's leading our son and our family feel that that idea is thrilling, and that's incredibly important. Many thanks for the whole thing!
I want to get across my passion for your generosity supporting women who absolutely need assistance with this important question. Your special commitment to passing the message all around came to be surprisingly valuable and has consistently permitted many people like me to realize their desired goals. Your amazing warm and helpful information signifies a lot to me and even more to my fellow workers. Warm regards; from all of us.
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন