সাকিব আল হাসানকে ঘরের মাঠে শেষ টেস্ট খেলতে দিতে নমনীয় হয়েছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। দেশের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়কে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে সম্মত হয়েছে তারা। জানিয়েছে, তার দেশে ফেরা বা খেলার ব্যাপারে কোনো বাধা নেই।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ জানান, দেশ থেকেই সাকিবের বিদায় নেয়ার জোর সম্ভাবনা আছে।
আজ রোববার মিরপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টা নিশ্চিত করলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া।
সাকিব আল হাসানের দেশে ফেরা ও অন্যান্য বেশ কিছু বিষয় নিয়ে রোববার বিসিবি কার্যালয়ে বোর্ড কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সাথে আলোচনায় বসেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এরপর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তিনি।
আসিফ বলেন, ‘দেশে আসা কিংবা বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা তো থাকার কথা না। আর আইনের বিষয়টা আইন মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা করতে পারবে। আমি বিশেষজ্ঞও না, কিংবা আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও না।’
এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সাথে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা হয়েছে। আসিফ নজরুল (আইন উপদেষ্টা) স্যার বলেছেন, সংশ্লিষ্টতা না পেলে প্রাথমিক তদন্তেই যে মামলা হয়েছে, ওখান থেকে নাম বাদ পড়ে যাবে।’
ক্রিকেটার হলেও সাকিব পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যও ছিলেন। একইসাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার নীরব অবস্থানে ক্ষুব্ধ হয় অনেকেই। যদিও শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে এ নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন সাকিব।
তবুও সাকিবের দেশে ফেরার খবরে কয়েক দিন ধরেই মিরপুরে প্রতিবাদ হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা কথা বলছে সমালোচকরা। এমন পরিস্থিতিতে তার নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব হবে কিনা প্রশ্নও ছিল আসিফ মাহমুদের কাছে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের জায়গা থেকে প্রত্যেক নাগরিকেরই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এবং ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা নিশ্চিত করব এবং আমি মনে করি যে আবেগের জায়গাটা অবশ্যই আছে।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু বড় একটা আন্দোলন হয়েছে এবং সাকিবের আগের ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে জড়িত ছিলেন। যেটা উনি ক্লিয়ারেন্স দিয়েছেন উনার পোস্টে। তারপরও কিছু ইমোশন রয়ে গেছে। যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক ওই প্রশ্নে যাব না। সেটা অন্য বিতর্ক।’
তিনি যোগ করেন, ‘তবে এক্ষেত্রে আমার আহ্বান থাকবে কারো নিরাপত্তা যেন হুমকির মুখে না ফেলি। যদি আইনগত কোনো বিষয় থাকে, আইন তো আইনের গতিতে চলবে। এ বিষয়ে তো আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’
তবে শুধু সাকিব নয়, সমর্থকদের এমন আন্দোলন দেশের ক্রিকেটেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন আসিফ। বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। সামনে যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকা আসবে, আমাদের পরিবেশটাও ভালো রাখতে হবে। না হলে বাইরের দেশগুলো বাংলাদেশে আসতে নিরাপত্তার অভাব অনুভব করবে।’
এদিকে হঠাৎ বিসিবিতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। সকাল থেকে স্টেডিয়াম এলাকায় উপস্থিত স্বশস্ত্র বাহিনী। মহড়া দিয়েছেন স্বশস্ত্রবাহিনীর যৌথ টিম।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন