মন্ত্রী হওয়ার পর আজই প্রথম বিসিবির সভা করবেন নাজমুল হাসানপ্রথম আলো
নির্বাচক কমিটিতে কি বদল হচ্ছে? হলে কারা হতে পারেন নতুন মুখ? সাকিব আল হাসান সত্যিই আর জাতীয় দলকে নেতৃত্ব না দিলে কে হবেন নতুন অধিনায়ক? বাংলাদেশ দলের নতুন ব্যাটিং ও পেস বোলিং কোচ হচ্ছেন কারা? বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স মূল্যায়নে গঠিত বিশেষ কমিটির রিপোর্টেই–বা কী থাকছে?
গত বছরের ১২ জুনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের আর কোনো সভা না হওয়ায় ঝুলে আছে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই। দেশের ক্রিকেট তাই কৌতূহলভরে তাকিয়ে আজ বেলা দুইটায় মিরপুরের বিসিবি কার্যালয়ে বসতে যাওয়া বোর্ড সভার দিকে।
আলোচ্য সূচির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মূলত ওগুলোই। সঙ্গে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের জন্য আন্তর্জাতিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিয়োগ ও মাঠ তৈরির জন্য জায়গা কেনার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হবে সভায়।
বিসিবির আগের সভাগুলোর সঙ্গে এই সভার বড় পার্থক্য, বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান এখন দেশের ক্রীড়ামন্ত্রীও। মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহল ছিল, তিনি একই সঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতির পদে থাকবেন কি না! পরে জানা গেছে, গণতান্ত্রিক বাধা না থাকায় বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ শেষ করেই সভাপতিত্ব ছাড়বেন নাজমুল হাসান। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালের ৫ অক্টোবর।
এত দিন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সাধারণত বোর্ড সভার আগেই সভাপতির সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সেরে নিতেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বিশেষ করে জাতীয় দলসংক্রান্ত বিষয়গুলোতে পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতাটাই বাকি থাকত কেবল। নাজমুল হাসান ক্রীড়ামন্ত্রী হওয়ায় এবার হচ্ছে ব্যতিক্রম। মন্ত্রিত্বের ব্যস্ততার কারণে নির্বাচক কমিটি বা জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়েও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের সঙ্গে প্রাক্–আলোচনা করতে পারেননি তিনি। এসব বিষয়ে প্রস্তাব, আলোচনা—সবই হবে আজকের সভায়।বর্তমান নির্বাচক কমিটির প্রধান মিনহাজুল আবেদীন এবং এক সদস্য হাবিবুল বাশার ১০-১২ বছর ধরে আছেন কমিটিতে। তাঁদের সর্বশেষ মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩১ ডিসেম্বর। এখন বিসিবিও মনে করছে, নির্বাচক কমিটিতে পরিবর্তন দরকার। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পরিচালকদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিষয়টি নিয়ে ভেবে বোর্ডকে জানাতে।
নির্বাচক কমিটিতে সর্বশেষ যোগ দেওয়া আবদুর রাজ্জাককে রেখে নতুন দুজনকে আনার প্রস্তাব থাকবে কারও কারও। আবার বোর্ডের অনেকের মতে, কমিটিতে দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও হাবিবুল এত দিন ছিলেন সাধারণ সদস্য। নির্বাচক হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কারণে তিনিই প্রধান নির্বাচক হওয়ার সবচেয়ে যোগ্য দাবিদার। তাঁকে প্রধান নির্বাচক পদে রেখে নতুন করে কমিটি সাজানোই সবচেয়ে ভালো। অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খুব কাছে বলে এ মুহূর্তে নির্বাচক কমিটিতে পরিবর্তন না এনে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা পর্যন্ত বর্তমান সদস্যের মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স মূল্যায়নে গঠিত বিশেষ কমিটির প্রতিবেদন উত্থাপন করবেন কমিটিপ্রধান এনায়েত হোসেন। ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রস্তাব থাকবে তাতে। এই প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ ধরে সভায় আলোচনা হতে পারে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব নিয়েও। যত দূর জানা গেছে, সাকিব আল হাসান আর অধিনায়ক থাকতে না চাইলে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে নাজমুল হোসেনকে। তবে সেটি তিন সংস্করণেই, নাকি আপাতত তাঁকে টেস্ট ও ওয়ানডের নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বকাপ পর্যন্ত সাকিবকেই টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক রাখা হবে, সে আলোচনাও হবে আজ। অবশ্য কাল সন্ধ্যা পর্যন্তও অধিনায়কত্ব নিয়ে সাকিবের সঙ্গে কথা হয়নি বিসিবির। সিদ্ধান্ত যেটাই হোক, আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজেই তার প্রতিফলন দেখা যেতে পারে।
কয়েক দিন ধরে বিসিবির কোচ নিয়োগ কমিটি জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ, ব্যাটিং কোচসহ অন্যান্য শূন্য পদের জন্য সাক্ষাৎকার নিয়েছে। সর্বশেষ গতকাল সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ পদে তিন প্রার্থীর। এই পদের জন্য আবেদন করা আরও দুজনের সাক্ষাৎকার কাল-পরশুর মধ্যে নেওয়ার কথা।
কোচ নিয়োগ কমিটি পেস বোলিং ও ব্যাটিং কোচের জন্য দুটি করে সম্ভাব্য নাম প্রস্তাব করবে সভায়। সম্ভাব্য পেস বোলিং কোচদের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের আন্দ্রে অ্যাডামস এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোরি কলিমোরের সঙ্গে নাম আসতে পারে বাংলাদেশের মাহবুবুল আলমেরও। ব্যাটিং কোচ হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হতে পারে শ্রীলঙ্কার থিলান সামারাবিরা ও ইংল্যান্ডের পল নিক্সনের। কোচিং স্টাফের সব পদেই আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে নিয়োগ দিতে চায় বিসিবি।
সভায় বিসিবির নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তির জন্য নাম প্রস্তাব করা হবে ২০-২১ জন ক্রিকেটারের। চুক্তির সব শ্রেণিতে বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব করা হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন