মোহামেডানের ক্রিকেট কর্মকর্তা ছিলেন। পরবর্তী সময়ে নিজে থেকে গড়ে তোলেন ক্রিকেট দল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। লিগের অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্ব আম্পায়ারিং নিয়ে প্রতিবাদ করায় বিসিবি থেকে নিষেধাজ্ঞায় পড়েন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের দৌরাত্ম্যে দেশান্তরিত হতে হয় তাঁকে। গত ১০ বছর বিদেশে অবস্থান করেই ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করে গেছেন। এক দিনের জন্যও ক্রিকেট থেকে সরে যাননি। সম্পূর্ণ নিজের টাকায় চালিয়ে গেছেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে। পোড়খাওয়া সংগঠক লুৎফর রহমান বাদল ইংল্যান্ড থেকে ফোনে দেশের ক্রিকেট নিয়ে একান্তে কথা বলেন সেকান্দার আলীর সঙ্গে।
সমকাল: একটা সময়ে খুব দরদ দিয়ে আপনি ক্রিকেট দল চালাতেন। খেলা থাকলে মাঠে যেতেন সবার আগে। গত ১০ বছর এই আনন্দ কতটা মিস করেছেন?
বাদল: দেখুন, আমার ব্যবসা বা কর্মজীবনের বাইরে ক্রিকেট হচ্ছে আমার আবেগ। মানুষের ব্যক্তিজীবন ও কর্মজীবনের বাইরে তার কিছু আবেগের জায়গা থাকে এবং একজন সুস্থ মানুষের একান্ত কিছু ভালোলাগার বিষয় থাকা উচিত। আমার ক্ষেত্রে ক্রিকেট সেই জায়গা দখল করে আছে। আমি নিজে একজন ক্রিকেটার ছিলাম, বড় একটি ক্রিকেট দলের সংগঠক ছিলাম। এর পর নিজেই একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করি ভালোবাসা থেকে। পৃথিবীর বড় বড় ক্রিকেট তারকা আমার বন্ধু, যা আমি উপভোগ করি। সত্যি কথা বলতে, বিগত ১০ বছর দেশের বাইরে থাকলেও ক্রিকেটের বাইরে ছিলাম না। আমার দল নিয়মিত খেলেছে এবং কয়েকটি মৌসুমে শিরোপা জয়ের কাছাকাছি ছিল, যা আমি রাত জেগে অনলাইনে উপভোগ করেছি। তা ছাড়া ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থেকে আমার প্রায় সব বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল মাঠে বসে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।
সমকাল: সরকার আপনাকে দেশে থাকতে না দিলেও ক্রিকেট দলকে ঠিকই ধরে রেখেছে। কীভাবে সম্ভব করলেন এই কঠিন কাজ?
বাদল: দেখুন, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে সবাই কাজ করতে পারে। কিন্তু একজন প্রকৃত সংগঠকের দায়িত্ব যে কোনো পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরে রাখা। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা এবং সংগঠক হিসেবে আমার একনিষ্ঠতার কারণেই অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশেও দল ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে এবং সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
সমকাল: দেশে ফিরে ক্রিকেট নিয়ে কীভাবে কাজ করতে চান?
বাদল: ক্রিকেট নিয়ে ছিলাম, আছি এবং থাকব ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কাজ করার সুযোগ এলে অবশ্যই আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে সেবা করার চেষ্টা করব। ক্রিকেট থেকে আমার পাওয়ার কিছু নেই। বরং আমি কিছু দিতে চাই।
সমকাল: বিসিবিকে সংস্কার কতটা জরুরি?
বাদল: আপনারা জানেন, গত ১৫ বছর দেশের অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো বিসিবিও অনিয়মতান্ত্রিক, স্বেচ্ছাচারী, দুর্নীতিগ্রস্ত ও একক আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে। আমার মনে হয়, বিসিবিতে পেশাদারিত্ব ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি, যা বাংলাদেশের ক্রিকেটের সার্বিক মঙ্গল বয়ে আনবে।
সমকাল: আপনি বোর্ডে গেলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেবেন?
বাদল: দেখুন, যে কোনো বিষয়ে ভালো কিছু করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা কার্যকর ভূমিকা পালন করে। স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে আপনি সাময়িক সফলতা পেলেও তা স্থায়ী হবে না। সুতরাং আমি বোর্ডে গেলে অবশ্যই ক্রিকেটের টেকসই উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাকেই বেছে নেব।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন