যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা বাশার আল-আসাদকে ‘জবাবদিহিতার আওতায়’ আনা উচিত। তবে তিনি এই রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দেশ পুনর্গঠনের জন্য সিরিয়ানদের একটি ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ বলে বর্ণনা করেন।
ইসলামপন্থিদের নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের জোটের হাতে আসাদের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পূর্ণ প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আবির্ভাব যেন না হয়, সে ব্যাপারে ওয়াশিংটন ‘সজাগ থাকবে’।
‘সরকারের পতন একটি মৌলিক ন্যায় বিচাররের কাজ ছিল,’ বাইডেন হোয়াইট হাউস থেকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেন। ‘সিরিয় জনগণ, যারা অনেক দুর্ভোগ সহ্য করেছে, তাদের জন্য এটা একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।’
সাংবাদিকরা যখন তাকে জিজ্ঞেস করে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট, যিনি মস্কোতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে খবর হয়েছে, তার কী হওয়া উচিত, বাইডেন বলেন, ‘আসাদকে জবাবদিহিতার আওাতায় আনা উচিত।’
বাইডেন ২০ জানুয়ারি তার মেয়াদ শেষে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য সড়ে যাবেন। বাইডেন বলেন, ওয়াশিংটন সিরিয়ানদের পুনর্গঠনের জন্য সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘের প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকাসহ সকল সিরিয় গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখব, আসাদ সরকার থেকে দূরে নতুন সংবিধানসহ একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম সিরিয়া গড়ার লক্ষ্যে।’
তবে, বাইডেন হুঁশিয়ারি দেন যে বিজয়ী জোটের মধ্যে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীগুলোর ওপর নজর রাখা হবে।
তিনি বলেন, ‘যেসব বিদ্রোহী গোষ্ঠী আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, তাদের মধ্যে কয়েকটার নিজস্ব সন্ত্রাস এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ড আছে।’
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো উগ্রপন্থা থেকে সড়ে আসার যে কথা সম্প্রতি বলেছে, সেটা যুক্তরাষ্ট্র ‘আমলে নিয়েছে’ বলে তিনি জানান। কিন্তু তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘আমারা শুধু তাদের কথা নয়, তাদের কাজ দিয়ে পর্যালোচনা করব।’
ইসলামিক স্টেট নিয়ে সতর্কতা
বাইডেন বলেন, ওয়াশিংটন ‘পরিষ্কারভাবে বোঝে’ যে আইএস নামে পরিচিত ইসলামিক স্টেট চরমপন্থি গোষ্ঠী সিরিয়ায় নিজেদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য ‘যেকোনো ক্ষমতার শূন্যতার সুযোগ ব্যবহার করতে চাইবে।’
‘আমরা সেটা হতে দেব না,’ তিনি বলেন। বাইডেন বলেন, শুধুমাত্র রোববারেই যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী সিরিয়ার অভ্যন্তরে আইএসের বিরুদ্ধে ‘এক ডজন’ বিমান হামলা চালিয়েছে।
এর আগে বাইডেন সিরিয়া সংকট নিয়ে আলাপ করার জন্য তার জাতীয় নিরাপত্তা টিমের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ইসলামিক স্টেট জিহাদি গোষ্ঠী মোকাবিলার লক্ষ্যে ২০১৪ সালে যে আন্তর্জাতিক জোট গঠন করা হয়, তার অংশ হিসেবে সিরিয়াতে ৯০০ এবং ইরাকে ২,৫০০ যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য মোতায়েন করা আছে।
তারা নিয়মিত দেশের ভেতরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে ছিল ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠী। তেহরান আসাদ সরকারের বড় সমর্থক ছিল।
বাইডেন আরও নিশ্চিত করে যে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে আমেরিকান সাংবাদিক অস্টিন টাইস এখনো জীবিত আছে। টাইসকে ২০১২ সালে অপহরণ করা হয়।
‘আমরা বিশ্বাস করি সে বেঁচে আছে,’ বাইডেন বলেন, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখনো ‘চিহ্নিত করেনি সে কোথায় আছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন