দ্বিতীয় দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প কোয়াড গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোর প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা কমিয়ে দেবেন, এমনটা মনে করছেন না ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
কারণ, এর আগের দফায় তিনি যখন ওই পদে ছিলেন, ওই সময় সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল তার সরকার। শুক্রবার একথা জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। কোয়াড গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা।
এদিন ভারত-জাপান ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই মঞ্চেই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রসঙ্গে উপরোক্ত মতামত ব্যক্ত করেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালে কোয়াড গোষ্ঠী যখন পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠে, সেই সময়ও মার্কিন মসনদে ছিলেন ট্রাম্প। এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে যাতে সম্পর্ক আরো মজবুত হয়, তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি।
জয়শঙ্কর বলেন, 'সেটা ছিল ২০১৭ সাল। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম বছর। ওই সময়েই উপ-মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়। পরে ২০১৯ সালে উপ-মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা থেকে তা উন্নীত হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে। সেটাও ট্রাম্পেরই আমল ছিল।'
তিনি বলেন, '...এবং সেই প্রথমবার সবকিছু ঠিকঠাকভাবে এগোচ্ছিল। এবং এটা বলার একাধিক কারণ রয়েছে। সেটা খুব ভালো হয়েছিল এবং আমাদের সেটা বজায় রাখা উচিত।'
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই আমেরিকার প্রশাসনের শীর্ষে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নানা আলোচনা ও জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ট্রাম্পের আসন্ন জমানায় আমেরিকা আদৌ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াবে তো?
এই প্রেক্ষাপটে জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'কোয়াডের ক্ষেত্রে অন্তত এই তত্ত্ব খাটে না। কারণ, এটি এমন একটি গোষ্ঠী, যেখানে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই তাদের ন্যায্য ভূমিকা পালন করে।'
এদিকে, জাপানের রাজনীতিতে ভারতকে নিয়ে এক আলোচনা শুরু হয়েছে। এমনটা বলা হচ্ছে যে ভারত নাকি কোয়াড গোষ্ঠীর সবথেকে দুর্বল সদস্য। এ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতামত জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠীতে চারটি দেশ রয়েছে। তাদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে ঐক্যমত বা দ্বিমত থাকতেই পারে।
খানিকটা তুলনা টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের দেশে... লোকজন একটা সময় বলত, জাপান নাকি সবথেকে দুর্বল। এবং মনে রাখবেন, কোয়াডের একেবারে প্রাথমিক স্তরে, আমাদের মনে হতো, অস্ট্রেলিয়া পুরো বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। আবার অস্ট্রেলিয়া মনে করত, আমরা (ভারত) কোনও পদক্ষেপ করার আগেই তাদের সেটা করতে হবে।'
কিন্তু, বর্তমানে কোয়াড গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অনেক মজবুত হয়েছে বলে মনে করেন জয়শঙ্কর। যার সুফল সরকারি স্তরে মিলতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, আগামী বছর- অর্থাৎ- ২০২৫ সালের কোয়াড সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ভারতে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন