না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ‘কী ছিলে আমার, বলো না তুমি’ খ্যাত গায়ক মনি কিশোর। শনিবার রাতে গায়কের রামপুরার বাসা থেকে তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে নব্বই দশকের এই সংগীত শিল্পীর মরদেহ। প্রশ্ন উঠেছে, তার মরদেহ কি দাফন নাকি দাহ করা হবে? কারণ ব্যক্তিগত জীবনে এই শিল্পী সনাতন ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তবে নব্বইয়ের দশকে মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। এরপর গত দেড় যুগ আগে সেই সংসারে বিচ্ছেদ হয়।
বিচ্ছেদের পর থেকে গত কয়েক বছর ধরে রাজধানীতে একাকী জীবনযাপন করছিলেন এই গায়ক। তার একমাত্র মেয়ে নিন্তি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তার কাছেই মনি কিশোর জানিয়ে গেছেন, মৃত্যুর পর যেন মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়, যা তিনি ঢাকার পুলিশকে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একটি সংবাদমাধ্যমকে মনি কিশোরের বড় ভাই অশোক কুমার বলেন, ‘মনি বেঁচে থাকা অবস্থায় তার দাফনের বিষয়টি একমাত্র মেয়ে নিন্তিকে জানিয়েছিলেন। মেয়েও জানিয়েছে, তার বাবাকে যেন দাফন করা হয়। এমনটাই নাকি সে বলে গিয়েছিল। মেয়েকে যেহেতু বলে গিয়েছে, তাই তার ইচ্ছামতো দাফন করা হবে। আমরা অন্য কোনো সিদ্ধান্তে যাব না।’
কোথায় দাফন করা হবে, জানতে চাইলে অশোক কুমার মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের সেভাবে কোনো চাওয়া নেই। আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। এরপর তারাই সিদ্ধান্ত নেবে, কোথায় মরদেহ দাফন করা হবে।’
এদিকে মনি কিশোরের মৃত্যু সম্পর্কে তার ভাই বলেছেন, ‘মনি নানা রোগে ভুগছিলেন। এর মধ্যে হার্টের সমস্যা যেমন ছিল, তেমনি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টের সমস্যাও। কয়েক মাস ধরে এই সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে।’
মনি কিশোররের সংগীতাঙ্গনের সহকর্মীরা জানান, তিনি দীর্ঘ সময় ধরে ছিলেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। অনেকটা অভিমান থেকে নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলেন। শেষ দিকে তো এমনও হয়েছে, কেউ যাতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে, নিজের ব্যবহৃত পুরোনো মুঠোফোন নম্বর বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ৯০ দশকের জনপ্রিয় শিল্পী মনি কিশোর। ক্যারিয়ারে পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। রেডিও, টিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হলেও এসব মাধ্যমে গান গেয়েছেন অল্প। মূলত অডিওতে গান করেছেন বিরামহীন। ৩০টির বেশি একক অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে মনি কিশোরের। যার প্রায় সবগুলোই ছিলো হিট।
তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘কী ছিলে আমার’, ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’ ইত্যাদি। তার সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান ‘কী ছিলে আমার’ তারই সুর করা ও লেখা। ২০টির মতো গান লিখেছেন ও সুর করেছেন মনি কিশোর।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন