শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি এবং পলায়ন কিছুতেই মানতে পারছে না ভারত। তাকে পুনর্বাসনে বাংলাদেশ সম্পর্কে নানা গুজব আর মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে দেশটি। সেই ভারতকে নির্মাতা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী মনে করালেন, হাসিনার অধ্যায় শেষ, তাদের বাস্তবতা মেনে নেওয়ার সময় এসেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই মন্তব্য করেন ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ সিনেমার নির্মাতা।
ফারুকী লিখেছেন, ‘হাসিনার অধ্যায় শেষ হওয়ার বাস্তবতা মেনে নেওয়ার সময় এসেছে ভারতের। বাংলাদেশের মানুষ সেই অধ্যায় চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতীয় বন্ধুদের বোঝা উচিত যে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত একজন খুনিকে আতিথ্য করা বাংলাদেশি জনগণের অনুভূতিতে আঘাতের শামিল।’
সংস্কৃতি উপদেষ্টা লেখেন, ‘এমনকি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো যত সব বিভ্রান্তিমূলক প্রচারে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অথচ এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি নতুন সম্পর্কের সেতু গড়তে পারত ভারত; যেটি বুদ্ধিদীপ্তের পরিচয় হতো।’
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ভারতীয় মুসলমান এবং খ্রিস্টানদের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছেন বলেও উল্লেখ করেন ফারুকী।
নির্মাতা লেখেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার খুব ভাবছে। আগের সরকারের তুলনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সংক্রান্ত ঘটনার সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে কমে গেছে। আমরা আন্তরিকভাবে সমস্ত শীর্ষ আন্তর্জাতিক সংবাদ প্ল্যাটফর্মের সাংবাদিকদের স্বাগত জানাই দেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার জন্য। ইতোমধ্যে বিবিসি, আল জাজিরার মতো স্বনামধন্য গণমাধ্যমগুলো ভারতীয় মিডিয়ার ভুয়া খবরগুলোও নজরে এনেছে।’
সবশেষ ফারুকী লেখেন, ‘ভারতীয় বন্ধুদের মনে রাখা দরকার যে তারা এমন একজনকে আশ্রয় দিয়েছে, যিনি ছিলেন একজন অত্যাচারী। যিনি টানা তিনটি নির্বাচনে ভোটের অধিকার ছিনতাই করেছে, ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন, তার মতের বাইরে যাওয়া হাজারও মানুষকে হত্যা করেছে। গত জুলাইতেই যার সংখ্যা ছিল দেড় হাজার। আরও অসংখ্য মানুষকে গুম করা হয়েছে, যারা এখনো ফিরে আসেনি। তাহলে ভারত কেন আশা করে, আমরা তাকে (হাসিনাকে) ভালোবাসব। ভারতীয়রা কি আশা করে যে জার্মানরা হিটলারকে ভালোবাসবে?’
গত ১০ নভেম্বর সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এর আগে জুলাই বিপ্লব চলাকালীন তিনি ছাত্র-জনতার পক্ষে আওয়াজ তোলেন। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া নানা পোস্টের মাধ্যমে জনমত তৈরিতে ভূমিকা রাখেন। যদিও উপদেষ্টা পরিষদে ফারুকীর অন্তর্ভূক্তি নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়।
(ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন