সিরিয়ায় গত রবিবার বাশার আল আসাদের পতনের পরপরই কুখ্যাত সায়দনায়া কারাগারে হাজারো মানুষ ভিড় করেছে। অনেকের স্বজন এই কারাগারে বন্দি ছিল, অনেককেই এখানে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। মৃতদেহ কোথায় সেটিও জানা নেই। এ ধরনের বহু হৃদয়বিদারক দৃশ্য। অনেকেই বলছেন, ওই কারাগারে ভেতরে সুড়ঙ্গ রয়েছে, যেখানে মানুষদের আটকে রাখা হয়েছে। যদিও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, এমন নজির পাওয়া যায়নি। তার পরও কারাগারে মানুষের ভিড় কমছে না। সবারই আশাÑ তার হারানো স্বজনকে যদি পাওয়া যায়।
বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস দামেস্কে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সায়দনায়ার কারাগারে অত্যচার যুগের সমাপ্তি ঘোষণা হয়েছে। এই কারাগারটি আসাদ সরকারের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ের নাম। মানুষের মুখে মুখে এর লোমহর্ষক গল্প ছড়িয়েছে। গতকাল বিবিসিকে একজন জানিয়েছেন, তিনি সেখানকার দুই বন্দির সঙ্গে কথা বলেছেন, যারা তার নিজের নাম ভুলে গেছেন।
২০২২ সালে একটি প্রতিবেদন বেরিয়েছিল, যেখান থেকে জানা গেছে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এই কারাগারটি কার্যত একটি জল্লাদখানায় পরিণত হয়েছিল। ধারণা করা হয়, ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর ২০১৮ সাল পর্যন্ত নির্যাতন, চিকিৎসার অভাব বা অনাহারে সেখানে ৩০ হাজারের বেশি বন্দির করুণ মৃত্যু হয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিনাবিচারে অন্তত ৫০০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ২০১৭ সালে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই কারাগারকে ‘মানব কসাইখানা’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আসাদ সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
বাশারের পতনের পর অনেকেই বলছিল, কারাগারের ভেতরে সুড়ঙ্গ রয়েছে অথবা এমন আন্ডারগ্রাউন্ড রয়েছে, যেখানে মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন