বিশ্ব নেতাদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মতো বন্ধু রয়েছে বলে জানালেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বৃহস্পতিবার বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে পুতিনকে জিজ্ঞেস করা হয়, কোন জীবিত বা মৃত ব্যক্তিত্ব বা রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে এক কাপ চা শেয়ার করতে চান? উত্তরে পুতিন বলেন, জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট কোল, ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক এবং ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনির সঙ্গে তার খুব ভালো স্মৃতি রয়েছে।
এশিয়ার ক্ষেত্রে পুতিন উল্লেখ করেন যে, তার চীন ও ভারতের সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক। তিনি আমার কথা বলার মতো মানুষ’।
চলতি মাসের শুরুতে রুশ নেতা মোদি প্রশাসনের প্রশংসা করেন পুতিন। পুতিন বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং তার সরকার স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করেছেন। কারণ তারা ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, ভারতে বিনিয়োগ লাভজনক’।
একটি দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠকের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে এসব মন্তব্য করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। আসন্ন এই সফরের তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে এটি আগামী বছরের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্রেমলিন এ মাসের শুরুতে ভারত সফরের কথা নিশ্চিত করেছে।
মস্কোর ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৃদ্ধি পেয়েছে। পশ্চিমা চাপ উপেক্ষা করে নয়াদিল্লি ডিসকাউন্ট মূল্যে রাশিয়ার তেল কেনার পরিমাণ বাড়িয়েছে। যার ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ গত বছর ৬৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হয়েছে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ হিসেবে ভারত প্রয়োজনের তুলনায় ৮৫ শতাংশেরও বেশি তেল আমদানি করে। বর্তমানে ভারতে শীর্ষ তেল সরবরাহকারী দেশ হলো রাশিয়া এবং নয়াদিল্লি প্রায়ই তাদের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মস্কোর ভূমিকা তুলে ধরে।
কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, রাশিয়ান তেল ও কয়লা কেনার মাধ্যমে ভারত বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করেছে, যা একটি ব্যাপক জ্বালানি সংকট প্রতিরোধ করেছে।
জুলাই মাসে মস্কোতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে, রুশ এবং ভারতীয় নেতারা সম্পর্ক আরও প্রসারিত করার বিষয়ে একমত হন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের লক্ষ্য ১০০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেন।
অর্থনৈতিক সহযোগিতার ধারাবাহিক বৃদ্ধি স্বাগত জানিয়ে উভয় পক্ষ স্বীকার করেছে যে, ভারতের তেল আমদানি দ্রুত বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা সমাধান করা প্রয়োজন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন