জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট ভেঙে গেছে গত সপ্তাহে। পরবর্তী নির্বাচন হবে আসছে বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি। তার আগে, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বেশ কিছু আইন পাস কারানোর আবেদন করেছেন শলৎস। যদিও রক্ষণশীল সিডিইউএই প্রস্তাব মানার বিষয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি।
শলৎস জানিয়েছেন, তিনি ১৬ ডিসেম্বর আস্থাভোট নেবেন। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হবে। তার আগে প্রায় একশটি খসড়া বিল অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তার মধ্যে আছে করছাড়, আর্থিক উন্নয়ন, শিশুদের সুবিধা, মাসিক গণপরিবহন পাসের মেয়াদ বৃদ্ধির মতো বিল। যা পাস করিয়ে নিতে চান তিনি।
যা নিয়ে বুধবার শলৎস বলেছেন, এখন যেটুকু সময় আছে, তা কাজে লাগানো উচিত এবং অত্যন্ত জরুরি আইনগুলি সকলে মিলে পাস করানো উচিত। কারণ, মানুষ এই ব্যাপারে কোনো দেরি পছন্দ করে না। আর এই আইনগুলি খুব জরুরি।
বিরোধী সিডিইউ ও সিএসইউ-কে শলৎস বলেন, ‘দেশের ভালোর জন্য, আসুন আমরা অন্তত নির্বাচন পর্যন্ত একসঙ্গে কাজ করি।’
জার্মানির রিতী অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচার সত্ত্বেও জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসটাগ আইন পাস করতে পারে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন পার্লামেন্ট তৈরি না হচ্ছে, ততদিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই সুযোগটাই নিতে চাইছেন শলৎশ।
কী বলছে সিডিইউ?
সিডিইউ নেতা ফ্রিডরিখ মেরজ বলেছেন, ‘যদি আমাদের সাহায্য নিয়ে আপনাদের এই ভেঙে পড়া সরকারের কিছু প্রকল্প অনুমোদনের চেষ্টা করেন, তাহলে আমরা বলব, এখন থেকে আপনি কোনো শর্ত আরোপ করতে পারবেন না। আমরা আপনার ভেঙে পড়া সরকারের কাজ সমর্থন করতে পারব না।'
মেরজ আরও বলেন, ‘নতুন নির্বাচনের ঘোষণা হওয়ার পর নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে আস্থাভোটের আগে কিছু হবে না। কারণ, আমরা আগে থেকে করা প্রতিশ্রুতির উপর আস্থা রাখতে পারি না। আমরা জাতীয় সাংবিধানিক আদালতের কোনো পদে নিয়োগের মতো বিষয়ে সংশোধন সমর্থন করতে পারি। কিন্তু তালিকাটা সেখানেই শেষ হওয়া উচিত।’
শলৎসকে উদ্দেশ্য করে মেরজ বলেন, ‘আপনি কিছু সিদ্ধান্ত নিতে চান। কিন্তু তা সম্ভব হবে না। কোনো অনুমোদিত বাজেট ছাড়াই আমরা আগামী বছরে পা দেব।’
জার্মানি কোন দিকে যাচ্ছে?
বিতর্কের সময় সব দলই একে অপরের সমালোচনা করেছে। দলগুলির আগামী নির্বাচনে প্রচারের দিশাও স্পষ্ট হয়ে গেছে।
শলৎস আবার বলেছেন, তার জোট আর্থিক বিষয় নিয়ে বিরোধের জেরে ভেঙে গেছে। এফডিপি আরো ঋণ নিতে চায়নি। এসপিডি ও গ্রিন বারবার বলেছেন, ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ভাঙা দরকার।
কোনো সন্দেহ নেই, নির্বাচনে সিডিইউ/সিএসইউ এখনো পর্যন্ত এগিয়ে আছে। তবে তাদেরও জোট সরকার গঠন করার জন্য জোটসঙ্গী খুঁজতে হবে। তাই এসপিডি ও গ্রিন আবার একসঙ্গে কাজ করতে চাইছে।
মেরজ ইতিমধ্যে অতি-ডানপন্থি এএফডি এবং বাম দলগুলির সঙ্গে জোট করার সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ওরা যত আসনই পাক না কেন, ওদের সঙ্গে কোনো সহযোগিতা নয়।’
তিনি জানিয়েছেন, এফডিপি-র সঙ্গে কাজ করার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন