দক্ষিণ কোরিয়ায় গ্রেপ্তার হওয়া সদ্য সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং হিউন আত্মহত্যা চেষ্টা করেছেন। দেশটির বিচার মন্ত্রণালয় বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পার্লামেন্টকে জানানো হয়েছে, কিম গভীর রাতে আত্মহত্যা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন তাকে প্রহরীদের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। তিনি এখন সুস্থ আছেন।
প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের ঘনিষ্ঠ সহচর কিম। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সামরিক আইন ঘোষণার ইস্যুতে প্রথম কর্মকর্তা হিসেবে গ্রেপ্তার হন তিনি।
কিম ইয়ং হিউন কে?
কিম ১৯৫৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় শহর মাসানে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি কোরিয়া মিলিটারি একাডেমিতে ভর্তি হন এবং সেখানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে তিনি তিন তারকা জেনারেল হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
ইউন সরকারের অধীনে কিম প্রথমে প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিসের মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেন এবং পরে সেপ্টেম্বরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান।
কিম উত্তর কোরিয়া এবং সাধারণ নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম বক্তৃতায় বলেন, যদি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন কোনো প্ররোচনা দেন, তবে তাকে ‘ভয়ানক মূল্য’ চুকাতে হবে এবং তার শাসন শেষ হয়ে যাবে।
৩ ডিসেম্বর রাতে ইউন একটি অপ্রত্যাশিত মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করেন। এ সময় কিম মন্ত্রিসভাকে সামরিক আইন জারির পরামর্শ দেন। এ কারণে দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়। প্রেসিডেন্টের এ ঘোষণার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন দেশটির পার্লামেন্টের সদস্যরা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিক্ষোভের মুখে সামরিক আইন জারির ঘোষণা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট।
এ ঘটনা কেন্দ্র করে দেশটির রাজনীতিতে চরম সংকট দেখা দেয়। এরপর প্রেসিডেন্ট ইউনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পার্লামেন্টে অভিশংসনের উদ্যোগ নেন বিরোধীরা। তবে ক্ষমতাসীন দল সেই উদ্যোগ রুখে দেয়, যদিও নিজ দলের ভেতরেই চরম বাধার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট ইউন।
এর মধ্যেই প্রেসিডেন্টকে সামরিক আইন জারির পরামর্শ দেওয়ার দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন কিম। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন