ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গত কয়েক মাস ধরেই টালামাটাল। গত মাসে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বা চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির জেরে দু-দেশের সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকেছে। মহারাজের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ফুঁসছে এপার বাংলা। তারপর ওপারে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের একের পর এক ঘটনা সামনে আসছে। যা শুধু ভারত নয়, ভাবাচ্ছে পশ্চিমী দেশগুলোকেও।
এর মাঝেই বিজেপি নেতা তথা মেঘালয়-ত্রিপুরার সাবেক রাজ্যপাল তথাগত রায় বাংলাদেশ ইস্যুতে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে চলেছেন। এবার তার নিশানায় বাংলার ‘বামপন্থি’ বুদ্ধিজীবীরা। বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে কেন চুপ শ্রীজাত, অপর্ণা সেন, কৌশিক সেনরা? সেই প্রশ্ন তুলেই আক্রমণ শানালেন তথাগত রায়।
বাদ পড়েননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুখ্যমন্ত্রীকে ‘দুধেল গাই’ দের মালিক বলে বিদ্রুপ করেন বিজেপি নেতা। শুধু বামপন্থি বুদ্ধিজীবীরাই নয়, প্রবীণ বামনেতা বিমান বসু, মুহাম্মদ সেলিমদেরও কটাক্ষ করলেন তথাগত রায়। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘বাংলাদেশে নৃশংস হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সবাই, মায় ‘দুধেল গাই’ দের মালিক মমতাও। শুধু খোলেনি বিমান্দা সেলিম শতরূপ মীনাক্ষী দীপঙ্কর গোত্রের বাঙালি বামপন্থিরা। আর খোলেনি তাদের পোঁ ধরা শ্রীজাত অপর্ণা কৌশিক গোত্রের দুর্বুদ্ধিজীবীরা।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি আজ পর্যন্ত বুঝে পাইনি, বাঙালি-বামপন্থিরা মুসলমানদের নিয়ে এত আহ্লাদ করে কেন? মুসলমানরা ক্ষমতায় এলে তো এরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, যেমন গেছে বাংলাদেশে!’
আরজি কর কাণ্ড নিয়ে পথে নেমে প্রতিবাদ করলেও বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে চুপ টলিপাড়ার অনেকেই। তবে শ্রীজাত অবৃশ্য বাংলাদেশের মাটিতে হওয়া ভারতের জাতীয় পতাকার অপমান নিয়ে গর্জে উঠেছিলেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘আমি আমার জাতীয় পতাকার অবমাননার বিপক্ষে। এটাও আমার ব্যক্তি-রাজনীতি।’
কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ভেঙে বাঙালি হিন্দুদের জন্যে এক পৃথক ‘হিন্দুদেশ’ তৈরির ‘ফর্মুলা’ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সাবেক সেনা কর্তা জেনারেল জিডি বক্সি। তাতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানচিত্রের উত্তর দিক দিয়ে একটি কালো রেখা আঁকা। বাংলাদেশের উত্তর অংশকে সেখানে একটি পৃথক দেশ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তার নাম - ‘হিন্দুদেশ’। মূলত রংপুর, দিনাজপুর এলাকা নিয়ে সেই ‘পৃথক দেশ’ গঠনের ফর্মুলা দিয়েছেন অবরপ্রাপ্ত এই মেজর জেনারেল।
সেই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতেই তথাগত রায়ও সেই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘এটি উত্তম প্রস্তাব। এর ফলে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে বাকি ভারতের যাতায়াত অত্যন্ত সহজ হয়ে যাবে, পুরোনো অসম মেলের রাস্তা খুলে যাবে। শুধু পার্বতীপুর জংশন থেকে গীতালদহ পর্যন্ত লাইন ব্রড গেজ করে নিতে হবে।’
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন